শেষমেশ দশ মাস পরে গ্রামে ফিরলেন লাভপুরের গণধর্ষিতা আদিবাসী তরুণী। তবে, তাঁর আগের গ্রাম সুবলপুরে নয়। শুক্রবার বীরভূম জেলা প্রশাসন ওই তরুণীকে লাগোয়া টালিপাড়া গ্রামে পৌঁছে দিয়েছে। সেখানে আগেই প্রশাসন ওই তরুণীর জন্য দু’টি ঘর তৈরি করে রেখেছিল। যেখানে তরুণীর দাদারা বসবাস করতে শুরু করেছেন।
গত জানুয়ারিতে লাভপুরের সুবলপুরে গণধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। ভিন্ জাতের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগে সালিশি বসিয়ে গ্রামের মাঝি-হাড়াম তাঁকে ধর্ষণের নিদান দেন। নির্যাতিতা পুলিশের কাছে ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। গত সেপ্টেম্বরে প্রত্যেককেই দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে বোলপুর আদালত।
এ দিকে, ঘটনার পর থেকেই মায়ের সঙ্গে সিউড়ির একটি হোমে ওই তরুণীর ঠাঁই হয়েছিল। অভিযুক্তেরা সাজা পাওয়ার পর থেকেই তিনি পরিবারের কাছে ফেরার জন্য প্রশাসনের কাছে বারবার আর্জি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তার কারণেই প্রশাসন তরুণীকে গ্রামে ফেরাতে সাহস পাচ্ছিল না। মাসখানেক আগে তরুণীর মা-ও হোম থেকে ছেলেদের কাছে ফিরে যান। তার পর থেকেই তরুণী মানসিক অবসানে ভুগতে শুরু করেন বলে হোম সূত্রের খবর। গত বুধবার মা ও দাদা তাঁকে দেখতে হোমে আসেন। কিন্তু তাঁরা ফেরার উদ্যোগ নিতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তরুণী। এমনকী, তাঁদের উপস্থিতিতেই কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে যান। ওই ঘটনার পর থেকেই তরুণীকে গ্রামে ফেরাতে তত্পর হয় জেলা প্রশাসন। এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ জেলা প্রশাসনের কর্তারা টালিপাড়ার গ্রামে প্রশাসনের তৈরি করে দেওয়া বাড়িতে তরুণীকে ফিরিয়ে দিয়ে যান। বাড়িতে ফিরেই তরুণী বলেন, “হোমে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। অভিযুক্তেরা জেলের ভেতরে সাজা খাটছে। কিন্তু আমাকেও কেন হোমে বন্দির মতো থাকতে হবে?” নতুন বাড়িতে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে বলে তরুণী জানিয়েছেন। অন্য দিকে, বীরভূমের জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “ওই তরুণীর ইচ্ছা অনুসারেই তাঁকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামে তাঁর নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy