নরেন্দ্র মোদীর পথেই হাঁটলেন রাজনাথ সিংহ।
চলতি মাসের গোড়ায় রাজ্যে এসে কেন্দ্রে কংগ্রেস আমলের দুর্নীতি নিয়ে সরব হলেও সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও সারদা নিয়ে কার্যত চুপ রইলেন।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তিতে তার সাফল্য প্রচারে মঙ্গলবার কলকাতায় এসেছিলেন রাজনাথ। রাজভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিজেপির রাজ্য সভাভতি রাহুল সিংহ-সহ ছয় নেতা অনুযোগ করেছিলেন, সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের গতি শ্লথ হয়ে যাওয়ায় মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে। তার পরেও বড়বাজারের সত্যনারায়ণ পার্কে দলীয় জনসভায় এ প্রসঙ্গে কিছু বললেন না রাজনাথ। বরং সারদা দেবীর বাণী উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘‘যদি শান্তি চাও, কারও দোষ দেখো না। দোষ দেখবে নিজের।’’ তার আগে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য প্রশ্নের জবাবে রাজনাথ বলেন, ‘‘সারদা কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা বিচার পাবেন।’’
বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব চেয়েছিলেন তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থে রাজনাথ তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের সমালোচনা করুন। রাজনাথ কিন্তু এ দিন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে কোনও আক্রমণ করেননি। তিনি বলেন, ‘‘অন্য দলের কর্মীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে।... বোমা বিস্ফোরণের যা খবর পাচ্ছি, তা খুবই ভয়ঙ্কর। সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, এ সব বন্ধ হোক।’’
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজনাথের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের মহাসচিব ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বিধানসভার মিডিয়া সেন্টারে বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের আইন-শঙ্খলা অন্য রাজ্যের থেকে ভাল। আমরা তাঁর এই মন্তব্যের জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করছি।’’ পার্থবাবুর অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত, তা সত্ত্বেও রাজনাথ তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক নেতা ও সরকার সম্পূর্ণ আলাদা। আসলে উনি দলীয় ক্যাডারদের সন্তুষ্ট করতেই ওই ধরনের মন্তব্য করেছেন।’’
বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের মুখ চেয়ে তৃণমূল সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে সহযোগিতার বার্তা দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রাজনাথের ছিল।
বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যরা অভিযোগ করেন, উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে তৃণমূলের মদতে জামাতের ভারত বিরোধী কার্যকলাপ বহু গুণ বেড়েছে। এ নিয়ে প্রেস ক্লাবে প্রশ্নের জবাবে এ দিন রাজনাথ বলেন, ‘‘এই ধরনের কাজকর্ম ঠেকাতে কেন্দ্র রাজ্যকে সব রকম সাহায্য করবে।’’ পরে বড়বাজারের সভাতেও তিনি বলেন, ‘‘আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারকে আশ্বস্ত করছি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, আর্থিক এবং উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্র সব রকম সাহায্য করবে।’’