Advertisement
E-Paper

কারখানা গড়তে শীঘ্রই জনশুনানি

রিলায়েন্স সিমেন্টের পরে এ বার ইমামি। রঘুনাথপুরে তাদের প্রস্তাবিত সিমেন্ট কারখানা নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করেছে ইমামি সিমেন্ট লিমিটেড। ইমামি সিমেন্ট লিমিটেডের অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেস়িডেন্ট দেবীপ্রসাদ চৌধুরী জানিয়েছেন, নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পরিবেশ সংক্রান্ত শুনানি হবে। জানুয়ারি মাস থেকে কারখানার নির্মাণ কাজ শুরু করে এক বছরের মধ্যে উত্‌পাদন শুরু করার লক্ষ নিয়েছে ইমামি।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫৩
জনসংযোগের মাধ্যম স্বাস্থ্যশিবির।

জনসংযোগের মাধ্যম স্বাস্থ্যশিবির।

রিলায়েন্স সিমেন্টের পরে এ বার ইমামি। রঘুনাথপুরে তাদের প্রস্তাবিত সিমেন্ট কারখানা নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করেছে ইমামি সিমেন্ট লিমিটেড।

ইমামি সিমেন্ট লিমিটেডের অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেস়িডেন্ট দেবীপ্রসাদ চৌধুরী জানিয়েছেন, নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পরিবেশ সংক্রান্ত শুনানি হবে। জানুয়ারি মাস থেকে কারখানার নির্মাণ কাজ শুরু করে এক বছরের মধ্যে উত্‌পাদন শুরু করার লক্ষ নিয়েছে ইমামি। তার আগে এলাকায় জনসংযোগ বাড়াতে মঙ্গলবার থেকে দু’দিন ধরে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের দুরমুট গ্রামে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির করল ইমামি। সেখানেই ওই কর্তা এই মন্তব্য করেন।

শিবিরের উদ্বোধন করে রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূণর্র্চন্দ্র বাউরি দাবি করেন, “রঘুনাথপুর এলাকায় শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে যে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার, তারই ফলশ্রুতিতে এই এলাকায় কারখানা গড়তে উদ্যোগী হয়েছে ইমামি সিমেন্ট লিমিটেড।” তবে শিবিরে আসা বাসিন্দাদের অনেকেই জানিয়েছে, কাজ নেই। তাই কারখানায় স্থানীয়দেরই আগ্রাধিকার দিতে হবে।

বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রঘুনাথপুরে বিনিয়োগে আগ্রহী বেশ কিছু সংস্থা কারখানা গড়তে জমি চেয়ে আবেদন করলেও পরে তারা পিছিয়ে যায়। এই এলাকায় একমাত্র ভারী শিল্প বলতে বিদ্যুত্‌ কেন্দ্র গড়ছে ডিভিসি। কিন্তু এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটিও বাম আমলেই নির্মাণ কাজ শুরু করেছিল। ফলে তৃণমূল সরকারের দিশাহীন শিল্পনীতির কারণেই রঘুনাথপুরে শিল্প-খরা বলে অভিযোগ তুলছিল বিরোধীরা। ঘটনা হল রঘুনাথপুরকে রাজ্যের শিল্পায়নের মুখ হিসেবে তুলে ধরার উদ্যোগী হলেও তৃণমূল সরকার এখানে বড় মাপের কোনও সংস্থাকে গত তিন বছরে এই এলাকায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী করতে পারেনি।

এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরের মাঝামাঝি রঘুনাথপুর ১ ব্লকে সিমেন্ট কারখানা গড়ার কাজ শুরু করেছে রিলায়েন্স সিমেন্ট। তারপর ইমামি সিমেন্ট লিমিটেড। রিলায়েন্সের পাশেই তারা সিমেন্ট কারখানা গড়তে নেমেছে। আর তারা প্রাথমিক কাজ শুরু করতেই স্বাভাবিক ভাবেই শাসক দল দাবি করতে শুরু করেছে রঘুনাথপুরে শিল্প পার্ক গড়তে রাজ্য সরকারের উদ্যোগী হওয়াতেই এই এলাকায় বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে বড় মাপের সংস্থাগুলি।

ইমামি সিমেন্ট লিমিটেডের অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেস়িডেন্ট দেবীপ্রসাদ চৌধুরী জানান, রঘুনাথপুর ১ ব্লকের নতুনডি পঞ্চায়েতের দুরমুট মৌজায় জোরাডি গ্রামের পাশে রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগম ইতিমধ্যেই তাদের প্রকল্পের জন্য ৬৫ একর জমি চিহ্নিত করে দিয়েছে। ওই জমির মধ্যে প্রায় ৫৯ একর জমির মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছে ইমামি সিমেন্ট লিমিটেডকে। বাকি সাত একর জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়াও প্রকল্পের জন্য আরও ৩০ একর জমি চেয়ে নিগমের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। দেবীপ্রসাদবাবু বলেন, “রঘুনাথপুরে আমাদের বছরে ১.৫ মেট্রিক টন উত্‌পাদন ক্ষমতা সম্পন্ন সিমেন্ট কারখানাটি গড়তে মোট ৯৫ একর জমি প্রয়োজন। যার মধ্যে ৬৫ একর জমিতে মূল প্রকল্প গড়া হবে। বাকি ৩০ একরে রেলের সাইডিং গড়া হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১৮ কোটি টাকা।”

বস্তুত কারখানা গড়ার আগে এলাকায় জনসংযোগ বাড়াতেই মুকুন্দপুরের আমরি হাসপাতালের সহায়তায় দুরমুট গ্রামের বাণী পাঠাগারে দু’দিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির করল ইমামি। সংস্থার অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্টের কথায়, “কারখানা নির্মাণের আগে এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা যে রঘুনাথপুরে শুধু ব্যবসা করতেই আসিনি, এই এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতেও চাইছি, সেই বার্তাই দিতে চাইছি।”

শিবিরে আসা স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ দাবি, দ্রুত কারখানা তৈরি করে স্থানীদের কাজ দেওয়া হোক। দুরমুট গ্রামের বাসিন্দা জগন্নাথ গড়াই, বাবন গড়াই বলেন, “জয় বালাজীকে শিল্প গড়তে জমি দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ওই সংস্থাটি জমি নিয়েও ফেলে রেখে দিয়েছে। রিলায়েন্স সিমেন্টও এখনও কারখানা নির্মাণ শুরু করেনি। ফলে এলাকায় কর্মসংস্থান তৈরিই হয়নি।” এ দিকে, জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থ বিভিন্ন চিটফান্ড সংস্থায় রেখে প্রতারিত হয়েছেন বাসিন্দারা। তাই তাঁদের দাবি, জমিহারাদের কারখানায় কাজ দেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেওয়া হোক।

ইমামির পদস্থ কর্তা দেবীপ্রসাদবাবুর আশ্বাস, “দক্ষ ও অদক্ষ মিলিয়ে ৩৫০ জনের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে এই প্রকল্পে। রাজ্য সরকারের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী কাজ দেওয়া হবে।” বিধায়ক বলেন, “রাজ্য সরকারের নীতিই হচ্ছে যে কোন প্রকল্পেই জমিহারা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না।”

emami cement company mass hearing subhraprakash mondal raghunathpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy