Advertisement
E-Paper

জলে ডোবা গ্রাম রথ উঠল মাথায়

পথ ছেড়ে রথ উঠল মাথায়। পথ যে জলে ডোবা। বানভাসি গোটা এলাকাই। রবিবার তাই, মাথায় করে রথ নিয়েই ঘুরল সাঁইথিয়ার গ্রামের খুদেরা।আদতে, বর্ষা এলেই কপালে ভাঁজ পড়ে সাঁইথিয়া থানার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৫ ০০:৪৬
জলে পড়ে! ছবি: অনির্বাণ সেন।

জলে পড়ে! ছবি: অনির্বাণ সেন।

পথ ছেড়ে রথ উঠল মাথায়। পথ যে জলে ডোবা। বানভাসি গোটা এলাকাই। রবিবার তাই, মাথায় করে রথ নিয়েই ঘুরল সাঁইথিয়ার গ্রামের খুদেরা।

আদতে, বর্ষা এলেই কপালে ভাঁজ পড়ে সাঁইথিয়া থানার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের। টানা বৃষ্টিতেই আতঙ্ক শিমুলিয়া গ্রামের। শুধু শিমুলিয়া নয়, শিমুলিয়া সংলগ্ন শ্রীপাড়া, নানুরিয়া, গাঙুরিয়া, বেরান, দক্ষিণমাঠ, ওটুয়ার গ্রামের প্রায় দশ হাজার বাসিন্দা চিন্তায় পড়েন। আতঙ্কে থাকেন, যদি ময়ুরাক্ষী নদীতে জল ছাড়ে! কার্যত, একটায় চিন্তা ঘোরে তাঁদের মাথায়, এই বুজি বানে ভেসে গেল গ্রাম।

ঘটনা হল, ফি বছর, কম বেশি বৃষ্টিতে ভেসে যায় ওই গ্রাম গুলি। এ বছরও তার অন্যথা হয়নি। রবিবার সকালে গ্রামে ঢুকতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ঢোকার রাস্তায় হাঁটু সমান জল। বাইক নিয়ে ঢোকা দূরে থাক, হেঁটে ঢোকায় দুষ্কর। দেখা গেল পানীয় জলের কলের অর্ধেক জলের তলায়। গ্রামের বধূ শেফালি বাগ্দী বলেন, ‘‘কাল স্রোত বইছিল, কল ডুবে ছিল জলে। খাওয়ার জল পাওয়াটাই চিন্তা হয়ে গিয়েছিল।’’

শ্রীপাড়া, নানুরিয়া, গাঙুরিয়া, বেরান, দক্ষিণমাঠ গ্রামগুলিতেও একই ছবি। রাস্তার উপর দিয়ে বইছে স্রোত। হরপলশা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক কানাই মণ্ডল বলেন, ‘‘এমনিতেই আমাদের এই গ্রামগুলি নিচু। একটু বৃষ্টিতেই এলাকায় জল জমে যায়। তার উপরে এবার অতি বৃষ্টির কারণে সাঁইথিয়ার বিলগাবা, সিজে গ্রামের বিল থেকে জল এসে আমাদের গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে।’’ জানা গেল, গ্রামের কাছাকছি তিনটি কাঁদর আছে যে গুলো ময়ুরাক্ষী নদীতে গিয়ে মিলেছে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে সেই কাঁদরগুলির কোনও সংস্কার হয়নি।

জল জমে এলাকার মাঠেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মুলুক বাগ্দি বলেন, ‘‘প্রায় ৯ হাজার টাকার মাছ ছেড়ে ছিলাম। জলে ভেসে গিয়েছে সব। অরুণ মন্ডল জানালেন ‘জলে গ্রাম ডোবা আমাদের প্রতি বছরেরই ঘটনা, তবে এবার অতি বৃষ্টিতে গ্রামের চাষের ক্ষতি হয়েছে অনেক। আমারই প্রায় ১০ বিঘে জমির ধান জলের তলায়। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বীজতলা।’’

ফেরার পথে দেখা পাওয়া গেল, গ্রামেরই প্রাইমারী স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পার্থ দাস, তৃতীয় শ্রেণির দীপা বিত্তারদের সঙ্গে। তারা জানায়, উল্টো রথের দিনে ঘরের ভিতর থাকতে আর ভাল লাগছিল না, তাই মাথায় রথ নিয়েই ঘুরছি।

বানভাসি এমন পরিস্থিতির কথা অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বনগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান যশোমতি মাড্ডি বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেই খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। কাল আমাদের লোক এলাকায় ঘুরে এসেছে। আমি বিডিওকে জানিয়েছি। কিন্তু বিডিও অফিস থেকে কোনও সহযোগীতা না এলে আমাদের কিছু করার নাই।’’ প্রধানের কথা শুনে সাঁইথিয়া ব্লকের বিডিও অতনু ঝুড়ি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি খাতিয়ে দেখছি। শিঘ্রই কিছু একটা ব্যবস্থা করা হবে।’’

Sainthia Rath Yatra Villagers nanuria
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy