Advertisement
E-Paper

বাইপাসের ভাবনা দুবরাজপুরে

ফোর লেন হবে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। আর তাতেই যানজটে জেরবার দুবরাজপুর শহরের দীর্ঘ দিনের সমস্যা মেটার একটা সম্ভবনা উজ্জ্বল হয়েছে। একটি বিকল্প রাস্তা বা বাইপাস তৈরির বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে সমীক্ষা দিন কয়েক আগে হয়ে গিয়েছে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে।

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০০:৪৭
দীর্ঘদিনের যানজট যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে প্রস্তাবিত বাইপাস। এখন তার দিকেই তাকিয়ে দুবরাজপুরের বাসিন্দারা।—ফাইল চিত্র।

দীর্ঘদিনের যানজট যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে প্রস্তাবিত বাইপাস। এখন তার দিকেই তাকিয়ে দুবরাজপুরের বাসিন্দারা।—ফাইল চিত্র।

ফোর লেন হবে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। আর তাতেই যানজটে জেরবার দুবরাজপুর শহরের দীর্ঘ দিনের সমস্যা মেটার একটা সম্ভবনা উজ্জ্বল হয়েছে। একটি বিকল্প রাস্তা বা বাইপাস তৈরির বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে সমীক্ষা দিন কয়েক আগে হয়ে গিয়েছে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে।

দুবরাজপুরে পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “কোন দিক দিয়ে বাইপাস তৈরি হবে সে ব্যাপারে সমীক্ষা করার পর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে জানিয়েছেন। অতীতে বহুবার ওই দাবিতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হয়েছে পুরসভার পক্ষ থেকে। বাইপাস তৈরি হলে পুরবাসী হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন।”

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, কাজ শুরু হওয়ার আগে এটি প্রাথমিক পদক্ষেপ মাত্র। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জাতীয় সড়কের ডিজাইনিং ও প্ল্যানিংয়ের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক জানিয়েছেন, খড়্গপুর থেকে রানিগঞ্জ হয়ে মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর যে হারে যানচালাচল বেড়েছে, সেই কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ওই রাস্তাটি ফোর লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর সেটা হলে দুবরাজপুর শহরকে বাইপাস করা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। কারণ, ঘিঞ্জি শহরের মধ্যে দিয়ে এত চওড়া রাস্তা তৈরি সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের তকমা পায় খড়্গপুর থেকে রানিগঞ্জ হয়ে মোরগ্রাম রাস্তাটি দুবরাজপুর পাহাড়েশ্বরের গা ঘেঁষে পোদ্দার বাঁধ হয়ে পুরসভা, দুবরাজপুর থানা, আদালত, কামারশাল মোড়, ইসলামপুর, পাওয়াপহাউস মোড় গিয়েছে। জাতীয় সড়কে উন্নীত হওয়ার পর বছর তিনেক আগে ওই রাস্তার রানিগঞ্জ থেকে দুবরাজপুর পর্যন্ত রাস্তাটি চওড়া হওয়ায় ওই রাস্তায় যানচলাচল অনেক বেড়ে যায়।

কার্যত দুর্গাপুর-পানাগড় না ঘুরে সহজেই উত্তরভারত, ঝাড়খণ্ড, বিহার থেকে আসা উত্তরবঙ্গ বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে যাওয়ার জন্য আসানসোল থেকে এগিয়ে এসে রানিগঞ্জে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে ঢুকে পড়ে। আর এতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে দুবরাজপুর শহরে। দিবারাত্রি পণ্যবোঝাই লরি, পাথর বা কয়লা বোঝাই ডাম্পারের পাশাপাশি অন্য গাড়ি চলাচল প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। দুবরাজপুরে অপ্রসস্ত রাস্তায় ফেঁসে গিয়ে অথবা ছোটবড় দুর্ঘটনার জন্য নিত্য যানজট লেগেই থাকে।

পুরবাসীর মতে, যেহেতু রাজ্য সড়ক থেকে জাতীয় সড়কে উন্নীত হওয়ার পর রাস্তাটিতে যানবাহনের চাপও কয়েকগুন বেড়েছে। অথচ রাস্তার ধার ঘেঁষে থাকা বাড়ি বা দোকানের জন্য রাস্তাটি চওড়া করার উপায় নেই। কোথাও কোথাও এতটাই সঙ্কীর্ণ যে দু’টি গাড়ি পাশাপাশি যেতে সমস্যায় পড়ে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪০ হাজারেরও বেশি জন সংখ্যা বিশিষ্ট শহরের আয়তন যথেষ্টই (১৬.৮৪ বর্গ কিমি) পুর-শহরের তকমা পাওয়ার আগেই শহরের মূল রাস্তাটিকে কেন্দ্র করেই ধীরে ধীরে কলেবরে বেড়ে উঠেছে প্রাচীন এই গঞ্জশহর।

পরিকল্পনার অভাব ও প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে অনেকই বড়ি বা দোকান তৈরি করেছেন কিছুটা রাস্তা দখল করেই। এখানে ফোর লেন হলে বহু বাড়িঘর ভাঙা পড়বে। প্রতিবাদ আসবে শহরবাসীর কাছ থেকেও। ওই বাস্তব সত্যটা মেনেই সমীক্ষার কাজ হয়েছে বলে মেনে নিয়েছেন জাতীয় সড়কের আধিকারিকেরা। আপাতত ঠিক হয়েছে দুবরাজপুর কৃষি সমবায় হিমঘরের কাছে ডান দিক দিয়ে নেমে বনদফতরের জায়গা ও হেতমপুর রাজবাড়ির পাশ দিয়ে সাতকেন্দুরীর কাছে গণেশ হোটেলের কাছে রাস্তাটি ফের জাতীয় সড়কে মিলিত হবে।

সমীক্ষার কাজ হয়ে গিয়ে বলে জানিয়েছেন ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের রানিগঞ্জ থেকে সিউড়ি পর্যন্ত অংশের দায়িত্বে থাকা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র নীরজ সিংহ। জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মার্চের মধ্যে পুরো রাস্তাটির সমীক্ষা শেষ করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠানো হবে।

four lane NH 60 dubrajpur bypass dayal sengupta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy