Advertisement
E-Paper

বধূর চটির মার খেয়ে চম্পট দিল ইভটিজার

রোজ চার বছরের মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। আর সে সময়ই মোটরবাইকে এসে এক যুবক তাঁর পিছু নেয়। বারবার উত্ত্যক্ত করার চেষ্টাও করে। বুধবার সকালে ফের একই ঘটনা ঘটতে দেখে প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন বছর তেইশের ওই বধূ। জনতার সামনেই ওই ইভটিজারকে পায়ের চটি খুলে পেটালেন। লোকজন জড়ো হতে দেখে বাইকে চেপেই চম্পট দিল ওই যুবক!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৫ ০১:১৭

রোজ চার বছরের মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। আর সে সময়ই মোটরবাইকে এসে এক যুবক তাঁর পিছু নেয়। বারবার উত্ত্যক্ত করার চেষ্টাও করে। বুধবার সকালে ফের একই ঘটনা ঘটতে দেখে প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন বছর তেইশের ওই বধূ। জনতার সামনেই ওই ইভটিজারকে পায়ের চটি খুলে পেটালেন। লোকজন জড়ো হতে দেখে বাইকে চেপেই চম্পট দিল ওই যুবক!

দিনের আলোয় রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে ইভটিজিংয়ের ওই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে এলাকার পুলিশি নিরাপত্তা। উল্টো দিকে, সাহস দেখিয়ে ইভটিজিংয়ের এই প্রতিবাদ, বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। প্রতিবাদী বধূর কিন্তু চোখেমুখে আত্মতৃপ্তির ভাব। তিনি বলছেন, “রোজ মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসার পরে ডাকবাংলা পাড়ায় বাজার করে বাড়ি ফিরি। গত ক’য়েক দিন ধরে ওই যুবক আমাকে নানা ভাবে উত্যক্ত করত। আমি কোনও রকমে পাশ কাটিয়ে যেতাম। কিন্তু, এ দিন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেল!”

ঠিক কী হয়েছিল?

ওই বধূর বয়ান অনুযায়ী, সাইকেল চালিয়ে বাজার করে ফেরার সময় ওই যুবক হঠাত্‌-ই মোটরবাইক নিয়ে তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ায়। মোবাইল নম্বর চায়। বধূর কথায়, “সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে ধমকে দিয়ে বলি, আমি বিবাহিত। আমার স্বামী, সন্তান আছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে মারতে ছাড়ব না।” তাতেও বিপদ কাটেনি। বধূ সাইকেল নিয়ে এগিয়ে যেতেই যুবক ফের তাঁর পিছু নেয় বলে অভিযোগ। তাঁকে কটূক্তিও করে। তাতেই ফেটে পড়েন ওই বধূ। “ক’দিন ধরেই ওই যুবকের আচরণ আমাকে ক্রুদ্ধ করে তুলেছিল। নিজেকে সামলে রেখেছিলাম। কিন্তু, এ দিন ওই যুবক খারাপ কথা বলতেই যেন আগুন জ্বলে গেল!” বলছেন বধূ। ওই সময়ই নিজের পায়ের চটি হাতে তুলে নিয়ে যুবককে পেটাতে শুরু করেন। এমন কাণ্ডে যুবক হতচকিত হয়ে যায়। রাস্তায় লোকও জড়ো হতে শুরু করে। বেগতিক দেখে কোনও মতে বাইকে চেপেই সে চম্পট দেয় বলে বধূ জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বধূর স্বামীর লটারির ব্যবসা। ভাইয়ের চায়ের দোকান রয়েছে। দু’জনেই বলছেন, “স্কুলে যাতায়াতের সময়ে মেয়েদের উপরে এই ধরনের ‘রোমিও’দের অত্যাচার এই শহরে দিনের পর দিন বাড়ছে। প্রতিবাদ করলে বা মুখ খুললেই বিপদ নেমে আসতে পারে। সেই ভয়েই অনেকে মুখ বুজে এ সব সহ্য করে নেন। এত কিছুর পরেও আমাদের পরিবারের মেয়ে যে সাহস দেখিয়েছে, তার জন্য গর্ব হচ্ছে।” তবে, বধূর পরিবারের আশঙ্কা, এ দিনের ঘটনার পরে তাঁদের উপরে কোনও বিপদ নেমে এলে পুলিশ-প্রশাসন বা শহরবাসী পাশে থাকবেন তো? একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রতিবাদী বধূও।

প্রকাশ্য রাস্তায় এমন ঘটনায় শহরের আইনশৃঙ্খলা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকের অভিযোগ, রাস্তায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার ঘটনা বেড়ে চলেছে। যদিও এ প্রসঙ্গে রামপুরহাটের এসডিপিও জোবি টমাস কে বলেন, “শহরে পুলিশ সাধ্যমতো টহল দেয়। ওই মহিলা পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি। তবে, আমরা ঘটনাটির প্রতি নজর রাখব।”

পুলিশে অভিযোগ করেননি কেন? প্রতিবাদী বধূ বলছেন, “ওই ইভটিজারকে চটিপেটা করেই তো উচিত শিক্ষা দিতে পেরেছি! এতেই আমার শান্তি।” তাঁর মায়ের আশা, মেয়ের এই কাণ্ড অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস জোগাবে অন্য মেয়েদেরও।

rampurhat eveteaser beaten up
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy