Advertisement
E-Paper

পুকুর সংস্কারে দুর্নীতির নালিশ নিয়ে তদন্ত শুরু

পুকুর সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে ব্যাপক জলঘোলা হতেই নড়েচড়ে বসল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। বড়জোড়ার বড়কি পুকুরের সংস্কার আদৌ হয়েছে কি না, তা যাচাই করতে প্রশাসনিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০০:৫১
এই পুকুর নিয়েই জলঘোলা।

এই পুকুর নিয়েই জলঘোলা।

পুকুর সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে ব্যাপক জলঘোলা হতেই নড়েচড়ে বসল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। বড়জোড়ার বড়কি পুকুরের সংস্কার আদৌ হয়েছে কি না, তা যাচাই করতে প্রশাসনিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

সোমবার বড়জোড়া পঞ্চায়েত অফিসে প্রশাসনের একটি দল বছরে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের আওতায় বড়কি পুকুর সংস্কারের কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখেন। মঙ্গলবার জেলা এনআরইজিএস সেলের একটি দলও পঞ্চায়েত অফিসে যায়। যদিও এখনও পর্যন্ত বড়কি পুকুরে আদৌ সংস্কারের কোনও কাজ হয়েছে কি না, তা সরেজমিন খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে প্রশাসনিক দল যায়নি। বড়জোড়ার বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান অবশ্য এ দিন বলেন, “সরেজমিনে প্রশাসনিক দল না গেলেও প্রকল্পের কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলেও পরিদর্শকেরা যাবেন। তদন্তের রিপোর্ট এখনও আমার কাছে পেশ করা হয়নি।”

বড়জোড়ার জমাদার গ্রামের বড়কি পুকুর সংস্কারের নামে ১০০ দিনের প্রকল্পে বরাদ্দ টাকার অর্ধেক তুলে নেওয়া হলেও বাস্তবে কাজ কার্যত হয়নি অভিযোগ তুলে বড়জোড়ার বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই পুকুরের অংশীদারেরা। ঘটনাটিকে ঘিরে গত বৃহস্পতিবার বড়জোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তুমুল হইচই হয়। দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়ে বিরোধীদের সঙ্গে পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যদের একাংশও পঞ্চায়েতের সভা বয়কট করেন। শুক্রবার দুপুরে পুকুরের অংশীদার ও গ্রামবাসীদের একাংশ বিডিও-র স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ পুকুরের পাড়ের কিছু আগাছা কেটে ফেলা হয়েছে। দুর্নীতি লুকোতেই রাতের অন্ধকারে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরেও প্রশাসন তদন্তে গাফিলতি করছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তার পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ও এ ব্যাপারে বিডিও-র সঙ্গে দেখা করেন। পরে বিধায়ক বলেন, “ঘটনার যথাযথ তদন্ত হচ্ছে। শীঘ্রই রিপোর্ট পাওয়া যাবে।”

দুর্নীতি প্রসঙ্গে সিপিএম সদস্যদের সঙ্গে তৃণমূলের একাংশ জোট বাধায় চাপ বেড়েছে শাসক দলের উপরে। বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি জহর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে তৃণমূল সদস্যেরা সভা বয়কট করেছেন, তাঁদের নাম জানতে চেয়েছি প্রধানের কাছে।” তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর। বিদ্রোহী তৃণমূল সদস্যদের পাল্টা বক্তব্য, “দুর্নীতিকে আমরা সমর্থন করব না। এনআরইজিএস-এর ওয়েবসাইট থেকে আমরা তথ্য পেয়েছি, বড়কি পুকুর সংস্কারে দুর্নীতি হয়েছে। কাজ না করেও অর্ধেক টাকা তোলা হয়েছে। এই ঘটনার জন্য দলের কাছে জবাবদিহি করতেও আমরা রাজি।”

এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে সিপিএম আন্দোলনে নেমে পড়েছে আগেই। ইতিমধ্যেই পুকুর সংস্কারের দুর্নীতির তদন্তের দাবিতে পথসভা, স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। দলের বড়জোড়ার নেতা তথা বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরী বলেন, “রাতের অন্ধকারে পুকুর পাড়ের আগাছা কেটে কাজ হয়েছে বলে প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছি।”

এরই মধ্যে শনিবার বড়জোড়া পঞ্চায়েতের বিরোধী নেতা, সিপিএমের গৌতম ধীবর তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান অর্চিতা বিদকে একটি চিঠি লেখেন। তাতে তিনি প্রধানকে ‘সত্‌ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন’ বলে উল্লেখ করে তাঁর প্রতি ‘ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশ নেই’ বলেও দাবি করেছেন। গৌতমবাবুর এই চিঠিটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম-ও। বিরোধী দল আন্দোলন থেকে সরে আসতে চাইছে বলেও গুঞ্জন ওঠে এলাকায়। সুজয়বাবু বলেন, “দলকে কিছু না জানিয়েই এই কাজ করেছেন গৌতমবাবু। কেন তিনি এমন পদক্ষেপ করেছেন, তা তাঁর কাছে জানতে চাইব। তবে। এই কেলেঙ্কারির প্রকৃত তথ্য না উঠে আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে সরব না।” গৌতমবাবুর অবশ্য দাবি, “ব্যক্তিগত ভাবে প্রধানের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তা জানাতেই চিঠি দিয়েছিলাম।”

barjora water body cleaning corruption
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy