মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চুরির চেষ্টা করছিলেন। পুলিশের হাতে না তুলে দিয়ে সেই ‘অপরাধে’ মহিলাকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার ভার তুলে নিলেন এলাকার মহিলাদেরই একাংশ। চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুসি তো জুটলই, তারই সঙ্গে ওই মহিলার হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে মাথার চুলও কেটে দেওয়া হয়। শুক্রবার দুপুরে সিউড়ি শহরে অভিযুক্ত এক মহিলাকে এমনই মধ্যযুগীয় শাস্তি দিয়ে নিগ্রহ করার ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এলাকার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ ডাঙালপাড়ায় দিন কয়েক ধরেই চুরির ঘটনা ঘটছিল। এলাকার বাসিন্দা অমিয় মণ্ডল দিন দু’য়েক ধরে বাইরে রয়েছেন। ঘর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন বাড়ি বাড়ি জল দেওয়ার কাজে যুক্ত মাধব মান নামে এক প্রৌঢ়। তাঁর দাবি, এ দিন দুপুরে তিনি অমিয়বাবুর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখেন বাড়ির বেশ কয়েকটি দরজার তালা ভাঙা। তা দেখেই তিনি পড়শিদের খবর দেওয়ার কথা ভাবছিলেন। অভিযোগ, ঠিক তখনই ওই মহিলা বাড়ির ভেতর থেকে ছুটে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু মাধববাবু তাঁকে ধরে ফেলেন। তারই মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচিতে হাজির হয়ে যান পড়শিরাও। তার পরেই ক্ষিপ্ত জনতা ওই মহিলার হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর ও মাথার চুল কাচি দিয়ে কেটে দেন বলে অভিযোগ। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মহিলাদের একাংশই চোর সন্দেহে আটক ওই মহিলার এমন নিগ্রহ করেন বলে জানা গিয়েছে। তবে, ভিড়ের মধ্যে থেকেই কয়েক জন সহৃদয় মহিলা ওই মহিলাকে আর মারতে নিষেধ করেন। কিন্তু তাতেও যেন রাগ কমছিল না ওই ক্ষিপ্ত জনতার। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে একটি শাবল ও কিছু গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই মহিলা বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর থানা এলাকার কয়েক জন দুষ্কৃতীর সঙ্গে মিলিত ভাবে চুরির কাজে যুক্ত।