Advertisement
E-Paper

তৃণমূলকর্মীকে জেরা করে দেহ উদ্ধার, দাবি পুলিশের

অপহরণের অভিযোগ পেয়ে যে তৃণমূল কর্মীকে ধরা হয়েছিল, তাঁকে জেরা করেই বলরামপুরের কংগ্রেস কর্মী জয়ন্ত কুমারের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানাল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এই খুনের ঘটনায় যে তৃণমূলের যোগ রয়েছে, তা পুলিশের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল বলে দাবি করেছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। নিহত ও ধৃত, দু’জনেই বলরামপুরের দেউলি গ্রামের বাসিন্দা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০২:১২
ধৃত দুর্যোধন পরামানিক। পুরুলিয়া আদালতে।  ছবি: সুজিত মাহাতো।

ধৃত দুর্যোধন পরামানিক। পুরুলিয়া আদালতে। ছবি: সুজিত মাহাতো।

অপহরণের অভিযোগ পেয়ে যে তৃণমূল কর্মীকে ধরা হয়েছিল, তাঁকে জেরা করেই বলরামপুরের কংগ্রেস কর্মী জয়ন্ত কুমারের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানাল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এই খুনের ঘটনায় যে তৃণমূলের যোগ রয়েছে, তা পুলিশের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল বলে দাবি করেছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।

নিহত ও ধৃত, দু’জনেই বলরামপুরের দেউলি গ্রামের বাসিন্দা। জয়ন্তকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে সোমবার দুপুরে বলরামপুর থানায় অভিযোগ করেছিলেন বছর বত্রিশের ওই যুবকের বাবা মহাবীর কুমার। তাতেই বুধবার দেউলির অদূরে পাথরবাঁধ গ্রামের কাছে গ্রেফতার করা হয় দুর্যোধন পরামানিক নামে এলাকার এক তৃণমূল কর্মীকে। পুলিশের দাবি, ধৃত দুর্যোধনকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবারই দেউলি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ইচাডির গভীর জঙ্গল থেকে জয়ন্ত কুমারের থেঁতলানো দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, জঙ্গলের এতটা গভীরে দেহ মিলেছে যে, আর কয়েক দিন দেরি হলে দেহের হদিস পাওয়াই শক্ত ছিল।

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া আদালত দুর্যোধনকে দশ দিন পুলিশ হেফাজত দেয়। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “জয়ন্তকে কোথায় রাখা হয়েছিল (সোমবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন জয়ন্ত), কী ভাবেই বা তাঁকে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, এ বার ধৃতকে সঙ্গে নিয়ে তা খতিয়ে দেখা হবে।” ওই কংগ্রেস কর্মীকে দেউলির আশপাশেই খুন করা হয়েছে না কি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে, তার জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতকে জেরা করলেই তা স্পষ্ট হবে।”

এই ঘটনাকে ঘিরে কংগ্রেস-তৃণমূল চাপানউতোর তীব্র হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, “প্রথম থেকেই বলছিলাম, জয়ন্তকে খুনের ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ রয়েছে। দুর্যোধনকে জেরা করে জয়ন্তর দেহ পাওয়া নিয়ে পুলিশের দাবি আমাদের বক্তব্যকেই সমর্থন করছে।” তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য প্রথম থেকেই দাবি করেছে, এই খুনের সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বলরামপুরের বিধায়ক শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “ধৃত ব্যক্তি আমাদের কর্মী ঠিকই। কিন্তু, এই খুন রাজনৈতিক কারণে নয়। আশা তদন্তে সত্য জানা যাবে।”

এরই মধ্যে দেউলি গ্রামেরই নিমাই পরামানিক নামে এক তৃণমূল কর্মীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সোমবার নিমাইয়ের স্ত্রী তিলোত্তমা বলরামপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুভাষ দাস-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করেন। তৃণমূল নেতারা নিমাইকে দ্রুত খোঁজার দাবি তুলেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ওই ব্যক্তির খোঁজ চলছে।

জেলা কংগ্রেস এবং নিহত কংগ্রেস কর্মীর পরিবারের তরফে পুলিশ সুপারের কাছে গোটা ঘটনায় বলরামপুর থানার পুলিশি গাফিলতি নিয়েও দু’টি পৃথক অভিযোগ করা হয়েছে। গত শুক্রবার জয়ন্তদের বাড়িতে কিছু লোক হামলা চালিয়ে তাঁর বৌদির শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। ওই বধূ পুলিশের কাছে তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে হামলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। তার পরে পরেই গ্রামে দর্জির দোকান চালানো জয়ন্তর নিখোঁজ-হওয়া। সেই সূত্রেই নেপালবাবু বলেন, “এসপি-র কাছে বলেছি, অভিযোগের পরেই পুলিশ ব্যবস্থা নিলে জয়ন্তকে হয়তো অপহৃত বা খুন হতে হত না। স্থানীয় থানার পুলিশের আরও তৎপর হওয়া দরকার ছিল।” এসপি-র কাছে নিহতের দাদা বিকাশ কুমার অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁদের বলেছিল, অপহরণের অভিযোগ তুলে নিলে জয়ন্তকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। দু’টি অভিযোগেরই তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন এসপি।

balarampur purulia jayanta kumar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy