Advertisement
E-Paper

দুয়ারে ভোট, দ্বন্দ্ব ভুলে মিছিলে পা

কড়া নাড়ছে জোড়া ভোট। তাই প্রচারে পা মেলালেন তৃণমূলের বিবদমান গোষ্ঠীর দুই নেতা। দাবি করলেন, তাঁদের মধ্যে নাকি কোনও লড়াই-ই নেই! রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বাঁকুড়ার জয়পুর বারবার সংবাদে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে। একটা সময় দুই গোষ্ঠীর বিবাদ ও মারামারি কার্যত প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জয়পুরে। সেই বিবাদের এক দিকে ছিল জয়পুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বপন কোলের গোষ্ঠী।

স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০০:১৫
জয়পুরে তৃণমূলের মিছিল। সোমবার ছবিটি তুলেছেন শুভ্র মিত্র।

জয়পুরে তৃণমূলের মিছিল। সোমবার ছবিটি তুলেছেন শুভ্র মিত্র।

কড়া নাড়ছে জোড়া ভোট। তাই প্রচারে পা মেলালেন তৃণমূলের বিবদমান গোষ্ঠীর দুই নেতা। দাবি করলেন, তাঁদের মধ্যে নাকি কোনও লড়াই-ই নেই!

রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বাঁকুড়ার জয়পুর বারবার সংবাদে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে। একটা সময় দুই গোষ্ঠীর বিবাদ ও মারামারি কার্যত প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জয়পুরে। সেই বিবাদের এক দিকে ছিল জয়পুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বপন কোলের গোষ্ঠী। অন্য দিকে, ছিলেন তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি দিলীপ খাঁয়ের অনুগামীরা।

কিন্তু, ভোট বড় দায়। তার উপরে দু’টি ভোট একসঙ্গে! বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচন এবং কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন। জোড়া ভোটের ধাক্কায় জয়পুরে তৃণমূলের এই দুই বিবদমান গোষ্ঠী ফের একই ছাতার তলায় এল। সোমবার দলের বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ এবং কোতুলপুর বিধানসভা আসনের প্রার্থী শ্যামল সাঁতরাকে নিয়ে ‘মহামিছিলে’ পা মেলালেন দুই গোষ্ঠীর সদস্যেরাই। মিছিলে দুই প্রার্থীর পাশাপাশি দেখা গেল স্বপন কোলে ও দিলীপ খাঁকেও।

দুই প্রার্থীর সমর্থনে এ দিন সকালে প্রায় দশ হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের মিছিল তিন কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করে। মিছিলটি কুম্ভস্থল মোড় থেকে শুরু হয়ে হাটতলা, থানা, জয়পুর ব্লক অফিসের পাশ দিয়ে জয়পুর মোড়ে এসে শেষ হয়। স্থানীয় সলদা, গোকুলনগর, জুজুড় ইত্যাদি গ্রামের অনেক মহিলাকেও মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে। তবে, এলাকার মানুষের সব নজর কেড়ে নিয়েছে মিছিলে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর একত্রে পা মেলানো। যা অবাক করেছে তৃণমূলের অনেক নিচুতলার কর্মীকেই।

কংগ্রেসের টিকিটে কোতুলপুর থেকে বিধায়ক হয়ে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ এ দিন বলেন, “গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব-টন্দ্ব বুঝি না। প্রচারে যাঁরা আসবেন না, ভুল করবেন! এখানে সবাইকে এক সঙ্গে পেয়ে ভাল লাগছে।” স্বপনবাবু ও দিলীপবাবু দু’জনেই একসুরে দাবি করেছেন, “আমাদের মধ্যে কোনও লড়াই নেই। যাবতীয় রাজনৈতিক লড়াই বিরোধী দলের সঙ্গেই। ৩৪ বছরের বাম-অপশাসন দূর করেছি। এক চিলতেও জমি দেব না তাদের।” আড়ালে অবশ্য একাধিক তৃণমূল কর্মীর সরস মন্তব্য, “আসলে ভোট বড় বালাই। ভোট মিটলে দু’তরফের সৌহার্দ্যটা বজায় থাকে কি না, সেটাই দেখার!”

প্রচারে বেরিয়ে জনতার নানা দাবির মুখোমুখি হতে হয়েছে দুই প্রার্থীকে। ব্লক অফিসে অফিসে ঢোকার রাস্তায় দাঁড়ানো এক প্রৌঢ় যেমন সৌমিত্রবাবুর উদ্দেশে বললেন, “দাদা, তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথের কাজটা ময়নাপুরে এসে থমকে গেছে। লোকসভায় গিয়ে অন্তত বলবেন তো?” “নিশ্চয়-নিশ্চয়”আশ্বাস প্রার্থীর। হেতিয়া অঞ্চলের দৌলতপুর গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদের ভাঙন নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে। কোতুলপুরের প্রার্থী শ্যামল সাঁতরাকে কাছে পেয়ে ওই গ্রামের বাসিন্দারা ভোটে জিতলে নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। আবার জগন্নাথপুরের বাসিন্দারা চেয়েছেন পিচ রাস্তা এই শিক্ষক-নেতার কাছে। কারও কারও দাবি, এলাকায় মহিলা কলেজের। শ্যামলবাবু ভিড়ের ঠেলায় হাবুডুবু খেতে খেতে জবাব দিয়েছেন, “আমাকে ভোট দিয়ে বিধানসভায় পাঠান। নিশ্চয় দেখব বিষয়গুলি।”

প্রথম দিনের প্রচারে এ রকম সাড়া পেয়ে প্রার্থীরা তো বটেই, উদ্বুদ্ধ তৃণমূলের কর্মীরাও। সৌমিত্রবাবুর কথায়, “পরীক্ষা চলছে। তাই মাইক ব্যবহার করা হয়নি। যতটা সম্ভব গ্রামে গ্রামে গিয়ে মৌখিক ভাবে মিছিলের কথা শুনিয়েছিলেন কর্মীরা। তাতেই এতো মানুষ আমাদের সমর্থনে পা মেলাবেন, ভাবতে পারিনি।”

lok sabha election swapon bandyopadh jaipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy