বিধ্বস্ত: ভাঙচুরের পর ব্যাঙ্কের শাখায় কর্মীরা। পাড়ুইয়ে। নিজস্ব চিত্র
দু’বস্তা খুচরো নিয়ে ব্যাঙ্কে জমা দিতে গিয়েছিলেন কয়েক জন গ্রাহক। অভিযোগ, তা নিয়ে ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার ও অন্য কর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। তা শেষ হয় মারধর, ভাঙচুরে। অভিযোগের তির এলাকার ১০-১৫ জন বাসিন্দার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে পাড়ুই থানা এলাকার তাহালা বাসস্ট্যাণ্ড সংলগ্ন রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের বনশঙ্কা শাখায়। পাড়ুই থানা এলাকা হলেও ব্যাঙ্কটির অবস্থান আদতে সিউড়ি ২ ব্লকের বনশঙ্কা পঞ্চায়েতে।
ওই ব্যাঙ্কের শাখা প্রবন্ধক শুভদীপ রায় জানান, এ দিন ব্যাঙ্ক খোলার পর কাজকর্ম শুরু হয়েছিল। তখনই কয়েক জন ২ বস্তা খুচরো পয়সা নিয়ে ঢোকে। তাদের দাবি ছিল, ওই খুচরো জমা নিতে হবে। শুভদীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘কী করা যায় দেখছি— শুধু এই কথা বলতেই ওরা হামলা চালায়। দরজায় শিকল তুলে দেয়। কম্পিউটার তুলে আছড়ে মাটিতে ফেলে। ভেঙে দেওয়া হয় চেয়ার। আমাদের বেধড়ক মারধর করা হয়।’’
খবর পেয়ে ব্যাঙ্কে পৌঁছয় পাড়ুই থানার পুলিশ। যান সিউড়ি ২ ব্লকের বিডিও বিকাশ মজুমদার। বিকাশবাবু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। পুলিশকে বলেছি দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।’’ ব্যাঙ্কের সিসিটিভি ক্যামেরার ‘ফুটেজ’ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শুভদীপবাবুর গাড়িও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীর একাংশ অবশ্য ভাঙচুরের ঘটনার নিন্দা করেও অভিযোগ করেছেন, ব্যাঙ্কের ওই শাখার পরিষেবা ও কয়েক জন ব্যাঙ্ককর্মীর দুর্ব্যবহার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জনরোষ ছিল। তার জেরেই বৃহস্পতিবার ঝামেলা ওই পর্যায়ে গিয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যাঙ্কের এক গ্রাহকের অভিযোগ, ‘‘সাধারণ মানুষের সঙ্গে অত্যন্ত দূর্ব্যবহার করেন সেখানকার কয়েক জন কর্মী। ওই ব্যাঙ্কে ঋণ থাকা কারও অ্যাকাউন্টে সরকারি প্রকল্পের টাকা ঢুকলে, উপভোক্তাকে না জানিয়েই ঋণের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, এমন অভিযোগ আগে জানানো হয়েছিল ব্লক প্রশাসনের কাছে। কাজ কিছুই হয়নি।
জেলা লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দীপ্তন্দ্রেনারায়ণ ঠাকুর বলেন, ‘‘এমন অভিযোগ এসেছিল। তবে তা মিটে গিয়েছে। এখন কোনও সমস্যা ছিল বলে জানা নেই।’’ তাঁর বক্তব্য, এ ভাবে হামলা চালানো ঠিক নয়। এতে পরিষেবা দিতে সমস্যা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জেলা সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান নরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের ওই শাখার বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে শুনেছি। কিন্তু কর্মীদের মারধর ও রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখার হামলার ঘটনা মানতে পারছি না। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy