Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অভাবের বেড়া ডিঙিয়েও সফল

দারিদ্রই ছিল চলার পথে বাধা। কিন্তু সেই বাধা টপকে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল করেছে সাঁওতালডিহির মালা পোখরেল। সাঁওতালডিহি বিদ্যুৎকেন্দ্র গার্লস হাইস্কুলের কলাবিভাগের এই ছাত্রীর প্রাপ্ত নম্বর হল ৮৩।৬ শতাংশ। মালার দু’চোখে স্বপ্ন ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অসচ্ছ্বলতা সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হতে দেবে কি না, সেই নিয়েই চিন্তিত এই মেধাবী ছাত্রী।

মালা পোখরেল।

মালা পোখরেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁওতালডিহি শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৪ ০১:৪৩
Share: Save:

দারিদ্রই ছিল চলার পথে বাধা। কিন্তু সেই বাধা টপকে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল করেছে সাঁওতালডিহির মালা পোখরেল। সাঁওতালডিহি বিদ্যুৎকেন্দ্র গার্লস হাইস্কুলের কলাবিভাগের এই ছাত্রীর প্রাপ্ত নম্বর হল ৮৩।৬ শতাংশ। মালার দু’চোখে স্বপ্ন ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অসচ্ছ্বলতা সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হতে দেবে কি না, সেই নিয়েই চিন্তিত এই মেধাবী ছাত্রী।

সাঁওতালডিহি থানার পাশেই কাঁকি বাজারে ছোট এক চিলতে বাড়িতে ভাই ও মায়ের সঙ্গে থাকে মালা। তাঁর বাবার সাঁওতালডিহিতেই একটি সাইকেল সারাইয়ের দোকান ছিল। সাত বছর আগে মারা যান তিনি। স্বামীর মৃত্যুর পরে পরিচালিকার কাজ করে মেয়েকে পড়াচ্ছেন মালার মা ময়নাদেবী। মায়ের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা এই কষ্টের যোগ্য প্রতিদান দিয়েছে মেয়ে। শুধু নিজের স্কুলেই নয়, গোটা পাড়া ব্লক থেকেই উচ্চমাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পয়েছে এই ছাত্রী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর হল বাংলায় ৮০, ইংরেজিতে ৮২, কম্পিউটার সায়েন্সে ৯৪, ভূগোলে ৯২ এবং ইতিহাসে ৭০। মেয়ের সাফল্য খুশি ময়নাদেবী বলেন, “মেয়ের পড়ার জন্য টিউশনের খরচ, বই খাতা কেনার জন্য অনেকেই সাহায্য করেছেন। স্কুলের শিক্ষিকারও পাশে ছিলেন।” কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর আশঙ্কা, “কিন্তু মেয়ের কলেজে পড়ার খরচ কী ভাবে আসবে সেটা জানি না।”

টাকার জন্য যাতে মালার কলেজে ভর্তি হওয়া না আটকায় সে জন্য এরমধ্যেই তাঁকে সাহায্য করেছেন সাঁওতালডিহি থানার ওসি ত্রিগুনা রায়। ত্রিগুনাবাবু বলেন, “তীব্র আর্থিক সমস্যার মধ্যেও মালা ভালো ফল করছে জানার পরে আমি সামান্য কিছু আর্থিক সাহায্য করেছি। কিন্তু উচ্চশিক্ষার জন্য ওঁর আরও সাহায্যের প্রয়োজন। পরিচিত মহলে ওঁকে সাহায্য করার জন্য আবেদন করেছি।”

মালার আশঙ্কা, “থানার বড়বাবু যে টাকা দিয়েছেন তাতে কলেজগুলি থেকে ফর্ম পারা যাবে কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার টাকা নেই।” মেয়ের পড়ার যাতে দাঁড়ি না পড়ে যায়, তাঁর জন্য ময়নাদেবীর আর্জি, “মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করা আমার স্বামীর স্বপ্ন ছিল। কিন্তু টাকার অভাবে সেই আশা কতটা পূরণ হবে জানি না। গরিব ঘরের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য সরকার থেকে সাহায্য পাওয়া যায় বলে শুনেছি। সেই সাহায্য পেলে মেয়েটা হয়ত বেঁচে যাবে।”

মায়ের স্বরের মধ্যে থাকা আশঙ্কাটা চাপা থাকে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mala pokhrel saontaldihi higher secondary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE