Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কী নেই প্রাথমিক স্কুলে, চাই তালিকা

রাজ্যের অধিকাংশ প্রাথমিক স্কুলই ভুগছে পরিকাঠামোর অভাবে। সেই ঘাটতি পূরণের জন্য অবশেষে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর। প্রথম ধাপে ওই দফতরের তরফে ডিআই বা জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছ থেকে স্কুলভিত্তিক প্রস্তাব চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

সুপ্রিয় তরফদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

কোথাও চেয়ার নেই তো কোথাও টেবিলের অভাব। দেওয়াল থেকে কোথাও পলেস্তারা খসে পড়ছে, কোথাও বা মিড-ডে মিলের জন্য আলাদা ঘর নেই। কোথাও স্কুলের ভিটে আছে, মাথার চাল শতচ্ছিন্ন।

রাজ্যের অধিকাংশ প্রাথমিক স্কুলই ভুগছে পরিকাঠামোর অভাবে। সেই ঘাটতি পূরণের জন্য অবশেষে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর। প্রথম ধাপে ওই দফতরের তরফে ডিআই বা জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছ থেকে স্কুলভিত্তিক প্রস্তাব চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, সম্প্রতি স্কুলশিক্ষ দফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কোন কোন স্কুলে চেয়ার-টেবিলের অভাব রয়েছে, দ্রুত সেই তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। যে-সব স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে, তারও তালিকা পাঠাতে হবে দফতরে। স্কুল পরিদর্শক (এসআই)-দের মাধ্যমে সেগুলো সংগ্রহ করবেন ডিআই। তার পরে স্কুল পরিদর্শনে যাবেন ডিআই-রা। শেষে সম্পূর্ণ তালিকা দফতরে পাঠাতে হবে। তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে দফতর।

এত দিন পরে এই উদ্যোগ কেন?

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, স্কুলে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না-থাকার অভিযোগ গত কয়েক বছরে বারবার উঠে এসেছে। শিক্ষার অধিকার আইন (২০০৯) অনুসারে একটি প্রাথমিক স্কুলে যে-সব ব্যবস্থা থাকার কথা, বহু স্কুলে সেই ব্যবস্থা নেই বলেই একাধিক রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে। তার মধ্যে সর্বশিক্ষা মিশনের রাজ্য-ভিত্তিক রিপোর্টে মুখ পুড়েছিল সরকারের। তাতে দেখা গিয়েছিল, শৌচালয় থেকে পাঁচিল, খেলার
মাঠ থেকে ক্লাসঘর— সর্বত্রই অভাবের ছাপ স্পষ্ট। মিড-ডে মিলের জন্য পৃথক ঘরও নেই। খাওয়ার আলাদা ঘর না-থাকায় স্কুলের মাঠে কুকুরের পাশে বসে মিড-ডে মিল খাচ্ছে খুদে পড়ুয়ারা— এই চিত্রও দেখা গিয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কয়েক মাস আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘‘মাঠেঘাটে বসে মিড-ডে মিল খেতে হলে এ রাজ্য থেকে আর কোনও জগদীশচন্দ্র বসু তৈরি হবে না।’’ তার পরেই জঙ্গলমহলের জন্য কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে স্কুলে খাওয়ার জন্য পৃথক ঘর তৈরি করা হয়। কিন্তু অন্যান্য জেলার স্কুলগুলি উপেক্ষিতই থেকে যায়। কয়েক মাস আগে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের কাছ থেকেও পরিকাঠামোর ঘাটতি পূরণের জন্য প্রস্তাব চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। এ বার প্রাথমিক স্কুল।

স্কুলশিক্ষা দফতরের অন্য এক কর্তা জানান, প্রস্তাব চাওয়া মানেই অবশ্য সংস্কার করা নয়। এই উদ্যোগের পিছনে রাজনীতিও দেখছেন শিক্ষক সংগঠনের একাংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের মতে, আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোটের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই জন্য এই ধরনের কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে চাইছে সরকার। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, পরিকাঠামোর অন্যান্য ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা বাড়ানোর দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE