Advertisement
E-Paper

চাকরির দাবিতে বিক্ষোভের মাঝেই ডেউচা-পাঁচামিতে হয়ে গেল ভিতপুজো, প্রশাসনের দাবি: পরিস্থিতি স্বাভাবিক

মথুরাপাহাড়ি এলাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহম্মদবাজার ব্লকের চাঁদা মৌজায় সরকারি যে খাস জমি রয়েছে, সেখান থেকেই কাজ শুরু হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:০৩
image of deucha pachami

বৃহস্পতিবারই কাজ শুরু হতে চলেছে ডেউচা-পাঁচামিতে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)-এর মঞ্চ থেকে বুধবারই ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো বৃহস্পতিবারই ডেউচা-পাঁচামিতে ভিতপুজো হয়েছে বলে জানালেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। অন্য দিকে, চাকরি চেয়ে সকাল থেকে সেখানে বিক্ষোভ দেখান জমিদাতাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, শিল্প হোক। কিন্তু কাজ শুরুর আগে সরকারি চাকরি দেওয়া হোক জমিদাতাদের। মথুরাপাহাড়ি এলাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশ। যদিও জেলাশাসক বিধান এবং বীরভূমের পুলিশ সুপার আমন দীপের দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

বুধবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলার শিল্পোন্নয়নে ইতিবাচক অনুঘটকের ভূমিকা নেবে ডেউচা-পাঁচামির কোল ব্লক। এখানে কয়লা ও ব্যাসল্টের বিপুল ভান্ডার আছে। যে কোনও দিন এই কাজ শুরু করা যায়। পরিকাঠামো পুরোপুরি তৈরি। বৃহস্পতিবার থেকেই এখানে কাজ শুরু হবে।” তিনি আরও জানান, এই কয়লা খনি এ রাজ্যের শিল্পচরিত্র সম্পূর্ণ বদলে দেবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৩৫,০০০ কোটি টাকা লগ্নির সম্ভাবনা বলে জানিয়েছে রাজ্য।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহম্মদবাজার ব্লকের চাঁদা মৌজায় সরকারি যে খাস জমি রয়েছে, সেখান থেকেই কাজ শুরু হচ্ছে। এলাকায় গিয়ে জেলাশাসক স্থানীয়দের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। এর পরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে কাজ শুরু করা হচ্ছে। সরকারি ভেস্টেড জমিতে খনন শুরু হবে। কাউকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না।’’ ওই এলাকায় যে গাছ রয়েছে, তা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।

কাজ শুরুর আবহে বৃহস্পতিবার সকালে জমিদাতাদের একাংশ ক্ষোভপ্রকাশ করে স্লোগান দেন। তাঁদের সকলেরই দাবি, এলাকায় শিল্প হোক, তাতে কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু তার আগে জমিদাতাদের সরকারি চাকরি দেওয়া হোক। স্থানীয় বাসিন্দা নিটু শেখ বলেন, ‘‘কাজ চালু হলে আমাদের ভাল। গরিবেরা কাজ পাবেন। সরকার জানিয়েছে, যাঁরা জমি দিয়েছেন, তাঁদের দাম দেওয়া হবে। চাকরিটা আগে দিয়ে দিলে ভাল হয়। তা হলে ভরসা জন্মায়।’’ আর এক স্থানীয় আলি হোসেন বলেন, ‘‘জমির কাগজ জমা দিয়েছি। এক বছর হয়ে গেল। এখনও পর্যন্ত চাকরি হয়নি। আমরা শিল্প চাই। শিল্পের বিরোধিতা করছি না। কিন্তু চাকরি দেওয়া হোক।’’

বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, ‘‘অনেক মা-বোনেরা এসেছেন। তারা খুশি। আবেদনপত্র যাঁরা আগে দিয়েছেন, আগে পাচ্ছেন। যাঁরা পরে দিয়েছেন, পরে পাচ্ছেন। খনি হলে স্থানীয় বাসিন্দারাই কাজ পাবেন। প্রত্যেক ঘর থেকেই কাজ পাবেন।’’ পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘সকালের দিকে কিছু সমস্যা ছিল। তার সমাধান হয়ে গিয়েছে। মা-বোনেরা খুশি। কাজ শুরু হয়ে যাবে। যত কাজ হবে, স্থানীয়েরাই কাজ পাবেন। সুবিধা পাবেন স্থানীয়েরাই। ছোট কোনও সমস্যা হলে পুলিশ-প্রশাসন মিলে সমাধান করব। আশা করি দ্রুত প্রকল্প এগোবে।’’

মুখ্যমন্ত্রী বুধবারও জমিদাতাদের চাকরির আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যদের চাকরির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তাঁরা সেখানেই কাজ করবেন। জমিদাতা থেকে সাধারণ মানুষ, সকলকেই ধন্যবাদ জানান তিনি। ডেউচায় কাজ শুরুর লক্ষ্যে জানুয়ারিতেই সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। বৈঠকের পর মুখ্যসচিব বলেন, ৩২৬ একর জমিতে খোলামুখ খনির কাজ শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে উপরের স্তরে থাকা ব্যাসল্ট উত্তোলন করা হবে। তবে সঙ্গে সঙ্গে খনিগর্ভেও কাজ চলবে। কারণ, সরকারের মূল লক্ষ্য, যত দ্রুত সম্ভব ওই এলাকায় জমে থাকা কয়লা উত্তোলন করা। ডেউচায় কাজ শুরুর ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পমহলও।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy