Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

শীতের আমেজ, সাজছে বক্রেশ্বর

পর্যটকরা এখনও সে ভাবে আসতে শুরু করেননি। তবে সামনের ডিসেম্বর থেকে মার্চ এখানে বেড়াতে আসার সেরা মরসুম। পর্যটকেরা যাতে হাতাশ না হন সে জন্য প্রস্তুত বক্রেশ্বর ধাম। বক্রেশ্বর শতাব্দী প্রাচীন শিব-ধাম। একান্নপীঠের একপীঠ হলেও পর্যটকদের এখানে আসার মূল আকর্ষণ অবশ্যই উষ্ণ প্রস্রবণ। নীল-সাদা রঙে, ঝকঝকে টাইলসে সেই উষ্ণ প্রস্রবণকে দারুণ ভাবে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতরের টাকায় ও জেলা পরিষদের সহায়তায়।

পর্যটক আসতে শুরু করেছে বক্রেশ্বরে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

পর্যটক আসতে শুরু করেছে বক্রেশ্বরে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

অরুণ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১৪
Share: Save:

পর্যটকরা এখনও সে ভাবে আসতে শুরু করেননি। তবে সামনের ডিসেম্বর থেকে মার্চ এখানে বেড়াতে আসার সেরা মরসুম। পর্যটকেরা যাতে হাতাশ না হন সে জন্য প্রস্তুত বক্রেশ্বর ধাম।

বক্রেশ্বর শতাব্দী প্রাচীন শিব-ধাম। একান্নপীঠের একপীঠ হলেও পর্যটকদের এখানে আসার মূল আকর্ষণ অবশ্যই উষ্ণ প্রস্রবণ। নীল-সাদা রঙে, ঝকঝকে টাইলসে সেই উষ্ণ প্রস্রবণকে দারুণ ভাবে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতরের টাকায় ও জেলা পরিষদের সহায়তায়। যে গরম জলে স্নান করতে এসে জলে ভাসমান শ্যাওলা ও নোংরা দেখে হতাশা প্রকাশ করতেন পর্যটকেরা এ বার তাঁদের তেমন অভিজ্ঞাতা হবে না বলে জানিয়েছেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধরী। স্নানের জন্য থাকা গরম জলের কুণ্ডগুলি থেকে নোংরা জল নিকাশের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি নীচে ৬ ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে তারপর নতুন নুড়ি পাথর দেওয়া হয়েছে। আগে নোংরা জল বের করার ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল। সেই সঙ্গে সৌন্দর্যায়নের জন্য টালি বসানো ও রং করার জন্য ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কাজ প্রায় শেষের দিকে।

সেখানকার পাণ্ডা তথা সেবায়িত সমিতির সম্পাদক প্রকাশ চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০০৪ সালে রামচন্দ্র ডোমের সাংসদ কোটার ২৩ লক্ষ টাকায় নবরুপে বক্রেশ্বর গড়ে উঠে। স্নানের ঘাট থেকে শুরু করে সব কিছুর উন্নয়ন ঘটে এবং একটি ঠিকাদার সংস্থার হাতে দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতি দেখভালের দায়িত্ব দেয়। মাথা পিছু পাঁচ টাকা টিকিটের বিনিময়ে ওই ঠিকাদার সংস্থা সেখানে আশা পর্যটকদের পরিষেবা দেয়। কিন্তু সেই সৌন্দর্যায়ন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গত তিন বছর আগে ওই ঠিকাদার সংস্থা দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। সেই সময় পর্যটকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, দু’টি স্নানের ঘাটই সংস্কারের অভাবে নোংরা আবর্জনায় ভরে গিয়েছিল। ২০১০-১১ সালে বাম আমলের শেষ দিকে বক্রশ্বরকে পর্যটন মানচিত্রে জায়াগা দেওয়ার লক্ষ্যে পর্যটন দফতর প্রায় ২.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই কাজ শেষ হয়েছে ১৩ সালের প্রথম দিকে। তবে সেই কাজে বেশ কিছু খামতি ছিল। বিশেষ করে উষ্ণ প্রস্রবণে, বলে মত এলাকাবাসী, ব্যবসায়ী এবং বক্রেশ্বর মন্দিরের সেবাইতদের। এ বার সেই খামতি মিটেছে বলে জানিয়েছেন সেবাইত সমিতির সম্পাদক প্রকাশ চৌধুরী।

সোমবার গরম জলে স্নান সেরে বক্রেশ্বর শিবমন্দির ও মহিষমর্দিনী মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার আগে বার্ণপুরের পৌঢ়া কুসুম চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর যুবক বরিশঙ্কর সিংহ কিংবা সিউড়ি থেকে আসা দম্পতি পার্থ সাহা, শ্রাবণী সাহা প্রত্যেকেই বলছেন, “আগে বহুবার বক্রেশ্বরে এসেছি। এ বার অনেক পরিছন্ন ও সাজানো গোছানো বক্রেশ্বর দেখছি। গরমজলের ঘাটও খুব পরিচ্ছন্ন।”

তবে সেবাইতদের এক সদস্য তথা স্থানীয় বিজেপি নেতা জয়ন্ত আচার্য বা স্থানীয় বাসিন্দা সমীর দে’রা বলছেন, “উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই। তবে সেটা রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও নজর দিতে হবে প্রশাসানকে। শুধুমাত্র উষ্ণ প্রস্রবণকে সাজিয়ে গুছিয়ে তোলার পাশাপাশি তারাপীঠ ও কলকাতা থেকে বক্রেশ্বর আসার বাস যোগাযোগ, পানীয় জলের ব্যবস্থাও ভীষণ জরুরি।” সভাধিপতি বিকাশবাবুর আশ্বাস, “আমরা ওই পর্যটনকেন্দ্রটিকে উন্নত করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাছি। খুব শীঘ্রই একটি এজেন্সির হাতে ওই পর্যটন কেন্দ্রটি দেখাভালের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে। আগের মতো টিকিট ব্যাবস্থা চালু থাকবে। এজেন্সি কাছে থেকে টাকা নিয়ে এলাকার সংস্কার এবং উন্নয়ন করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bakreshwar arun mukhopadhyay dubrajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE