Advertisement
E-Paper

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মিছিল এককাট্টা বিরোধীদের

তালিকাটা লম্বা হচ্ছে। শিলিগুড়ি, রামজীবনপুর, বসিরহাট...। শাসক দল যতই কটাক্ষ করুক, ভোট-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়ে পরের পর এলাকায় বিরোধীদের প্রতিরোধ কিন্তু ক্রমেই বাড়ছে। শনিবার পুরভোটের দিন বসিরহাটে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা শাসক দলের হাত ধরে এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। এ বার তার বিরুদ্ধে এককাট্টা হলেন এলাকার বাম, কংগ্রেস, এসইউসি নেতৃত্ব। নাগরিক কমিটি গড়ে সোমবার এলাকায় মিছিল করেছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪৫

তালিকাটা লম্বা হচ্ছে। শিলিগুড়ি, রামজীবনপুর, বসিরহাট...। শাসক দল যতই কটাক্ষ করুক, ভোট-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়ে পরের পর এলাকায় বিরোধীদের প্রতিরোধ কিন্তু ক্রমেই বাড়ছে।

শনিবার পুরভোটের দিন বসিরহাটে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা শাসক দলের হাত ধরে এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। এ বার তার বিরুদ্ধে এককাট্টা হলেন এলাকার বাম, কংগ্রেস, এসইউসি নেতৃত্ব। নাগরিক কমিটি গড়ে সোমবার এলাকায় মিছিল করেছেন তাঁরা। রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন, এমন অনেককেও শ’চারেক লোকের সেই মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে। ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা গিয়েছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।

এই ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে শাসক-শিবিরে। কারণ, এর আগে শিলিগুড়ি পুরভোটেও তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন বাম নেতৃত্ব। ভোটের আগে ও ভোটের দিন বাম, কংগ্রেস, বিজেপি—সব বিরোধী দলকেই একযোগে প্রতিরোধ করতে দেখা গিয়েছে। একে ‘রামধনু জোট’ বলে কটাক্ষও করেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুর পুরসভায় এই অস্ত্র এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে পুরভোটে সাফল্য আশা করছে বিরোধীরা। বাঁকুড়ার সোনামুখীতেও বহিরাগতদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বাম কর্মীরা। শনিবার পুরভোটের দিনও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসের বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ হয়েছে।

বসিরহাটেও সেই মডেলই চোখে পড়েছে এ দিন। সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রতাপ নাথ বলেন, ‘‘দলমত নির্বিশেষে আমরা নাগরিকদের ডেকেছিলাম। বসিরহাটে এ বার অভূতপর্ব ভোট হয়েছে। গণতন্ত্রের টুঁটি চিপে ধরেছে শাসক দল। বহিরাগত দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা ছিল নীরব দর্শকের।’’ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) অমিত মজুমদারও বলেন, ‘‘আমরা এককাট্টা হয়ে তৃণমূলের নির্লজ্জ আচরণের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছি।’’

কিন্তু, কয়েক মাস আগেই বসিরহাট উপ-নির্বাচনে জিতে রাজ্যের একমাত্র বিধায়ক পেয়েছিল যে দল, সেই বিজেপিকে এ দিন মিছিলে সামিল হতে দেখা যায়নি। যদিও ভোটের আগে ও ভোটের দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন ওই দলের নেতারা। বহিরাগত দুষ্কৃতীদের এলাকা থেকে বের করে দিতে হবে, এই দাবিতে বসিরহাটে পথ অবরোধে বসেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। শমীকবাবু এ দিন বলেন, ‘‘বসিরহাটে এ ধরনের গণ প্রতিবাদ হচ্ছে, তা আমার জানা ছিল না। জানলে নিশ্চয়ই যেতাম। শাসক দল যে ভাবে ভোটের দিন গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করল, তার বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এ জন্য পতাকা-বিহীন আন্দোলনে সামিল হতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই।’’

এ দিন বসিরহাট শহর ঘুরে সন্ধের দিকে নাগরিক কমিটির মিছিল পৌঁছয় এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলোর সামনে। সেখানে আগে থেকেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ জনতা বাংলোর গেট ভাঙার চেষ্টা করে। গেটের বাইরে পুলিশ আধিকারিকের দু’টি নামফলক ভেঙে দেওয়া হয়। এরপরে পুলিশ এগিয়ে এলে পিছু হটে জনতা। এত কিছুর পরেও এ দিন বসিরহাট মহকুমার দু’টি পুরসভার যে ৯টি বুথে পুনর্নির্বাচন হয়েছে, সেখানেও গোলমাল পিছু ছাড়েনি। পুলিশকে লক্ষ করে বোমা পড়েছে। বহিরাগত হঠাতে পুলিশকে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যেতে হয়েছে। বুথের মধ্যে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে। শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে দু’টি বুথে ভোটই দিতে যাননি বেশির ভাগ মানুষ। এর পরেও এসডিপিও দাবি করেছেন, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ।

বিরোধীদের জোটকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলি। সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর দাবি, ‘‘বিরোধীরা ভয় পেয়েছে বলেই একজোট হয়েছে। নিজেরাই বিভিন্ন জায়গায় ইভিএম ভেঙে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। মানুষই এ সবের উত্তর দেবেন।’’

Basirhat municipal election congress BJP trinamool Idris ali Goutam Deb
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy