Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
100 Days Work Scheme

১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে ‘বান্ধবী’কে উপহার ১৭ লক্ষ? ইডির নজরে সেই চাকরি যাওয়া পঞ্চায়েতকর্মী

ইডির একটি সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে ১৭ লক্ষ টাকা এক মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠান বহরমপুরের প্রাক্তন পঞ্চায়েতকর্মী রথীন্দ্রনাথ দে। এ নিয়ে অভিযোগও দায়ের হয় রথীনের নামে।

Row over ED raid in alleged corruption in100 days work

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩৯
Share: Save:

ভোরের আলো ফোটার আগে রথীন্দ্রকুমার দে-র গোটা বাড়ি ঘিরে ফেলেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। বহরমপুরের বহিষ্কৃত পঞ্চায়েতকর্মীর বাড়িতে কড়া নেড়ে ঢোকার পর চলে টানা জিজ্ঞাসাবাদ। ইডির নজর এখন রথীনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তাঁর কাছ থেকে কোথায় কত টাকা গিয়েছে, তা নিয়ে টানা তল্লাশি চলছে। আর তাতেই সামনে এল এক ‘রহস্যময়ী’র খোঁজ। ইডির একটি সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে ১৭ লক্ষ টাকা এক মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠান রথীন। কে তিনি?

বস্তুত, শিক্ষক নিয়োগ, পুরসভায় কর্মী নিয়োগ, রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে অভিযানের পর এ বার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে জেলায় জেলায় অভিযানে নেমেছে ইডি। সংশ্লিষ্ট মামলায় পঞ্চায়েতের প্রাক্তন কর্মী রথীনকে ‘বড় মাথা’ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের টাকা তিনি পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘ট্রান্সফার’ করেছেন। ইডি সূত্রে খবর, ওই বহিষ্কৃত পঞ্চায়েতকর্মী এক মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৭ লক্ষের বেশি টাকা পাঠিয়েছিলেন। সেই মহিলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ঠিক কী, তা এখনও জানা যায়নি। তবে এটুকু জানা যাচ্ছে তিনি বহিষ্কৃত পঞ্চায়েতকর্মীর ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’।

২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র তৎকালীন পঞ্চায়েতকর্মী রথীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন। ১০০ দিনের কাজের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে বেলডাঙা-১ ব্লকের সুজাপুর-কুমারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এগজ়িকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট রথীনের নামে। বিডিও লিখিত অভিযোগে জানান, ১০০ দিনের কাজের টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যয় না করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে সরিয়েছেন রথীন। তার মধ্যে ১৭,০৭৪৫০ টাকা যায় এক মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ২০২০ সালে কোনও অজ্ঞাত কারণে এই মামলার তদন্তপ্রক্রিয়া ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে বেলডাঙা থানায় একটি এফআইআরের পর যে তদন্ত হয় তাতে চাকরি হারান রথীন। এ বার তাঁরই বাড়িতে চলছে ইডির হানা। পাশাপাশি ওই বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে মুর্শিদাবাদের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্চয়ন পানের বহরমপুরের ভাড়া বাড়িতেও পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা। সঞ্চয়ন আগে ছিলেন হুগলির ধনেখালির বিডিও। তাঁর সল্টলেকের বাড়িতেও হানা দেয় ইডির একটি দল। যদিও সঞ্চয়নকে তাঁর বাড়িতে পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছে ইডির একটি সূত্র। পরিবারের সদস্যরা ওই সরকারি আধিকারিককে বার বার ফোন করেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলে খবর।

রাজ্যে এই প্রথম ১০০ দিনের কাজে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। মুর্শিদাবাদ, কলকাতা ও ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে মোট চারটি জেলার ছয় জায়গায় চলছে ইডির হানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ED Raids Murshidbad Panchayat 100 days work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE