E-Paper

যখন খুশি স্কুলে, শো-ক‌জ় ৫ শিক্ষককে

এসআই আরও জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁকে জানিয়েছেন, সরকারি স্কুলে নাম রয়েছে, এমন বহু পড়ুয়া আশপাশের বেসরকারি স্কুলে পড়ে। তারা নাকি সেই স্কুলে পাঠ শেষ করে দুপুরের পরে সরকারি স্কুলে আসে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:১৬
teacher.

—প্রতীকী ছবি।

স্কুলে পড়ুয়া ১,১০০ জন। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (এসআই) হঠাৎ স্কুলে হাজির হয়ে দেখলেন, উপস্থিত মোটে ৫৫ জন। স্কুল শুরুর সময় পেরোলেও তখনও হাজির হননি পাঁচ জন শিক্ষকের কেউই। ক্ষুব্ধ এসআই দীপান্বিতা কুণ্ডু পাঁচ শিক্ষককেই কারণ দর্শানোর (শোকজ়) নোটিস পাঠিয়েছেন। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা চক্রের শঙ্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবারের ঘটনা।

সূত্রের খবর, ওই দিন এসআই সকাল ১০টা বেজে ৫৫ মিনিটে স্কুলে হাজির হন। স্কুল শুরু হয় ১১টায়। প্রধান শিক্ষক মইমুর ইসলাম ঢোকেন ১১টা বেজে ১০ মিনিটে। আর এক শিক্ষক মিঠুন দাস (তিনি আবার ফরাক্কা চক্রে তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি) ঢোকেন বেলা ১১টা বেজে ২৫ মিনিটে। এর পর একে একে বাকি তিন শিক্ষক ও এক পার্শ্ব শিক্ষক স্কুলে ঢোকেন। ক্ষুব্ধ এসআই এ দিন বলেন, ‘‘শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে চলল। অথচ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা ঠিকমতো ‘রিডিং’ পড়তে পারছে না। লেখা তো দূরের কথা। পাঠ্যক্রম সম্পর্কে তাদের কোনও ধারণা নেই। প্রাক-প্রাথমিকের পড়ুয়ারা বাংলা সংখ্যা ১ থেকে ১০ লিখতে এবং পড়তে পারে না। ইংরেজি সংখ্যা চেনেই না। এক কথায়, গুরুতর পরিস্থিতি। আমি শিক্ষকদের কাছে লিখিত ভাবে এর কারণ জানতে চেয়েছি।’’

এসআই আরও জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁকে জানিয়েছেন, সরকারি স্কুলে নাম রয়েছে, এমন বহু পড়ুয়া আশপাশের বেসরকারি স্কুলে পড়ে। তারা নাকি সেই স্কুলে পাঠ শেষ করে দুপুরের পরে সরকারি স্কুলে আসে। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘শিক্ষকেরা এ সব বেনিয়মের কী উত্তর দেন, সেটাই দেখতে চাই।’’ আগামী ৯ নভেম্বরের মধ্যে তাঁদের উত্তর দিতে হবে।

প্রধান শিক্ষক মাইমুর ইসলাম শো-কজ়ের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে তৃণমূলের শিক্ষক সমিতির নেতা মিঠুন বলেন,‘‘ওই দিন স্কুলে পোশাক বণ্টনের দিন ছিল। এসআই আসার খবর পেয়ে প্রায় আড়াইশো পড়ুয়া পরে হাজির হয়। দুপুর ২টোয় উপস্থিতি ৭০০ ছাড়িয়ে যায়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্কুলে গড়ে রোজ ৬০০ জনেরও বেশি পড়ুয়া হাজির হয়।’’

তৃণমূলের ফরাক্কা ব্লকের সভাপতি অরুণময় দাস বলেন, ‘‘পরিদর্শনের দিন যত ছাত্র উপস্থিতি নজরে পড়বে, সেই স্কুলকে সেই অনুযায়ী মিড-ডে মিলের টাকা দিতে বলা হয়েছে বিডিও-কে। শিক্ষকেরা আসবেন বেলা ১২টায়, ছাত্ররা স্কুলে আসবে ২টোয়, এটা চলতে পারে না।’’ তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি মইনুল হক বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা যখন খুশি স্কুলে যাচ্ছেন। এই অব্যবস্থা চলতে পারে না। তৃণমূল করলে সাত খুন মাফ, কেউ যেন তা মনে না করেন।’’

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি আশিস মার্জিতের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ফরাক্কার স্কুলে কী ঘটেছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Teachers Murshidabad

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy