Advertisement
১৯ মে ২০২৪

আশ্রমে হানা, লুঠ গৃহস্থের বাড়িতেও

আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে পরপর তিনটি বাড়ি ও একটি আশ্রমে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। তাদের বাধা দিতে গিয়ে জখম হলেন এক গৃহকর্তা। মার খেলেন আশ্রমের এক সাধু। কয়েকটি বাড়ির মহিলারাও জখম হন। সোমবার মধ্যরাতে দুঃসাহসিক এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার কাঁটাবাড়ি গ্রামে। বিষ্ণুপুর ও ওন্দা থানার সীমানায় অবস্থিত ওই গ্রামে ঘণ্টাদুয়েক ধরে ডাকাতি চললেও পুলিশ পৌঁছয় মঙ্গলবার সকালে।

লন্ডভন্ড বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র

লন্ডভন্ড বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ওন্দা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০১
Share: Save:

আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে পরপর তিনটি বাড়ি ও একটি আশ্রমে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। তাদের বাধা দিতে গিয়ে জখম হলেন এক গৃহকর্তা। মার খেলেন আশ্রমের এক সাধু। কয়েকটি বাড়ির মহিলারাও জখম হন। সোমবার মধ্যরাতে দুঃসাহসিক এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার কাঁটাবাড়ি গ্রামে। বিষ্ণুপুর ও ওন্দা থানার সীমানায় অবস্থিত ওই গ্রামে ঘণ্টাদুয়েক ধরে ডাকাতি চললেও পুলিশ পৌঁছয় মঙ্গলবার সকালে। পুলিশের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ ৫-৬ জনের একটি দল প্রথমে কাঁটাবাড়ি গ্রাম লাগোয়া পুরুষোত্তম উদাসীন আশ্রমে হানা দেয়। আশ্রমের সাধু শীতল দাস উদাসীনের কথায়, গামছায় মুখ ঢাকা প্যান্ট ও গেঞ্জি পরা ৪-৫ জন আশ্রমে ঢুকে প্রথমে তাঁকে ঘুম থেকে তোলে। তারপর পিস্তল দেখিয়ে তারা দাবি করে, আশ্রমের পাঁচিল তৈরির জন্য এক কোটি টাকা এসেছে। ওই টাকা বের করে দিতে বলে। তাঁর অভিযোগ, “আমি ওই টাকার ব্যাপারে কিছই জানি না বলতেই ওরা আমাকে বেধড়ক মারধর করে চলে যায়।”

ডাকাতরা ওই আশ্রম থেকে বেরিয়ে এরপর কাঁটাবাড়ির বাসিন্দা পার্থপ্রতিম পালের বাড়িতে হানা দেয়। বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে প্রথমে পার্থবাবুর হাত পিছমোড়া করে গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে তারা। পার্থবাবুর দাবি, “আমাকে বেঁধে দুষ্কৃতীরা আলমারি ভেঙে প্রায় ২৫ হাজার টাকা, সোনার দুল-সহ কিছু গয়না দু’টি মোবাইল ফোন লুঠ করে দুষ্কৃতীরা।” তাঁর অভিযোগ, “হাতের ফাঁস একটু আলগা করতে বলায় ওরা সজোরে আমার কাঁধে লোহার রডের বারি মারে।” সেখান থেকে বেরিয়ে ডাকাতদল হানা দেয় শিবদাস মানিকের বাড়িতে। টাকা বিশেষ না পেয়ে তাঁকে এবং তাঁর মা নারায়ণী মানিককে মারধর করে বলে অভিযোগ। তবে যাওয়ার আগে তাঁর বাড়ি থেকেও নগদ হাজার দুয়েক টাকা, মোবাইল ফোন, সোনার দুল ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা।

শেষে ডাকাতরা হানা দেয় গ্রামের সম্পন্ন কৃষক সাধন দে-র বাড়িতে। সাধনবাবু ডাকাতদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতেই তারা মারধর চালায়। লোহার রডের বাড়ি মেরে সাধনবাবুর মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। সাধনবাবুর কথায়, “দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকেই ওরা রুদ্রমূর্তি ধারণ করে বলে, ‘যা আছে সব দিয়ে দে’। আমি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতেই ওরা আমার মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে।” তাঁর মা ত্রিগুণা দে-র গলায় তলোয়ার ঠেকিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা, সোনার গয়না ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় তারা। ডাকাতদের হাতে প্রহৃত সাধনবাবুকে এ দিন সকালে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিষ্ণুপুর-তালড্যাংরা রাস্তায় বেশ কিছুদিন ধরেই রাতে ছোটখাটো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। সোমবার রাতেও ওই রাস্তায় পুলিশের টহলদারি গাড়ি ছিল। তা সত্ত্বেও ঘণ্টাদুয়েক ধরে ডাকাতরা বিনা বাধায় একের পর এক বাড়িতে ডাকাতি করে পালাল কী করে?” খবর দেওয়ার পর এ দিন সকাল সাড়ে ৭টায় পুলিশ গ্রামে যায়। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ওই এলাকায় সম্প্রতি বাইরের কিছু লোকের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

onda robbery kantabari villege
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE