Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মিষ্টির অর্ডার নেই, উৎসবের প্রস্তুতিও নেই

পুরুলিয়া কেন্দ্রের ফল কী হবে, তা নিয়ে দোলাচলে রাজনৈতিক মহল। দ্বন্দ্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও। চায়ের ঠেক থেকে বাড়ির বৈঠকী আড্ডাতেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুলিয়ায় চলল এ নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক। আর রাজনীতির রথীরা অঙ্ক কষে চললেন।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০০:৫৪
Share: Save:

পুরুলিয়া কেন্দ্রের ফল কী হবে, তা নিয়ে দোলাচলে রাজনৈতিক মহল। দ্বন্দ্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও। চায়ের ঠেক থেকে বাড়ির বৈঠকী আড্ডাতেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুলিয়ায় চলল এ নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক। আর রাজনীতির রথীরা অঙ্ক কষে চললেন।

তাই আজ শুক্রবার বিজয় উৎসব কী ভাবে পালন করা হবে, তা নিয়ে বৃহস্পতিবারও কোনও রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে বিশেষ কিছু জানা গেল না। জেলার রাজনীতির অন্ধিসন্ধি নিয়ে যাঁরা নিয়মিত চর্চা করেন, তাঁদের মতে, এ বার অন্যরকম পরিস্থিতিতে পুরুলিয়া কেন্দ্রের নির্বাচন হয়েছে। এই কেন্দ্র থেকে লোকসভায় বামফ্রন্টের প্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে জিতেছেন। কিন্তু ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের নিরিখে এবং গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটের হিসেবে এই কেন্দ্রে তৃণমূল এগিয়ে থাকছে। আবার তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতোকে স্বস্তি দিচ্ছেন না কংগ্রেসের প্রার্থী তথা দলের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো। দলের ভোট তো বটেই, তাঁর ব্যক্তিগত প্রভাবেও যে তিনি ভোট টানবেন নির্বাচনের আগেই তা বুঝে গিয়েছিলেন তৃণমূলের অনেক নেতাই। তাই এখানে লড়াই মূলত ওই তিনটি দলের মধ্যেই হচ্ছে বলে মত জেলার রাজনৈতিক মহলের। তবে বিজেপি-র মোদী হাওয়া কার ভোট টানে সেটাও লক্ষণীয়। ফলে কিছুতেই স্বস্তিতে পাচ্ছে না কোনও দল। শুধুই অঙ্ক কষা চলছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্রার্থীরা দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন। তাঁদের কাছ থেকে এলাকার ভোট কোন দিকে গিয়েছে, তা বার বার জানার চেষ্টা চলে। আর সেই সঙ্গে পাল্টাতে থাকে হিসেব। কারও খবরে প্রার্থীর মুখে হাসি ফোটে, আবার কারও কথা শুনে মুখ থমথমে হয়ে যায়।

তৃণমূলের ডাক্তার প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতো অবশ্য ভোট প্রচারের ধকল কাটিয়ে উঠে ক’দিন ধরে ফের রোগী দেখতে শুরু করেছেন। এ দিনও তিনি কয়েকজন রোগীর চিকিৎসা করেন। তার ফাঁকেই বলেন, “ভোটের ফল নিয়ে টেনশন তো একটু রয়েইছে। তবে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।” তিনি জানান, শুক্রবার গণনা কেন্দ্রে যাবেন কালী মায়ের মন্দিরে পুজো দেওয়া উত্তরীয় সঙ্গে নিয়ে। দলীয় প্রার্থীর জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর। এ দিন সারাটা দিন কাটালেন ভবতারণ সরকার রোডের জেলা সদর দফতরে। শান্তিরামবাবুর দাবি, ভাল ব্যবধান নিয়েই তাঁরা এই কেন্দ্রে জিতবেন।

কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতো এ দিন ঝালদার ইচাগ গ্রামের বাড়ি থেকে বলরামপুর ছুঁয়ে বিকেলে পুরুলিয়া শহরে আসেন। সন্ধ্যায় দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের ফাঁকে বললেন, “ফল নিয়ে আগাম কিছুই বলা যাবে না। বলতে পারি লড়াই হয়েছে।” বামফ্রন্ট প্রার্থী নরহরি মাহাতো এ দিন দুপুর অবধি কাটিয়েছেন জেলা সিপিএম অফিসে। সেখান থেকেই বললেন, “আগেও জিতেছি। এ বারও জিতব। টেনশন করব কেন?” তবে ব্যবধান খুব বেশি হবে না বলেই তাঁর ধারণা।

কিন্তু বিজয় মিছিলের আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার কথা কারও মুখেই শোনা গেল না। শুধু তৃণমূলের জেলা সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বললেন, “মিষ্টির অর্ডার দেওয়া হয়নি, তবে আবির, ব্যান্ডপার্টি এ সব তৈরি রাখা হচ্ছে।”

পুরুলিয়ার ভোটের হাওয়া মোরগ যে বনবন ঘুরছে। তাই কে শেষ পর্যন্ত বিজয় মিছিলের আবির মাখেন, দেখতে উন্মুখ পুরুলিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

prasanta pal sweet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE