সারদা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল-জামাত যোগাযোগের সব তথ্যই বাংলাদেশের হাতে দ্রুত তুলে দিতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বিষয়ে আজ সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কাছে রিপোর্ট চাইল বিদেশ মন্ত্রক।
বাংলাদেশের তরফে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে নয়াদিল্লির কাছে দরবার করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউ ইয়র্কে নরেন্দ্র মোদীকে তৃণমূলের জামাত-যোগ নিয়ে তথ্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীও সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন, বাংলাদেশের কাছে এ নিয়ে কোনও তথ্যই যেন গোপন না করা হয়। সেই অনুযায়ীই বিদেশ মন্ত্রক এ বিষয়ে সিবিআইয়ের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর তা খতিয়ে দেখে ঢাকার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
কূটনীতির বাধ্যবাধকতা মেনে মোদী সরকার যে পদক্ষেপ করছে, তাতে তৃণমূলের অস্বস্তিই বাড়বে। তৃণমূলের একাংশের সঙ্গে জামাতের যোগাযোগ স্পষ্ট হলে বিজেপি ও অন্যান্য দলগুলি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলবে।
সামনেই নেপালে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ওই সম্মেলনের সময় মোদীর সঙ্গে বৈঠক হতে পারে শেখ হাসিনার। তার আগে হাসিনাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীই পদক্ষেপ করতে চান মোদী। বাংলাদেশের স্বার্থ-বিরোধী শক্তিকে ভারতের মাটি ব্যবহার করতে না দেওয়ার বিষয়ে তাঁরা যে বদ্ধপরিকর, মোদী সেটা তুলে ধরতে চায়।
সিবিআই শীর্ষ সূত্রের খবর, বিদেশ মন্ত্রককে এখনও রিপোর্ট পাঠায়নি তারা। এ পর্যন্ত মেলা তথ্যের ভিত্তিতেই প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করে বিদেশ মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হবে। তদন্তে তৃণমূল-জামাত যোগের যথেষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানের সঙ্গে বাংলাদেশের মৌলবাদীদের যোগও সিবিআইয়ের আতস কাচের তলায় রয়েছে। আরও সুনির্দিষ্ট তথ্যের খোঁজ চলছে, যাতে তা আদালতেও অব্যর্থ প্রমাণ হিসেবে পেশ করা যায়। বাংলাদেশ সরকার নিজেরাও ইমরানের সঙ্গে জামাতের যোগাযোগের তদন্ত শুরু করেছে। ঢাকা চাইছে, ভারত সবিস্তার তথ্য পেশ করুক, যাতে কোনও দোষীই না পার পেয়ে যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, শুধু সারদা প্রশ্নই বা কেন, বর্ধমানে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণেও বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তথা এ দেশের কিছু লোকের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে। এই সন্ত্রাসের মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ভারতের পাশে প্রয়োজন। বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা ভারতে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। এ দেশের মাটিকে বিস্ফোরক ও অস্ত্র তৈরির কাজে লাগানো হচ্ছে, যা শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের পক্ষেও বিপজ্জনক। গত মাসে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলিকেও মোদী সরকারের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, ভারতের জমি কোনও ভাবেই বাংলাদেশের মৌলবাদী ও জঙ্গিদের স্বার্থে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র বলছে, সেই অঙ্গীকার পালনে বদ্ধপরিকর কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy