Advertisement
E-Paper

জঙ্গলমহল-সহ দুই সমবায়ে হার তৃণমূলের

শহর ঘেঁষা এলাকা এবং জঙ্গলমহলের দু’টি সমবায় নির্বাচনে সিপিএমের কাছে হেরে গেল তৃণমূল। বাঁকুড়া ২ ব্লকের মানকানালি গ্রামের ক্ষীরাইজুড়ি মালিনদাসী সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ৫-৪ ফলে এবং দুন্দার রাইপুর মটগোদা সোনাগাড়া আদিবাসী ল্যাম্পস সোসাইটি’র পরিচালন সমিতিতে ৩৫-০ ভোটে রাজ্যের শাসকদলকে হার মানতে হয়েছে সিপিএমের কাছে। এই দু’টি নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১২

শহর ঘেঁষা এলাকা এবং জঙ্গলমহলের দু’টি সমবায় নির্বাচনে সিপিএমের কাছে হেরে গেল তৃণমূল।

বাঁকুড়া ২ ব্লকের মানকানালি গ্রামের ক্ষীরাইজুড়ি মালিনদাসী সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ৫-৪ ফলে এবং দুন্দার রাইপুর মটগোদা সোনাগাড়া আদিবাসী ল্যাম্পস সোসাইটি’র পরিচালন সমিতিতে ৩৫-০ ভোটে রাজ্যের শাসকদলকে হার মানতে হয়েছে সিপিএমের কাছে। এই দু’টি নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

এই ল্যাম্পস সোসাইটি দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের দখলে। রাইপুর ব্লকের রাইপুর, দুন্দার, সোনাগাড়া ও মটগোদা এই চারটি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা ল্যাম্পসের সদস্য। রবিবার নির্বাচন হয়। ল্যাম্পসের সদস্য ৩৫০৭ জন সদস্যের মধ্যে ভোট দেন ২৭১৭ জন। সোনাগাড়াতে ১২, দুন্দারে ৮, রাইপুরে ৬ এবং মটগোদাতে ৯ জন করে এই ল্যাম্পসের সদস্য প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। সিপিএম ও তৃণমূলের মোট ৭০ জন প্রার্থী ছিলেন। সবক’টিতে সিপিএমের সমর্থিত প্রার্থীরা জিতেছেন। যে চারটি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা এই ল্যাম্পসের সদস্য, তার মধ্যে শুধুমাত্র মটগোদা পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে। বাকি তিনটিতে ক্ষমতায় তৃণমূল। তাই ল্যাম্পসের এই জয়ে সিপিএম কিছুটা হলেও অক্সিজেন জোগাল জঙ্গলমহলে।

সিপিএমের রাইপুর জোনাল সম্পাদক ধ্রুবলোচন মণ্ডলের দাবি, “জঙ্গলমহলের আদিবাসী মানুষজন যে এখনও আমাদের সঙ্গে রয়েছেন তা এই ল্যাম্পসের ভোটেই প্রমাণিত। এটা আর এক পরিবর্তনের সূচনা।” তবে ব্লকের প্রভাবশালী নেতা অনিল মাহাতোর দাবি, “ব্লক সভাপতি জগবন্ধু মাহাতো কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রার্থী দিয়েছেন। তাই সিপিএম ভোটে জিততে পারল।” জগবন্ধুবাবু ফোন ধরেননি।

রবিবারই বাঁকুড়া শহর ঘেঁষা মানকানালির কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে নির্বাচন হয়। সমিতিটি দীর্ঘ দিন ধরেই সিপিএমের দখলে রয়েছে। তবে রাজ্যে পালাবদলের পরে এটাই প্রথম নির্বাচন। মোট ৯টি আসনের মধ্যে একটি আসন ছিল স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সেই আসনটি আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নেয় সিপিএম। বাকি আটটি আসনের নির্বাচন হয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সিপিএম, তৃণমূল ও বিজেপি। আটটির মধ্যে চারটি আসন পায় সিপিএম ও বাকি চারটি তৃণমূল। সামগ্রিক ভাবে পাঁচটি সিপিএম ও চারটি পেয়েছে তৃণমূল।

কয়েক মাস আগে মানকানালি গ্রামীণ গ্রন্থাগার নির্বাচনে ১০টি আসনে লড়াই করে সবক’টি আসনেই তৃণমূলকে হারিয়ে দেয় বিজেপি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁকুড়া ২ ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’টিই তৃণমূল দখল করে। পঞ্চায়েত সমিতিও শাসকদলের। বিধানসভা থেকে লোকসভা সর্বত্র ঘাসফুল। তারপরেও এই দু’টি নির্বাচনে বাঁকুড়া শহর ঘেঁষা এই এলাকায় পরাজয়ের কারণ নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি শাসক দলের নেতাদের কাছে।

উল্লেখ্য, এই ব্লকের প্রায় ১৫টি গ্রামের ৯৭৮ জন ভোটার রয়েছে এই সমবায় সমিতিতে। যদিও ভোটে হারার পরেও সমবায় সমিতির নির্বাচনের এই ফলাফলকে নৈতিক জয় বলেই আখ্যা দিচ্ছেন বাঁকুড়া ২ ব্লকের তৃণমূল সহ-সভাপতি অতনু দে। তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে এই সমিতিতে নতুন করে সদস্য পদ দেয়নি সিপিএম। নিজেদের ভোটারদের ওরা ধরে রেখে এই জয় পেয়েছে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের মত প্রতিফলিত হয়নি। এ ছাড়া গ্রন্থাগার নির্বাচনের মতো এখানেও অলিখিত ভাবে সিপিএম-বিজেপি জোটবদ্ধ হয়ে ভোট করিয়েছে। তবুও আমাদের চারটি আসন প্রাপ্তিই বোঝাচ্ছে আমাদেরই নৈতিক জয় হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, মহিলা প্রার্থী সংরক্ষণের বিষয়টি জানানো হয়নি।

এ প্রসঙ্গে বাঁকুড়া ২ ব্লকের কো-অপারেটিভ সোসাইটি ইন্সপেক্টর শুভেন্দু প্রামাণিক বলেন, “এই ধরনের কোনও অভিযোগ আমি পাইনি। ওই আসনে কোনও বিপক্ষ প্রার্থী না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি।” সিপিএমের বাঁকুড়া উত্তর-পশ্চিম লোকাল সম্পাদক শিবদাস মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “লাগাতার দুর্নীতি ও নেতাদের আসল রূপ দেখে তৃণমূল সম্পর্কে মানুষের আস্থা হারিয়েছে। সেটাই প্রমাণিত হল।”

এ দিকে হুড়ার বিসপুরিয়া কৃষি সমবায় সমিতির নিবার্চনে খাতা খুলেছে বিজেপি। যদিও এই সমবায়টি দখল করেছে তৃণমূলই। মোট ৫১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৪৮টি। বিজেপির দখলে গিয়েছে ৩টি আসন। রবিবার এই সমবায় সমিতির নির্বাচন ছিল।

co-operative election cpm tmc jangalmahal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy