Advertisement
E-Paper

কৌশলে কৌশল্যার অনাস্থা রুখল তৃণমূল

জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরামবাবুর বিধানসভা এলাকা বলরামপুরের মধ্যে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির একাংশ পড়ে। তাই তাঁর এলাকারই একটি পঞ্চায়েত সমিতিতে এ ভাবে বারবার অনাস্থা আসায় অস্বস্তিতে পড়ে দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ০২:১৬

অনাস্থা সংক্রান্ত ভোটাভুটির আগের দিনেই অনাস্থা নিয়ে আসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের পুরুলিয়ায় ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের দিয়ে বলানো হল— ‘আমরা সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পক্ষে নই’। এ ভাবেই সোমবার আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ঠেকালেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো।

বস্তুত পুরুলিয়ার রাজনৈতিক মহলে চালু রসিকতা হল— আড়শায় কথায় কথায় অনাস্থা! এই ভাবমূর্তি কাটাতে এ বার কড়া হাতে হাল ধরার চেষ্টা করল শাসকদল। কয়েক দিন আগে বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৌশল্যা সহিসের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসেন তৃণমূলেরই কয়েক জন সদস্য। এ দিন পুরুলিয়ায় দলীয় অফিসে শান্তিরামবাবুর সামনে সেই কৌশল্যাদেবীর পাশে দাঁড়িয়ে অনাস্থা নিয়ে আসা সদস্যেরা সাংবাদিকদের জানালেন, সভাপতিকে নিয়ে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। সব মিটে গিয়েছে। এক সঙ্গে ছবি তুলতেও তাঁদের আপত্তি নেই।

আড়শা পঞ্চায়েত সমিতিতে তলবিসভার নিয়মমাফিক প্রস্তুতি নেওয়া হলেও বিক্ষুব্ধ তৃণমূল সদস্যেরা হাজির না হওয়ায় সেই সভা বাতিল হয়। ভারপ্রাপ্ত বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘কোরাম না হওয়ায় তলবি সভা বাতিল হয়েছে।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, এই মধুর পরিণতি দেখতে অবশ্য জেলা নেতৃত্বকে কম পরিশ্রম করতে হয়নি। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও সদস্যদের মধ্যে কোন্দল বারবার তুঙ্গে উঠেছে। পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের আড়াই বছরের মাথায় তৎকালীন সভাপতি তুষ্টরানি রাজোয়াড়ের বিরুদ্ধে প্রথম অনাস্থা আসে। এরপরে পালা আসে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অশোককুমার মাঝির। পরের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুশীলা মাহাতোও মাসখানেক আগে অনাস্থার কোপে পড়েন। গত ৪ অগস্ট সভাপতি কৌশল্যাদেবীর বিরুদ্ধে ছ’জন দলীয় সদস্য পাঁচ বিরোধী সদস্যকে নিয়ে অনাস্থা নিয়ে আসেন।

জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরামবাবুর বিধানসভা এলাকা বলরামপুরের মধ্যে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির একাংশ পড়ে। তাই তাঁর এলাকারই একটি পঞ্চায়েত সমিতিতে এ ভাবে বারবার অনাস্থা আসায় অস্বস্তিতে পড়ে দল।

বিশেষত যখন জেলা নেতৃত্ব আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে দলকে এক হয়ে চলার নির্দেশ দিচ্ছেন, সেই সময়ে আড়শার অন্তর্কলহ অন্য উদাহরণ হয়ে উঠুক, তা চাইছিলেন না জেলা সভাপতি।

দলের একটি সূত্রের খবর, অনাস্থার তলবি সভার আগের দিন রবিবারই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে স্বাক্ষর করা-সহ সমস্ত সদস্যকে পুরুলিয়ায় ডেকে পাঠানো হয়। জেলা সভাপতি সবার কাছে স্পষ্ট করে দেন, কোনও ভাবেই অনাস্থা আনা যাবে না। পর পর একই পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থার ঘটনা মোটেই ভাল বার্তা দিচ্ছে না। এরপরেও অনাস্থা এলে দল কড়া হাতেই তার মোকাবিলা করবে। জেলা সভাপতির কাছ থেকে এমন বার্তা পেয়ে বিক্ষুব্ধ সদস্যেরা বিষয়টি মেনে নেন।

অনাস্থার তলবি সভার দিনেও (সোমবার) ফের সবাইকে পুরুলিয়ায় ডেকে পাঠিয়ে বৈঠক করলেন শান্তিরামবাবু। তার পরে সবাইকে নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘সদস্যেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিয়েছেন। তাঁরা এলাকার উন্নয়নে এ বার থেকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলবেন।’’

অনাস্থায় স্বাক্ষরকারী পঞ্চায়েত সমিতির দলনেতা অশোককুমার মাঝি এবং সভাপতি এক সুরে বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কোন সমস্যাই নেই। যা ছিল মিটে গিয়েছে।’’

No Confidence TMC শান্তিরাম মাহাতো
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy