মত্ত অবস্থায় এলাকায় চিৎকার ও গালিগালাজ করছিল দাদা। প্রতিবাদ করেছিলেন ভাই। শুধু তাই নয়, দাদাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করে তাকে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিতে গিয়েছিলেন তিনি। যাতে মদ্যপ অবস্থায় রাস্তায় পড়ে গিয়ে দাদার চোট না লাগে। কিন্তু ভাইয়ের সেই ভাবনা মূল্য পেল না দাদার কাছে। মদ খাওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন বলে ভাইয়ের বুকে ছুরি মেরে খুন করার অভিযোগ উঠল দাদার বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে হাওড়ার পাঁচলা থানার সাহাপুর খান পাড়ায় ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে নিহতের নাম ইজরায়েল খান (৪২)। পেশায় দিনমজুর ছিলেন ইজরায়েলের তাঁর স্ত্রী আজমিরা বেগম দাদা রফিকের বিরুদ্ধে পাঁচলা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ রফিককে গ্রেফতার করে। যদিও যে ছুরি দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে তা পাওয়া যায়নি। ছুরি উদ্ধারে রফিককে জেরা করছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রফিক ইজরায়েলের মামাতো দাদা। বছর পঞ্চান্নর রফিক প্রায় প্রতিদিনই মদ খেয়ে পাড়ায় এসে চিৎকার চেঁচামিচি, গালিগালাজ করত। এই নিয়ে প্রতিবেশীরাও রফিকের উপরে বিরক্ত ছিলেন। পাড়ার লোকজন তাকে কয়েকবার মারধরও করেছে। ইজরায়েলও দাদাকে বহুবার এ সব করতে নিষেধ করলেও সে শোনেনি। শনিবার রাতেও ১০টা নাগাদ মদ খেয়ে এসে গোলমাল শুরু করে রফিক। ইজরায়েলের বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ করতে থাকে। আজমিরা বেগম বলেন, ‘‘দাদাকে বাড়ির সামনে গালিগালাজ করতে শুনে ও ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে ও সব করতে নিষেধ করে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়াও হচ্ছিল। একটু পরে দাদাকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে যায় ও। তার পরেই শুনি ওকে ছুরি মেরে খুন করেছে দাদা।’’
স্থানীয় কয়েক জন জানান, ইজরায়েল দাদাকে নিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পরেই হঠাৎই রফিক তাঁর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। ছুরি বের করে ভাইয়ের বুকে বসিয়ে দেয়। চিৎকার করে ইজরায়েল রাস্তায় পড়ে যান। চিৎকার শুনে লোকজন বেরিয়ে আসেন। বাড়ি থেকে ছুটে যান আজমিরাও। সকলে মিলে ইজরায়েলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ এসে মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠায়।
পুলিশ জানিয়েছে মদ খেয়ে মাতলামো করার জন্য প্রতিবেশী এমনকী ভাই ইজরায়েলের হাতে আগে কয়েকবার মারধর খেয়েছে রফিক। সেই কারণে ভাইয়ের উপর রাগ ছিল। এ দিন সুযোগ বুঝে সে এই কাজ করেছে। তার বিরুদ্ধে আগেও একজনকে ছুরি মারার অভিযোগ রয়েছে। এ দিন রফিক ছুরি নিয়েই বেরিয়েছিল।