Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Madan Mitra on SSKM Incident

শুভদীপের মৃত্যু হয়েছে, আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে দুঃসংবাদ শুনেই ভারাক্রান্ত বিধায়ক মদন

শুভদীপের মৃত্যু হয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছেই শুনলেন মদন মিত্র। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর খবর পেয়ে অবশ্য মেপে কথা বললেন।

Reaction of Madan Mitra on death of Suvadeep Pal

কী বললেন মদন? — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ১৪:৪৯
Share: Save:

শুভদীপ পাল। তাঁকে ভর্তি করাতে গিয়েই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিধায়ক মদন মিত্র। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় ডায়েরিও করেছেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুভদীপকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হলে খুশি হয়েছিলেন মদন। বিতর্ক চলার মধ্যেই সে কথা জানিয়েছিলেন আনন্দবাজার অনলাইনকে। আশা করেছিলেন, এ বার নিশ্চয়ই সুস্থ হয়ে উঠবে। চেষ্টা ব্যর্থ হবে না, কিন্তু হল না। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি শুভদীপকে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় মৃত্যু হয়। কলকাতার বাইরে থাকা মদন সেই খবর আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে শুনে বলেন, ‘‘আমি তো কিছুই জানতে পারিনি। খুব খারাপ লাগছে শুনে।’’ প্রথমেই এসএসকেএম ভর্তি নিয়ে নিলে কি চিকিৎসার সুবিধা হত বলে মনে হয়? অনেক বিতর্ক পোহানো মদন বলেন, ‘‘এ সব নিয়ে আমি আর কিছুই বলতে চাই না। খালি বলব, এই মৃত্যু বড়ই দুঃখজনক।’’

কম বিতর্ক আর ঝক্কি পোহাতে হয়নি মদনকে। গত শুক্রবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় আহত শুভদীপকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নিতে চাননি বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে মদন গেলেও রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর পর সেখানে দাঁড়িয়েই মদন বলেছিলেন, দরকার হলে তিনি নিজের ঘড়ি-আংটি বিক্রি করে ওই যুবকের চিকিৎসা করাবেন। হাসপাতালের বিরুদ্ধে দালালরাজের অভিযোগ তুলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবিও করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করাতে পারেননি।

এর পরেই শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। তৈরি করেন স্বয়ং মদন। এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, হাসপাতাল চত্বরে কোনও রকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের পাশেই আছেন। এর পরে মদন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করা যাবে না! আমি ওঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। যিনি গতকাল (শুক্রবার) আহত হয়েছিলেন, তিনিও স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁর পাশে দাঁড়াতেই আমি এসএসকেএমে গিয়েছিলাম। এটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তা হলে আমায় তাড়িয়ে দিন! চলে যাব। যা বলবেন মেনে নেব।’’

পরে মদনের সঙ্গে তৃণমূলের পক্ষে মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কথা বলেন। তা সত্ত্বেও এসএসকেএম মামলা করায় সরব হন তিনি। বলেন, ‘‘কণ্ঠে আমার কাঁটার মালা, কেসের মালা ফুলের মালা নয়, যাঁরা কেস করেছেন, ভাল করেছেন। এ বার আমি কামারহাটিতে বুক ফুলিয়ে ঢুকব। সোনা পাচার, কয়লা পাচার, গরু পাচারের জন্য কেস খাইনি, কেস খেয়েছি স্বাস্থ্যকর্মীকে ভর্তি করার জন্য। আমার গর্ব, আমি জনগণের জন্য কেস খেয়েছি। আমি তৃণমূল বিধায়ক হয়েও তৃণমূল আমলে কেস খেয়েছি।’’

তবে দলের সঙ্গে দূরত্ব রাখতে চাননি মদন। প্রথমে ‘সে নো টু পিজি’, ‘বয়কট পিজি’ স্লোগান তোলা কামারহাটির বিধায়ক ‘‘এ রকম বলেছিলাম নাকি! আমার হ্যালুসিনেশন রোগ আছে। অ্যালঝাইমার্স শুরু হয়েছে। ভুলে গিয়েছি। মুকুলের রোগ ধরেছে। একটা গেঞ্জি কিনেছি। তাতে লেখা ‘এ বার সন্ন্যাস নেব’। সন্ন্যাসী হতে হলে আগে লালন ফকির হতে হবে।’’

রসিকতা মদনের গলায় সব সময়েই লেগে থাকে। কিন্তু শুভদীপের মৃত্যুর খবর শোনার পরে স্বাভাবিক ভাবেই সেটা ছিল না। বরং, গলা বুজে আসে। ভারাক্রান্ত স্বরে বলেন, ‘‘এখন আমার একটাই চাওয়া। ওঁর দেহ দ্রুত ময়নাতদন্ত করে মঙ্গলবারই যেন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’ আপনি কি এর জন্য উদ্যোগ নেবেন? নিশ্চিত করে কিছু না জানিয়ে মদন বলেন, ‘‘আমি খুব তাড়াতাড়ি কলকাতায় ফিরছি। তার পরে ঠিক করব কী করা যায়।’’ এর পরে একটি টুইট করে মদন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পূর্বনির্ধারিত কোনও কর্মসূচিতেই তিনি যোগ দেবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SSKM Hospital Madan Mitra tmc leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE