Advertisement
E-Paper

চেক আছে, খোঁজ নেই পড়ুয়ার

কেউ স্কুল ছেড়েছেন ছ’ বছর আগে। কারও বা বর্তমানে স্কুলের খাতায় নামই নেই। অথচ, রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম থেকে বিলি করা চেক এসে পড়ে রয়েছে স্কুলে। মালিককে খুঁজে না পেয়ে কোথাও কোথাও চেক দফতরে ফেরত চলে যাচ্ছে।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৪ ০১:১৪

কেউ স্কুল ছেড়েছেন ছ’ বছর আগে। কারও বা বর্তমানে স্কুলের খাতায় নামই নেই। অথচ, রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম থেকে বিলি করা চেক এসে পড়ে রয়েছে স্কুলে। মালিককে খুঁজে না পেয়ে কোথাও কোথাও চেক দফতরে ফেরত চলে যাচ্ছে। কোথাও আবার মেয়াদ উত্তীর্ণ চেক পুড়িয়েও ফেলা হয়েছে। সব মিলিয়ে বিপাকে পড়েছে রামপুরহাটের বিভিন্ন স্কুল। কোনও কোনও স্কুল দুষছে দফতরকেই। দফতরের একাংশের দাবি, “উপভোক্তাদের নাম রিনিউয়াল নিয়ে রাজ্যজুড়েই চলছে এই অসঙ্গতি।”

এই অসঙ্গতির জন্যই জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। বীরভূম জেলার রামপুরহাট থানার বাটাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরারুজামান জানালেন, জামিরুল ইসলাম নামে তাঁর স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্রের নামে ছাত্রবৃত্তির ১২৪০ টাকা এসেছে। ওই চেক তিনি কিভাবে জামিরুলের কাছে পৌঁছে দেবেন জানেন না তিনি। জেলার নানা স্কুলেই এমন নজির রয়েছে।

দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নিগম থেকে ছাত্র বৃত্তির জন্য খরচ দেখানো হয়েছে বা বলা হয়েছে আদৌ সেই পরিমাণ টাকা খরচ হয়নি, এমন ঘটনাও ঘটছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দফতরকে প্রচারের আলোয় আনার জন্য ঘটা করে চেক বিলির কথা বলে হয়েছে। অথচ, চেক নিয়ে নানা অসংগতির নজির রাজ্যের সর্বত্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দফতরের এক আধিকারিক জানান, সারা রাজ্যে এই ভাবে চেক বিভ্রাট হওয়ার জন্য এ বছর থেকে উপভোক্তাদের নাম রিনিউয়ালের ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। তা সত্ত্বেও ২০১৪ ১৫ আর্থিক বছরে চেক বিলির ক্ষেত্রেও একই ধরনের অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।

রামপুরহাটের আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে খবর, একই ভাবে বিট্টু সেখ, নাজরিমা খাতুনদের নামে দশম শ্রেণির পড়ুয়া হিসাবে চেক পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ওই নামের কোনও পড়ুয়ার নাম বর্তমানে স্কুলের খাতায় নেই। একই রকমভাবে রামপুরহাট অমিয় স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইশা সুলতানার নামে ক্লাস সিক্সের এক ছাত্রীর নামে চেক এসে পড়ে রয়েছে। রামপুরহাটের অমল স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চায়না খাতুন, মহম্মদ আল্লারাখাদের নামেও দশম শ্রেণির পড়ুয়া ধরে চেক পাঠিয়েছে রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম।

সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম দফতরের ফিল্ড সুপারভাইজার এবং এডুকেশন সুপারভাইজারদের অভিজ্ঞতা বলছে, কোনও একজন পড়ুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় সংখ্যা লঘু উন্নয়ন দফতর থেকে ছাত্র বৃত্তির টাকা পায়। সেই পড়ুয়ার টাকা ‘অটোমেটিক রিনিউয়াল’ হয়ে পড়ুয়ার নতুন ক্লাসে এসে পড়ে। পড়ুয়া পড়াশুনার মধ্যে আছে কিনা সে ব্যাপারে কোনও খোঁজ খবর না নিয়ে সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম দফতর থেকে চেক ইস্যূ করা হয়। দফতর বীরভূম জেলার উন্নয়ন আধিকারিক মনিরুল ইসলাম বলেন, “যে সমস্যার কথা বলছেন, সে নিয়ে আলোচনার জন্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম দফতরের জেলা সমণ্বয়ক কলকাতায় গিয়েছেন। ফিরলে বুধবার আলোচনায় বসব।”

জেলা সমন্বয়ক হারুন আল রশিদি বলেন, “কিছু সমস্যা নিয়ে কলকাতায় এসেছি। দেখা যাক কি হয়।” বুধবার বিষয়টি নিয়ে জেলা স্তরে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। জেলা শাসক পি মোহন গাঁধি বলেন, “আলোচনা করে জানব কোথায় কি সমস্যা হয়েছে। প্রকৃত উপভোক্তারা যাতে চেক পায় তার চেষ্টা করতে হবে।” রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান আবু আয়েষ মণ্ডল বলেন, “চেক বিলির ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

minority groups development programme cheque apurba chattopadhay rampurhat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy