Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

হাত কেটে বন্ধুকে খুন, যুবকের যাবজ্জীবন

বন্ধুকে নৃশংস ভাবে খুনের দায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন সাজা হল। মঙ্গলবার এই সাজা শোনান বাঁকুড়ার দ্রুত নিষ্পত্তি আদালতের বিচারক দ্বিজেন্দ্রনাথ রায় বর্মন। অভিযুক্ত পিন্টু সাহা দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার সগরভাঙার বাসিন্দা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০১:৪৭
Share: Save:

বন্ধুকে নৃশংস ভাবে খুনের দায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন সাজা হল। মঙ্গলবার এই সাজা শোনান বাঁকুড়ার দ্রুত নিষ্পত্তি আদালতের বিচারক দ্বিজেন্দ্রনাথ রায় বর্মন। অভিযুক্ত পিন্টু সাহা দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার সগরভাঙার বাসিন্দা।

সরকারি কৌঁসুলি অমিয় চক্রবর্তী জানান, ২০১২ সালের ২৫ জুন রাতে সাগরডাঙার বাসিন্দা মানিক বারুইকে (২৪) বড়জোড়া থানার দামোদরের চরে নিয়ে এসে খুন করে পিন্টু। ওই রাতে মোটরবাইকে চড়ে পিন্টু ও মানিক প্রথমে বড়জোড়ার মানাচরে আসে। সেখানেই পিন্টু ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মানিকের ডান হাত কেটে দেয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারি কোপানোয় মৃত্যু হয় মানিকের। দেহটি দামোদরের জলে ফেলে দিয়ে চলে যায় পিন্টু।

পর দিন সকালে মানাচর থেকে উদ্ধার হয় মানিকের দেহ। থানায় মৃতদেহ চিহ্নিত করেন মানিকের বাবা। মানিক ও পিন্টুর এক পরিচিত বন্ধু পুলিশকে জানায়, ঘটনার রাতে সে মানিক ও পিন্টুকে মোটরবাইকে চড়ে দুর্গাপুর ব্যারাজ হয়ে বড়জোড়ার দিকে যেতে দেখেছে। ওই বয়ান শোনার পরেই সন্দেহের কেন্দ্রে চলে আসে পিন্টু। লিখিত ভাবে পিন্টুর বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মানিকের বাবা মনরঞ্জন বারুই।

পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পরেই পিন্টুকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র, মোটরবাইকটিও উদ্ধার করে। ঘটনার তিন মাসের মধ্যেই ২৭ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়া আদালতে চার্জশিট দাখিল করে বড়জোড়া পুলিশ। আটকে যায় পিন্টুর জামিন। যদিও বিচার প্রক্রিয়ার প্রায় শেষের মুখে মাস তিনেক আগে পিন্টু আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান। মঙ্গলবার সেই মামলার চূড়ান্ত রায় দেয় আদালত।

কিন্তু, কেন বন্ধুকে খুন?

সরকারি কৌঁসুলির কথায়, “তদন্তে উঠে এসেছে পিন্টুর সঙ্গে মানিকের কোনও আক্রোশ ছিল না। পড়শি হলেও ছেলেবেলা থেকে দু’জনের বন্ধুত্ব ছিল না বলেই জানা গিয়েছে। ঘটনার মাস ছ’য়েক আগেই মানিক ও পিন্টুর পরিচয় হয়েছিল কর্মসূত্রে। দু’জনেই একটি দুর্গাপুরের কারখানায় কাজ করত। ক্ষণিকের উত্তেজনায় ওই ঘটনা ঘটে গিয়েছে।”

কী হয়েছিল সে দিন? অমিয়বাবু জানান, ওই রাতে মদ খাওয়ার উদ্দেশেই মানিককে নিয়ে পিন্টু বড়জোড়ার দামোদরের চরে আসে। পরে ঘটনাস্থল থেকে মদের বোতলও উদ্ধার হয়। তবে মানিকের ময়না-তদন্ত করে মদ খাওয়ার প্রমাণ মেলেনি। অমিয়বাবু বলেন, “কোনও বিষয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা বেধেছিল। তা চরমে উঠে গিয়েই ওই নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটে যায় বলেই আমরা মনে করছি।” পিন্টু অবশ্য নিজেকে প্রথম থেকেই নির্দোষ বলে দাবি করে আসছে। অমিয়বাবু জানান, এ দিন আদালত পিন্টুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা তা অনাদায়ে আরও ছ’মাস জেলের নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder boy Jail Arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE