বাজারে দাম না পেয়ে রাস্তায় আলু ছড়িয়ে প্রতিবাদ। সোমবার বাঁকুড়ার ধলডাঙা মোড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।
খোলা বাজারে কমে গিয়েছে আলুর দাম। চাষিদের অবস্থা আরও সঙ্গীন। এই পরিস্থিতিতে আলুর সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করার দাবিতে সরব হয়েছে আলু ব্যবসায়ী সমিতি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন। প্রায় দিনই এই দাবিতে কোথাও স্মারকলিপি দেওয়া হচ্ছে, কোথাও বা বিক্ষোভ, পথ অবরোধের কর্মসূচি নিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
অবশেষে চাষিদের কথা মাথায় রেখে আলুর দর কিছুটা বাড়াতে পদক্ষেপ করল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, চাষিরা যাতে আলুর দাম কেজি পিছু ন্যূনতম সাড়ে পাঁচ টাকা পান, তার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছে জেলা প্রশাসন। জেলা থেকে পরিকল্পনার খসড়া রাজ্যে পাঠাতে বলেছেন সচিব। ওই দফতর থেকে সবুজ সঙ্কেত মিললেই চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি সাড়ে পাঁচ টাকা কেজি দরে ভর্তুকি দিয়ে আলু কিনবে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক বলেন, “জেলা প্রশাসনের তরফে পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত এই কাজ শেষ করে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরে পাঠানো হবে। সেখান থেকে সন্মতি পেলেই সাড়ে পাঁচ টাকা কেজিতে চাষিদের কাছ থেকে আলু কিনতে নামব আমরা।” জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, জেলাশাসক নির্দেশ দিলে চাষিদের কাছ থেকে আলু কিনে সেই আলু রেশনের মাধ্যমে বিক্রি করা বা মিড-ডে মিলের মতো নানা প্রকল্পে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অন্য দিকে, সোমবার সকালে বাঁকুড়া সদর থানার ধলডাঙা মোড়ে আলুর সহায়ক মূল্য নির্ধারণের দাবিতে পথ অবরোধে নামে এসইউসি-র কৃষক শাখা ‘সারা ভারত কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন’। রাস্তায় আলুর বস্তা নামিয়ে, আলু ছড়িয়ে সকাল সাড়ে দশটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা পথ অবরোধ করে রাখা হয়।
সংগঠনের জেলা সভাপতি দিলীপ কুণ্ডুর ক্ষোভ, “প্রতি কেজিতে আলু চাষ করতে গড়ে প্রায় পাঁচ টাকা খরচ হয়েছে চাষিদের। আর কেজি পিছু চাষিরা আলুর দাম পাচ্ছেন কোথাও তিন টাকা, কোথাও আড়াই টাকা।” আলু ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে এই জেলার চাষিরা জ্যোতি আলুর দর পাচ্ছেন কেজি প্রতি আড়াই থেকে তিন টাকা। পোখরাজ আলুর দর দাঁড়িয়েছে কেজিতে দু’টাকা থেকে আড়াই টাকা। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন সাড়ে পাঁচটাকা মূল্যে আলু কিনলে চাষিদের ক্ষেত্রে তা ‘মন্দের ভাল’ বলেই মত দিলীপবাবুর। তিনি বলেন, “সহায়ক মূল্য হওয়া উচিত অন্তত সাত টাকা। সাড়ে পাঁচ টাকা দর হলে লাভ না হলেও মূল খরচ উঠে আসবে। তবে সব আলু যদি কেনে তবেই সেই লাভ হবে চাষিদের। তবে কবে থেকে জেলা প্রশাসন আলু কিনবে তার সদুত্তর এখনও মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy