লক্ষ্য ২০২৬। তার আগে রাজ্য জুড়ে হিন্দুত্বের বাতাবরণকে পোক্ত করতে দু’দিনের সমন্বয় বৈঠকে বসতে চলেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। উপস্থিত থাকার কথা সঙ্ঘের সর্বভারতীয় স্তরের দুই নেতার। তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ওড়িশা, আন্দামান ও নিকোবর এবং সিকিম থেকেও প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন এই বৈঠকে।
সঙ্ঘ সূত্রের খবর, আজ, শনি ও কাল, রবিবার হাওড়ার উলুবেড়িয়ার তাঁতিবেড়িয়ায় পূর্ব ক্ষেত্র সমন্বয় বৈঠক হতে চলেছে। বৈঠকে ডাক পড়েছে সমমনোভাবাপন্ন ৫৭টি সংগঠনের। এর মধ্যে আছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ, বিদ্যা ভারতীর মতো সংগঠনগুলি। বিজেপি রাজনৈতিক দল হলেও তার সদস্য হয়েও যাঁরা সঙ্ঘের কাজ করেন, অতীতে করেছেন বা ভবিষ্যতে করার সুযোগ রয়েছে, তাঁদেরও ডাকা হয়েছে।
আপাত ভাবে বৈঠকটি স্বাভাবিক সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার অংশ মনে হলেও এর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ। পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ‘ইতিবাচক’ ফলের জন্য হিন্দু ভোটকে যে এককাট্টা করতে হবে, তা প্রকাশ্যেই বলছেন বিজেপি শীর্ষ নেতারা। সেই দিকে নজর রেখে হিন্দুত্বের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টাই করছে বিজেপি। বাংলাদেশের ঘটনার পরে সেই উদ্যম বেড়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব, বিশেষ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিয়ম করে হিন্দুত্বের পক্ষে আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন। সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে কিছু ঘটনায় সেই প্রচারের পালে হাওয়া লেগেছে। তাকে কাজে লাগিয়ে কী করে বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করা যায়, সেই পরিকল্পনা এই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে বিজেপির একাংশের দাবি।
সম্প্রতি প্রায় ১১ দিন রাজ্যে কাটিয়ে গিয়েছেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর সফরের অব্যবহিত পরেই এই সমন্বয় বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সমন্বয় বৈঠকে ডাক পাওয়া হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির ধর্মীয় ও সামাজিক নানা কাজকর্মকে কী ভাবে হিন্দুত্বের রাজনীতির পক্ষে ‘ইতিবাচক’ ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে, বৈঠকে সেই নীল নকশা তৈরি হতে পারে বলেও সূত্রের খবর। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ও সঙ্ঘের বোঝাপড়া যাতে ঠিক থাকে, সে দিকও নজর রাখার চেষ্টা হতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)