Advertisement
E-Paper

সামনে ভোট, কাজের হাল জানতে চিঠি পুরপ্রধানকে

তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া পুরসভার গত সাড়ে চার বছরের কিছু কাজ ও সিদ্ধান্ত নিয়ে শহরে কম বিতর্ক হয়নি। কিন্তু বিরোধী বামফ্রন্ট তথা সিপিএম কাউন্সিলরদের এ সব নিয়ে জোর বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি। অবশেষে ‘নিরবতা’ ভেঙে পুরসভার কিছু বিষয় নিয়ে সরল হলেন এক সিপিএম কাউন্সিলর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:১৬

তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া পুরসভার গত সাড়ে চার বছরের কিছু কাজ ও সিদ্ধান্ত নিয়ে শহরে কম বিতর্ক হয়নি। কিন্তু বিরোধী বামফ্রন্ট তথা সিপিএম কাউন্সিলরদের এ সব নিয়ে জোর বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি। অবশেষে ‘নিরবতা’ ভেঙে পুরসভার কিছু বিষয় নিয়ে সরল হলেন এক সিপিএম কাউন্সিলর।

কোন প্রকল্পে কত টাকা এসেছে, কী ভাবে খরচ হয়েছে, কাজের দরপত্র ঠিকঠাক ডাকা হয়েছিল কি না তা নিয়ে পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বরূপ সেন পুরপ্রধান শম্পা দরিপাকে সম্প্রতি ১১ দফা দাবির একটি চিঠি দিয়েছেন। স্বরূপবাবু বলেন, “দলের সম্মতি নিয়ে প্রশ্নগুলি পুরপ্রধানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চিঠির উত্তর পুরপ্রধান দেননি। আগামী মঙ্গলবার পুরসভার বোর্ড মিটিং আছে। সেখানে উত্তর না পেলে তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করব। বৈঠকও বয়কট করা হবে।”

স্বরূপবাবুর অভিযোগ, কোন প্রকল্পে কত টাকা আসছে তা কাউন্সিলরদের জানানো হচ্ছে না। ওয়ার্ডে কাজ করার জন্য মাঝে মাঝে কিছু টাকা কাউন্সিলরদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোন প্রকল্পের টাকা কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে সেই সব বিষয়েও কিছু বলা হচ্ছে না। কাজের দরপত্রও ঠিকঠাক ডাকা হচ্ছে না। তাঁর দাবি, “আমার ওয়ার্ডে একদিন দেখি এক ঠিকাদার নালা সংস্কারের কাজ করাচ্ছেন। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, কত টাকার কাজ, কাজের পরিকল্পনার খসড়া দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওই ঠিকাদার কিছুই দেখাতে পারেননি।” তাঁর সংযোজন, অনেক বিষয়েই কাউন্সিলরদের অন্ধকারে রাখা হচ্ছে। কোনও কাজ করার আগে কারও মতামতও নেওয়া হচ্ছে না। তাই আমি প্রকৃত তথ্য জানতে চেয়েছি।”

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে পুরভোটে ১২টি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। পুরপ্রধান হন শম্পা দরিপা, উপ পুরপ্রধান হন তৃণমূলের অলকা সেন মজুমদার। অন্য দিকে, চারটি আসন পেয়ে বিরোধী দল হয় বামফ্রন্ট। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর শিউলি মিদ্যা আগে পুরপ্রধান ছিলেন। তাঁকে বামফ্রন্ট বিরোধী দলনেত্রী ঠিক করে। কিন্তু বামেদের সে ভাবে আন্দোলনে নামতে দেখা যায়নি।

তবে শম্পাদেবীর কাজের বিরোধিতা করে একাধিকবার তোপ দাগতে দেখা গিয়েছিল অলকাদেবীকেই। ২০১২ সালে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ডেকেছিলেন অলকাদেবী। অনাস্থার জেরে তলবি সভায় আস্থা ভোটে পরাজিতও হন শম্পাদেবী। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তাঁর আসন অটলই থাকে। এরপর থেকে পুরসভার ত্রিসীমানায় অলকাদেবীকে বিশেষ দেখা যায়নি।

অন্য দিকে, বামেরা মুখে কার্যত কুলুপ আঁটায় একপ্রকার নির্বিঘ্নেই পুরসভা চালাচ্ছিলেন শম্পাদেবী। গঠন করেননি সিআইসি (চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল)-ও। ভিতরে ভিতরে এই ঘটনার বিরোধিতা করলেও প্রকাশ্যে অবশ্য কোনও কাউন্সিলরকেই এতদিন মুখ খুলতে দেখা যায়নি। ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ শম্পাদেবী। তিনি বলেন, “যে প্রশ্নগুলির উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছে সেগুলির কোনও ভিত্তিই নেই। আমি কোনও উত্তর দেবও না।” সিআইসি কেন গঠন করা হয়নি? শম্পাদেবীর উত্তর, “ওটা রাজ্য সরকারের ব্যাপার।”

শম্পাদেবী গুরুত্ব না দিলেও, পুরভোট ঘোষণা হওয়ার মুখে স্বরূপবাবুর চিঠিকে কেন্দ্র করে ফের রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে পুরসভায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, গত বিধানসভা, পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে কার্যত কোমায় চলে গিয়েছে সিপিএম। পুরভোটে অনেক আগে থেকেই তাই লড়াই শুরু করে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে তারা। বাঁকুড়া পুরবাসীদের একাংশের ক্ষোভ, পুর নির্বাচনের পরে পুরসভায় বিরোধীরা আছেন বলে আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম। আরও আগে ওদের সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল।

কেন এতদিন চুপ ছিল বিরোধীরা? সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র বলেন, “পুরসভাগুলিতে বিরোধীদের কাজের মূল্যায়ণ এখনও করিনি। তবে বিরোধীদের কতটা আক্রমনাত্মক হতে হবে সেই সংক্রান্ত নির্দেশ জেলা নেতারা দেয়নি। জোনাল কমিটির তরফে কোনও নির্দেশ ছিল কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”

bankura cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy