Advertisement
E-Paper

নবকলেবরের মৌতোড় কালীমন্দিরে ভক্ত সমাগম

কালীঘাট মন্দিরের আদলে এ বার রঘুনাথপুরের শতাব্দী প্রাচীন মৌতোড় কালীমন্দির সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরের এই নতুন কলেবরে উচ্ছ্বসিত দর্শণার্থীরা। বুধবার মন্দিরের উদ্বোধন করেন রঘুনাথপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজয় সেনগুপ্ত। এই পুজো জেলার অন্যতম প্রাচীন পুজো।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২৪
কালীঘাটের মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে মৌতোড় কালীমন্দির।—নিজস্ব চিত্র।

কালীঘাটের মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে মৌতোড় কালীমন্দির।—নিজস্ব চিত্র।

কালীঘাট মন্দিরের আদলে এ বার রঘুনাথপুরের শতাব্দী প্রাচীন মৌতোড় কালীমন্দির সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরের এই নতুন কলেবরে উচ্ছ্বসিত দর্শণার্থীরা। বুধবার মন্দিরের উদ্বোধন করেন রঘুনাথপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজয় সেনগুপ্ত।

এই পুজো জেলার অন্যতম প্রাচীন পুজো। জনশ্রুতি রয়েছে, সাধক শোভারাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে এখানকার পুজোর শুরু হয়। নতুন মন্দির তৈরি হওয়ায় মৌতোড় গ্রামের পুজো এ বার অন্যমাত্রা পেয়েছে।

মৌতোড় ষোলোআনা উত্‌সব কমিটি ও গ্রামের তরুন সঙ্ঘের যৌথ উদ্যোগে এই মন্দির সংস্কার করা হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অর্থ সাহায্যে মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা।

বিভিন্ন জনশ্রুতিতে ভরা এই পুজো পুরুলিয়া তথা রঘুনাথপুর মহকুমার অন্যতম বড় কালীপুজো। পুজোর সময় শুধু এই জেলারই নয়, আশপাশের জেলা থেকে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বহু ভক্ত এখানে পুজো দিতে আসেন। ভিড় সামাল দিতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশকর্মীদের। তবে ঠিক কত বছর আগে এই পুজোর শুরু তার সঠিক হিসাব নেই উদ্যোক্তাদের কাছে। তবে এলাকার জনশ্রুতি ও মৌতোড় গ্রামের পুজো নিয়ে লেখা কিছু বইতে উল্লেখ করা তথ্য অনুযায়ী, কয়েক শতাব্দী আগে গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যর জামাই সাধক শোভারাম বন্দ্যোপাধ্যায় মৌতোড় গ্রামে কালীপুজো শুরু করেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা লোকগবেষক সুভাষ রায় বলেন, “মৌতোড় গ্রামের কালীপুজো ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছিল সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্যের অভাব রয়েছে। তবে জানা যায় বর্ধমানের বাসিন্দা শোভারাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন মৌতোড় গ্রামের বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য। শোভারাম মৌতোড় গ্রামেই থেকে গিয়েছিলেন। সাধক প্রকৃতির শোভারাম দিনে-রাতে এলাকার শ্মশানে-শ্মশানে ঘুরে বেড়াতেন। পঞ্চমুণ্ডির আসন প্রতিষ্ঠা করে তিনি পুজোপাঠ করেন।” পরে ওই জায়গাতেই মন্দির গড়ে ওঠে। তন্ত্রমতে সিদ্ধ এই পঞ্চমুন্ডির আসনটি বর্তমানে মন্দিরের নীচে রয়েছে বলে দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের।

মৌতোড় গ্রামের কালীপুজো নিয়ে এলাকায় কম জনশ্রতি নেই। তবে এই পুজোর বৈশিষ্ট্য বলিদান। এখনও ছাগ ও মোষ বলি হয়। এখানে পুজোর রাত থেকে শুরু হয় বলি। চলে পরেরদিন দুপুর পর্যন্ত। বংশানুক্রমে মন্দিরের পৌরহিত্য করে আসছেন সনত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। সনত্‌বাবুর কথায়, “মানুষ বিশ্বাস করে পুজো দেন। মানত পূরণও হয়।” মন্দিরে এখনও রয়েছে শতাধিক বছরের পুরনো পুথি। সেই পুথি অনুযায়ী, পুজো হয়। পুজোর সময়ে পুথি পাঠ করেন শিবপদ বন্দ্যোপাধ্যায়। অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী প্রায় ৮২ বছরের শিবপদবাবু শোনাচ্ছিলেন পুজোর অতীত দিনের কথা। বিশ্বাস আর ভক্তি যেখানে মিশে গিয়েছে। যুক্তি, তর্ক দিয়ে বিচার হয় না। বস্তুত এই ধরনের হাজারো অলৌকিক ঘটনার উদাহরণ নিয়েই কয়েক শতাব্দী ধরে নিজস্ব মহিমায় চলে আসছে মৌতোড় গ্রামের কালীপুজো।

moutor kali temple raghunathpur kali puja kali pujo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy