Advertisement
E-Paper

সকাল থেকে লাইন দিয়েও হল না কাজ

বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসনের অফিস চত্বরে এ দিন সকাল থেকে ছিল থিকথিকে ভিড়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩৮
লাইন: ফর্ম জমা দেওয়ার ভিড় বিষ্ণুপুর মহকুমা অফিসে। নিজস্ব চিত্র

লাইন: ফর্ম জমা দেওয়ার ভিড় বিষ্ণুপুর মহকুমা অফিসে। নিজস্ব চিত্র

করোনা-পরিস্থিতিতে কাজের সুযোগ হারানো অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে এককালীন হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সোমবার আবেদন জমা করতে ভিড় উপচে পড়ল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায়। বজায় থাকছিল না সামাজিক দূরত্ব। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামাতে হল পুলিশ। দুপুরে শ্রম দফতর থেকে নির্দেশ আসে। তার পরে কোথাও ফর্ম দেওয়া-নেওয়া হয়নি।

বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসনের অফিস চত্বরে এ দিন সকাল থেকে ছিল থিকথিকে ভিড়। দীর্ঘক্ষণ পুলিশের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ। শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রিকশাচালক স্বপন সাঁতরা দাঁড়িয়েছিলেন লাইনে। তিনি বলেন, ‘‘কাজ নেই। হাতের টাকাও সব শেষ। শুনেছি, আবেদন করলে টাকা পাওয়া যাবে।’’ দুপুরের পরে, সেখানে ফর্ম জমা নেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৯ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাগুলি থেকে বড়জোড়া ব্লক অফিসে ফর্ম জমা করতে এসেছিলেন শ্রীকান্ত বাউড়ি। সকাল থেকে লাইন দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ এসে সরিয়ে দেয়। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘হাতে টাকা-পয়সা নেই। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’’

তবে বাঁকুড়ার সহকারী শ্রম আধিকারিক আশিসকুমার গড়াই বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় ভিড় হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই ছিল।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা সোমবার বিকেলে বলেন, “রাজ্যের নির্দেশে আপাতত ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পের আবেদন জমা নেওয়ার কাজ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ আসার পরে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।”

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শ্রম দফতরের ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পের কিছু বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ ছিল না। এই পরিস্থিতিতে আবেদন জমা নেওয়া শুরু হয়নি। তবে রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে ফর্ম প্রকাশিত হয়েছে। সেটি নিয়ে এ দিন প্রশাসনিক দফতরে হাজির হয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। পুরুলিয়া পুরসভায় গিয়ে অনেকে ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পের ফর্ম চেয়েছেন। কেউ কেউ ফর্ম পূরণ করে এসেছেন জমা দিতে। কোনও নির্দেশিকা না থাকায় তাঁদের ফিরিয়ে দেয় পুরসভা। তার পরে অনেকে যান জেলাশাসকের অফিসে। পুলিশ সেখান থেকেও সরিয়ে দেয়।

‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে আবেদন করার সময়ে কিছু নথিপত্রও জমা দেওয়ার কথা। সোমবার কাশীপুরে পঞ্চায়েত অফিস খুলতেই প্রচুর মানুষ বসবাস ও রোজগারের শংসাপত্র নিতে ভিড় করেন। সিভিক ভলান্টিয়ারেরা সামাল দিতে সমস্যায় পড়েন। পঞ্চায়েতের মূল দরজা বন্ধ করে খবর দেওয়া হয় কাশীপুর থানায়। পুলিশ গিয়ে ভিড় সরিয়ে দেয়। লাইনে দাঁড়ানো ছবি বাউড়ি, কার্তিক কর্মকারেরা বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টায় ফর্ম জোগাড় করে এসেছিলাম। কাজ হল না।’’ পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘শ্রম দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, আপাতত ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পের ফর্ম জমা নেওয়া হচ্ছে না। পরবর্তী নির্দেশ এলে, তা অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’

এই সমস্ত ঘটনায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরী বলেন, “আবেদনপত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া পঞ্চায়েত অফিস থেকে করলে, মানুষের এই ভোগান্তি হত না। লকডাউনের নিয়ম বজায় রাখতে অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থাও করা যেতে পারত। কিন্তু এ সব কিছুই না করে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে হয়রান করা হল।’’

বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস বটব্যালের বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, রাজ্য সরকার নিয়েছে।’’

Prachesta Scheme West BEngal Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy