Advertisement
E-Paper

মুকুলের পয়া গাড়ি চুরি, থানায় ফোন নেতাদের

মোটরবাইকের পিছনে লেখা ‘মা-মাটি-মানুষ’। সেই মোটরবাইকই খোদ ব্লক অফিস চত্বর থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে! রঘুনাথপুর ১ ব্লক যুব তৃণমূল নেতার ওই মোটরবাইক চুরির জেরে মঙ্গলবার এলাকা জুড়ে কার্যত খোঁজ খোঁজ রব পড়ে গিয়েছে। ঘন ঘন বিধায়ক থেকে তৃণমূল নেতাদের ফোন পেয়ে তটস্থ পুলিশ কর্মীরাও। গাড়িটি যে মুকুলের (রায় নয়) অথাৎ মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০০:১৮

মোটরবাইকের পিছনে লেখা ‘মা-মাটি-মানুষ’। সেই মোটরবাইকই খোদ ব্লক অফিস চত্বর থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে! রঘুনাথপুর ১ ব্লক যুব তৃণমূল নেতার ওই মোটরবাইক চুরির জেরে মঙ্গলবার এলাকা জুড়ে কার্যত খোঁজ খোঁজ রব পড়ে গিয়েছে। ঘন ঘন বিধায়ক থেকে তৃণমূল নেতাদের ফোন পেয়ে তটস্থ পুলিশ কর্মীরাও। গাড়িটি যে মুকুলের (রায় নয়) অথাৎ মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলের কর্মীদের কথায়, এলাকায় তৃণমূলের সঙ্গে ওই মোটরবাইক যে ওতেপ্রতো ভাবে জড়িয়ে। ওই ঘটনার জেরে ব্লক অফিস চত্বরে এ বার সিসিটিভি লাগাতে চলেছে প্রশাসন। এমনই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিডিও সুনীতিকুমার গুছাইত।

কী ভাবে চুরি গেল? সোমবার দুপুরে রঘুনাথপুর ১ ব্লক অফিসে অনাস্থা সংক্রান্ত সভায় মিজের মোটরবাইকে এসেছিলেন মুকুল। সেখান থেকে বিধায়ক পূণর্র্চন্দ্র বাউরির সাথে তাঁরই গাড়িতে চেপে মুকুল দলীয় কর্মসূচিতে বেড়িয়ে যান। বিকেলে ব্লক অফিসে ফিরে দেখেন তাঁর সাধের মোটরবাইক উধাও! মুকুলের কপালে হাত।

অগত্যা তিনি নিজেই দলীয় ‘নেটওর্য়াকে’ খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হদিস না পেয়ে এ দিন তিনি রঘুনাথপুর থানায় মোটরবাইক চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। আর ব্লক অফিসের মধ্যে থেকে শাসকদলের নেতার মোটরবাইক চুরির ঘটনায় স্বভাবতই তৎপরতা থানাতেও। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “মুকুলের মোটরবাইক চুরির পরে ফোন আসছে বিধায়ক থেকে তৃণমূল নেতাদের। ফলে ওই মোটরবাইক খোঁজার জন্য বিরাট চাপ।”

বছর ত্রিশের মুকুলের কাছে নাল-সাদা রঙের মোটরবাইকটির গুরুত্ব অনেকখানি। তিনি হা-হুতাশ করে বলেন, “ও কি আর যে সে মোটরবাইক। ২০১১-র বিধানসভা ভোটের আগে গাড়িটা কিনেছিলাম। ওই গাড়িতে চেপে প্রচারে নেমে রাজ্যে পালাবদল দেখলাম। তারপর পঞ্চায়েত ভোট, লোকসভা ভোটেও সাফল্য। সবই ওই গাড়িতে। ওটা আমার কাছে পয়া ছিল।” এখন আবার সময়টাও অন্যরকম। মুকুলের ওই মোটরবাইক যদি না পাওয়া যায়! ভেবে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে মুকুলের মতোই ওই গাড়িকে ‘পয়া’ বিশ্বাসী কিছু তৃণমূল কর্মীর মনেও।

মুকুল অবশ্য বিশ্বাসী তাঁর সাধের ও পয়া ওই মোটরবাইক তিনি কিছুদিনের মধ্যেই ফেরৎ পাবেন। কিন্তু ডিসেম্বর মাসের গোড়াতেই পুরুলিয়া শহরে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা করার কথা। সে নিয়ে মেলা কাজ এখন বাকি। কিন্তু যে গাড়ির ভরসায় রাতবিরেতেও হিল্লিদিল্লি করা তাঁর কাছে জল-ভাত ছিল, সেই মোটরবাইকই যে নেই।

পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগেও গাড়িটি না থাকায় দলীয় কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে দ্রুত উদ্ধারের আর্জি জানিয়েছেন এই যুব নেতা। ঘটনার কথা জানিয়েছেন বিধায়ক থেকে শুরু করে দলের বড়, মেজো, সেজো নেতাদের। বিধায়ক পূর্ণচন্দ্রবাবুও মানছেন, “সত্যিই ওই মোটরবাইক ছাড়া মুকুলকে ভাবাই যায় না। যে কোনও কাজে রঘুনাথপুর এলাকায়, এমনকী নিতুড়িয়াতেও যখন ওকে ডেকেছি ওই গাড়িতে চড়েই সে হাজির হয়েছে। গাড়িটা চুরির পরে সত্যিই মুষড়ে পড়েছে ছেলেটা। দেখি কী করা যায়!”

মুকুলের মনে তবু শান্তি নেই। বিড় বিড় করে বলেন, “ওই গাড়িটা বড় পয়া ছিল। ওর দৌলতেই দলে আমার গুরুত্ব বেড়েছে। এখন তা পেলে হয়!”

raghunathpur car stolen mukul bandyopadhyay tmc subhraprakash mondal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy