তাক করে। ছবি: সুজিত মাহাতো
বেওয়ারিশ গরুদের উৎপাতে নাকাল হচ্ছিলেন পুরুলিয়া পুরবাসী। এ বার রাস্তা থেকে বেওয়ারিশ গরু ধরতে নামল পুরসভা। মঙ্গলবার পুরসভার কর্মীদের সঙ্গে ওই অভিযানে ছিল পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ, সদর থানা ও শহরের গৌরক্ষিণী (গোশালা) সভাও।
পুরুলিয়া পুরসভার প্রশাসক মৃগাঙ্ক মাহাতো বলেন, ‘‘রাস্তার বেওয়ারিশ গরুদের নিয়ে বিভিন্ন স্তর থেকে অভিযোগ আসছিল। রাস্তা দখল করে বসে থাকা গরুদের জন্য যানজট থেকে দুর্ঘটনা পর্যন্ত ঘটছিল। তাই দাবিহীন গরুদের রাস্তা থেকে সরানো এ দিন থেকে শুরু হল। এ দিন ন’-দশটি গরুকে গোশালায় পাঠানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, দিনের বেলায় ধরপাকড়ের সময়ে গরুরা ছোটাছুটি করছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে। তাই ঠিক হয়েছে, রাতে ফাঁকা রাস্তায় গরু ধরা হবে।
আটঘাট বেঁধেই অভিযানে নামা হয়। পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘রাস্তায় ঘুরে বেড়ালেও অধিকাংশ গরুর মালিক আছে। তাঁরা গরুগুলিকে রাস্তায় ছেড়ে দেন। তাঁরা যাতে রাস্তা থেকে গরুদের সরিয়ে নেন, সে জন্য মাইকে প্রচার করে আমরা আবেদন জানাচ্ছি।’’
এ দিন সকালে পুরুলিয়া সদর থানার কাছাকাছি এলাকা গরু সরানোর অভিযান শুরু হয়। পুলিশ, পুরসভা ও গোশালার কর্মীরা থাকলেও প্রথম দিনেই রাস্তা থেকে গরু ধরতে হিমশিম অবস্থা হয় তাঁদের। গরুদের গোশালা পর্যন্ত নিয়ে যেতে ম্যাটাডোরও রাখা হয়েছিল।
শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে রাস্তার উপরে বেশ কয়েকটি গরু বসে ঝিমোচ্ছিল। কয়েকটি দুলকি চালে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ম্যাটাডোরের ডালায় পাটাতন লাগিয়ে, দড়ির ফাঁস তৈরি করে নেমে পড়েন অভিযানে থাকা লোকজন। একটি গরুকে বাগে এনে তাড়িয়ে যেই ম্যাটাডোরে তোলার চেষ্টা করা হয়, সঙ্গে সঙ্গে সেটি পাটাতনের পাশ দিয়ে রাস্তার নেমেই ছুটতে শুরু করে। দড়ির ফাঁস নিয়ে পিছু ধাওয়া করেন কর্মীরা। আবার একটি গরু পাটাতনে দু’টি পা তুলে বসে পড়ে। তার পরে ‘নট নড়নচড়ন’। অগত্যা পাটাতন সমেত গরুটিকে ম্যাটাডোরে তোলা হয়। এ ভাবে কয়েকটি গরুকে গাড়িতে তুলতে গিয়ে গলদঘর্ম হওয়ার পরে, বাকিদের তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গৌরক্ষিণী সভার তরফে সুজিত সুলতানিয়া বলেন, ‘‘পুলিশ ও পুরসভার অনুরোধে আমরা বেওয়ারিশ গরুদের রাখতে রাজি হয়েছি। প্রতিটি গরুর রং, বিশেষ চিহ্ন-সহ বিস্তারিত বিবরণ খাতায় লিখে রাখা হচ্ছে। ছবিও তোলা হচ্ছে। কোন জায়গা থেকে কবে, ক’টার সময় ধরা হয়েছে, উল্লেখ থাকছে তা-ও। সেই তথ্য পুরসভা ও পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেব। পুরসভা প্রতিদিন একটি গরু পিছু আমাদের ১০০ টাকা করে খরচ দেবে। বাকি খরচ আমাদের।’’ তিনি জানান, ওই গরু ছাড়াতে এলে তাঁকে পুরসভার কাছ থেকে ছাড়পত্র আনতে হবে। যতদিন গরু তাঁদের গোশালায় থাকবে, ততদিনের খরচও দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy