Advertisement
E-Paper

ট্রেন থেকে উদ্ধার ৩ নাবালক

কাজের খোঁজে ওরা বাড়ি থেকে পালিয়ে ট্রেনে চড়ে বসেছিল। গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় ওই তিন নাবালককে পাকড়াও করে রেল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পরে করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। শুক্রবার সকালে ঘণ্টাখানেকের ভিতরে দু’টি পৃথক ট্রেন থেকে সাঁইথিয়া রেল পুলিশ ওই তিন নাবালককে উদ্ধার করে। যাদের মধ্যে দুই ভাই-ও রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৬

কাজের খোঁজে ওরা বাড়ি থেকে পালিয়ে ট্রেনে চড়ে বসেছিল। গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় ওই তিন নাবালককে পাকড়াও করে রেল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পরে করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।

শুক্রবার সকালে ঘণ্টাখানেকের ভিতরে দু’টি পৃথক ট্রেন থেকে সাঁইথিয়া রেল পুলিশ ওই তিন নাবালককে উদ্ধার করে। যাদের মধ্যে দুই ভাই-ও রয়েছে। আইআরপি (অন্ডাল) সুমহান রায়চৌধুরী বলেন, “অনেক সময় এক শ্রেণির দুষ্কৃতীরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের দিয়ে নানা ধরনের অপরাধ করিয়ে থাকে। সামান্য কিছুর লোভ দেখিয়ে ট্রেনে বাসে টুকিটাকি চুরি, ব্যাগ ছিনতাই ইত্যাদি এই বয়সী ছেলেমেয়েদের দিয়ে করানো সহজ। তাই নানা রকম তল্লাশির পাশাপাশি ট্রেনে এ ব্যাপারেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। ওই নজরদারি চালাতে গিয়েই ওই তিন নাবালক রেল পুলিশের নজরে পড়ে। তার পরেই ওদের উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।”

রেল পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ নিয়ম মাফিক চেকিংয়ের সময় ডাউন হাওড়া-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার থেকে প্রথমে দুই নাবালক ভাইকে উদ্ধার করে কর্তব্যরত রেল পুলিশ। এর কিছু ক্ষণ পর আপ অন্ডাল-সাঁইথিয়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয় আর এক নাবালককে। রেল পুলিশ জানায়, বছর দশ ও সাতের ওই দুই ভাইয়ের বাড়ি রামপুরহাটে। উদ্ধার হওয়া অন্য নাবালকের বাড়ি অন্ডালে। সাঁইথিয়া জিআরপি থানার ওসি বিকাশ মুখোপাধ্যায় জানান, অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও কর্তব্যরত পুলিশ বিভিন্ন ট্রেনে তল্লাশি চালাচ্ছিল। ওই সময়ই ছেলেগুলির কথাবার্তা শুনে রেল পুলিশের সন্দেহ হয়। তাদের ট্রেন থেকে নামিয়ে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখনই জানা যায়, তিন নাবালকই নিজেদের বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। বিকাশবাবু বলেন, “খোঁজ খবর নিয়ে ওদের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। দুই ভাইকে তাদের বাবা এসে নিয়ে যান। অন্য নাবালকটিকে নিয়ে যান তার কাকা।”

দুই ছেলেকে ফিরে পেয়ে রেল পুলিশের ভূমিকায় খুশি তাদের বাবা। এ দিন তিনি বলেন, “আমরা অত্যন্ত গরিব। মোড়া তৈরি করে, তা বিক্রি করে কোনও রকমে সংসার চালাই।” তিনি জানান, এ দিন সকালে তাঁর স্ত্রী বাড়িতে মোড়া বাধা ও ঘরের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তিনিও মোড়া বিক্রির জন্য সকালেই বাইরে বেরিয়ে যান। সেই সুযোগেই দুই ভাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে তাঁর অনুমান। যদিও রেল পুলিশের কাছে থেকে খবর আসার আগে পর্যন্ত তাঁরা ছেলেদের পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কিছু জানতে পারেননি বলে তিনি দাবি করেছেন। দুই ছেলের বাবা বলেন, “পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা অবাক হয়ে যাই। পুলিশকে ধন্যবাদ। ওরা ঠিকমতো নজরদারি করেছিল বলে আজ ছেলেদের ফুরে পেলাম।” এ দিকে, উদ্ধার হওয়া দু’জনের মধ্যে ছোট ভাই বলে, “আমি কিছু জানি না। দাদার কথা মতো বেরিয়ে পড়েছিলাম।” তার দাদা অবশ্য বলেন, “শুনেছি অনেক চায়ের বা খাবারের দোকানে ছোট ছোট ছেলেদের কাজে নেয়। তাই ভেবেছিলাম দুই ভাইয়ে কোন দোকানে কাজ নেব।” কিন্তু, এ ভাবে পালিয়ে গেলে কেন? তাঁর জবাব, “মা-বাবাকে বললে যদি কাজ করতে না দেয়, সেই ভয়ে।”

এ দিকে, অন্ডালের ছেলেটি জানায়, বহ দিন আগেই তার বাবা মারা গিয়েছেন। ছোট ছোট দুই ভাইবোন ও তাকে নিয়েই মা সংসার চালান। সে বলে, “মায়ের খুব কষ্ট হয়। মায়ের কষ্ট দূর করার জন্যই কাজের খোঁজে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম।” এ দিকে, ওই নাবালককে নিতে আসা তার কাকা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে ওই ছেলের খোঁজ মিলছিল না। তাঁর কথায়, “ছেলেকে না পেয়ে ওর মা খুব কান্নাকাটি করছিল। এ দিন ছেলের খোঁজ পেয়ে তবেই কান্না থেমেছে!”

sainthia train rail police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy