সাংগঠনিক রদবদলের সঙ্গেই দল পরিচালনা ফের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজে নজরদারির মূল দায়িত্ব তাঁর হাতেই ছাড়লেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও ঠিক হয়েছে, ভোটের আগে দলের বক্তব্য গণমাধ্যমে তুলে ধরার কাজকর্মও পুরোপুরি দেখবে তাঁর দফতরই।
কয়েক দিন আগে জেলায় জেলায় দলীয় নেতৃত্বে রদবদল করেছে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে সোমবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বলেছেন, ‘‘যেখানে যে পরিবর্তন হয়েছে, তা নেত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) অনুমোদনেই হয়েছে। পরের ধাপে ব্লক ও টাউন স্তরে সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই রদবদল করা হবে।’’ দলীয় সূত্রে খবর, আগামী ২১ জুলাই, ধর্মতলায় দলের ‘শহিদ তর্পণে’র বার্ষিক কর্মসূচির আগেই এই গোটা প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে চাইছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত বছর ওই কর্মসূচির মঞ্চ থেকেই এই রদবদলের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন অভিযেক।
এ বারের রদবদলের পর দলের একাংশে যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, সেই সম্পর্কে অভিষেক এ দিন বলেন, ‘‘কার ক্ষমতা খর্ব হল, কার ক্ষমতা বাড়ল, এটা সেই রকম কোনও বিষয় নয়। কোথায় কে থাকবেন, তা ঠিক হয়েছে কাজের ভিত্তিতে।’’ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বদল সম্পর্কে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘অনেকে সাংসদ হয়েছেন, তাঁদের জেলা থেকে রাজ্য স্তরে নিয়ে আসা হয়েছে। দলে অনেকের ভূমিকা বদল হয়েছে।’’ সামগ্রিক ভাবে এই রদবদলের ফলে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তদের ‘দলের পুরস্কার’ হিসেবেই বর্ণনা করেছেন অভিষেক। পাশাপাশিই, পুলওয়ামার মতো পহেলগাম-কাণ্ড ও ‘অপারেশন সিঁদুরে’র পরে বিজেপির লাভ হবে কি না, এই প্রশ্নে দিল্লিতে অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘একটা বন্দুক থেকে এক বারে একটা গুলিই বেরোয়!’’
এই সময়ে দলের প্রচারের বিষয়টিও পুরোপুরি অভিষেকের হাতে এসেছে। বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমে দলের বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে বক্তা বাছাইয়ের ভার তাঁর দফতরের হাতেই দেওয়া হয়েছে। এত দিন পর্যন্ত এই কাজের ভার ছিল মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে। তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে যে, এ বার থেকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতেই দলের বক্তব্য চাইতে হবে সংশ্লিষ্ট সকলকে। অন্যথা হলে আইনি পদক্ষেপের কথাও এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তার জেরে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের আশঙ্কাও করা হচ্ছে কোনও কোনও মহল থেকে। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার অবশ্য বলেছেন, ‘‘যে কোনও বিষয়ে দলের বক্তব্য বা বক্তা স্থির করার দায়িত্ব তো দলের হাতেই থাকবে। সেখানে কেউ নিয়ম ভাঙলে দল পদক্ষেপের কথা ভাবতেই পারে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)