জেলা সম্মেলনে ‘ব্যতিক্রমে’র ধারা নিয়ে প্রশ্ন উঠল সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে। পার্টি কংগ্রেসের নির্ধারিত নীতি যদি শাখা বা এরিয়া কমিটি স্তরে কার্যকর করা যায়, জেলায় তার ব্যতিক্রম হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্নে সরব হলেন রাজ্য কমিটির একাধিক সদস্য। দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে অবশ্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, ‘ব্যতিক্রম’ যা হয়েছে, তা সাময়িক। ব্যতিক্রমই নিয়ম নয় এবং দলের রূপরেখা মেনেই সর্বস্তরে চলতে হবে।
সিপিএমের মালদহ ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনে বিদায়ী জেলা সম্পাদকেরাই পদে ফিরেছেন তিন দফার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও। আর কোচবিহার জেলার সম্মেলনে দলের জেলা সম্পাদক পুনর্বহাল হয়েছেন বয়সের ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে গেলেও। তিন ক্ষেত্রেই ওই জেলা সম্পাদকদের বিকল্প মুখ নিয়ে দলে মতৈক্য তৈরি করা যায়নি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বুধবার দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকের প্রথম দিনে একাধিক নেতা প্রশ্ন তুলেছেন। কারও প্রশ্ন, দলে আলোচনা করে কার্যকর হওয়া নীতি রূপায়ণ করতে গিয়ে এমন ‘শিথিলতা’ কেন হবে? কারও বক্তব্য, তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের সব কমিটিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা সম্মেলনের নির্দেশিকায় দেওয়া রয়েছে। অথচ কার্যক্ষেত্রে মেয়াদ উত্তীর্ণ নেতাদেরও পদ থেকে সরানো যাচ্ছে না! শারীরিক ও মানসিক ভাবে সক্রিয় এবং আন্দোলনে বিপুল অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও প্রবীণ নেতা বিমান বসু যে গত বারের সম্মেলনে বিনা বাক্যব্যয়ে অব্যাহতি নিয়েছিলেন, সেই উদাহরণও সিপিএমের অন্দরে চর্চায় আসছে।
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটির প্রারম্ভিক ভাষণে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অবশ্য বলেছেন, ‘উপযুক্ত বিকল্প’ না পাওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতির চাপে ‘ব্যতিক্রম’ হয়েছে। তবে তা ‘অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা’। দলের নীতিই সর্ব স্তরে মেনে চলতে হবে। সিপিএম সূত্রের খবর, পার্টি কংগ্রেসের পরে জেলা কমিটির বৈঠক করে মালদহ ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ‘অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা’র মেয়াদ বেঁধে দেওয়া হতে পারে। কোচবিহারের রাজবংশী নেতা, জেলা সম্পাদকের ক্ষেত্রে সম্ভবত ‘অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা’ কার্যকর হবে না।

সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
এ বারই প্রথম সিপিএমের কৃষক, খেতমজুর ও শ্রমিক সংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশের আয়োজন হচ্ছে। আগামী ২০ এপ্রিলের ওই সমাবেশের জন্য দলের সব রকম সহায়তার বার্তা দেওয়া হয়েছে রাজ্য কমিটির বৈঠকে। ফেব্রুয়ারির ২২ থেকে ২৫ তারিখ রাজ্য সম্মেলন মিটে গেলে ব্রিগেডের প্রস্তুতি শুরু হবে পূর্ণ উদ্যমে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)