Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা ভবানীপুরে এসআইআরে উধাও পদ্মশিবির! তৃণমূলের কটাক্ষে ‘কৌশল’ বলে অজুহাত দিচ্ছে প্রধান বিরোধীদল

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে যেখানে তাঁর কেন্দ্রে হারানোর কথা বলছেন, সেখানে ভবানীপুর বিধানসভার বিজেপি নেতা-কর্মীরা কেন এসআইআর নিয়ে নিজেদের দায়িত্ব প্রসঙ্গে উদাসীন?

অমিত রায়

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:০২
mamata banerjee

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) প্রক্রিয়া চলছে রাজ্য জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরেও এই কাজ চলছে জোরকদমে। উল্লেখযোগ্য ভাবে ভবানীপুরের এসআইআর প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে না বিজেপির, এমনটাই অভিযোগ নিচুতলার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর কেন্দ্রে হারানোর কথা বলছেন, সেখানে ভবানীপুর বিধানসভার বিজেপি নেতা-কর্মীরা কেন এসআইআর নিয়ে নিজেদের দায়িত্ব প্রসঙ্গে উদাসীন?

কলকাতা পুরসভার আটটি ওয়ার্ড নিয়ে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র। ৬৩, ৭০ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ভবানীপুর বিধানসভার বিজেপির মণ্ডল-১। ৭১, ৭৩ ও ৮২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে মণ্ডল-২। ৭৪ ও ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ভবানীপুর মণ্ডল-৩। এই তিনটি মণ্ডলেই এসআইআর নিয়ে বেহাল দশা বিজেপি নেতৃত্বের। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির এলাকাধীন মণ্ডল-২-এর। ভবানীপুর মণ্ডল-২-এর তিনটি ওয়ার্ডে এসআইআর প্রক্রিয়ার সময় অংশগ্রহণ করেননি বিজেপির কোনও বিএলএ, এমনটাই অভিযোগ ভবানীপুর পদ্মের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের। তবে বিজেপির অন্য অংশের কথায়, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার দিন রাতে যে ভাবে শাসকদলের হাতে ভবানীপুরে বিজেপি কর্মীরা ‘আক্রান্ত’ হয়েছিলেন, একই সঙ্গে হরিশ পার্কের বিপরীতে বিজেপির মণ্ডল-২-এর অফিসে যে ভাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা এখনও ভোলেননি এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তাই এসআইআর প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করতে ইতস্তত করছেন পদ্মকর্মীরা।

কেন তাঁদের নেতা-কর্মীরা ভবানীপুর বিধানসভার এসআইআর প্রক্রিয়ায় যোগ দিচ্ছেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে পেতে বিজেপির ভবানীপুর মণ্ডল-২-এর সভাপতি শিবসাগর যাদবের মোবাইলে ফোন করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত সুইচড অফ থেকেছে তাঁর ফোন। ভবানীপুর মণ্ডল ২-এর এক বিজেপি কর্মী জানাচ্ছেন, ৪ নভেম্বর, যে দিন রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়ার সূচনা হয়, সে দিনও মণ্ডল সভাপতি ছিলেন কলকাতার বাইরে। তবে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ খটিক বলেন, ‘‘আমরা ভবানীপুর বিধানসভার এসআইআর প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছি না, এ কথা ঠিক নয়। ভোটারদের সাহায্যের জন্য ইতিমধ্যে হেল্পলাইন নম্বর চালু করে দিয়েছি, যার মাধ্যমে ভবানীপুরের ভোটাররা নিজেদের সমস্যার কথা আমাদের জানাচ্ছেন। আমরা সেইমতো তাদের সাহায্য করছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আসলে বিজেপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলে ভবানীপুরের ভোটারদের উপর শাসকদলের সন্ত্রাস নেমে আসতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই আমরা কিছুটা পিছন থেকে সব কিছু পরিচালনা করছি, যাতে ভোটাররাও নিরাপদ থাকেন, এবং গোটা প্রক্রিয়াও মসৃণ ভাবে হতে পারে। এটা আমাদের কৌশলগত সিদ্ধান্ত।’’

তবে ভয়ভীতি বা ভোটারদের উপর তৃণমূলের চাপের কথা অস্বীকার করছেন ৭১ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের সভাপতি বাবুল সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির কোনও সংগঠন থাকলে তবেই তো তারা এসআইআর প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে আসবে। ভবানীপুরে বেশ কয়েকটি জায়গায় সিপিএম এসআইআর-এর ক্যাম্প করেছে। বাধা দেওয়ার থাকলে আমরা সেখানেও বাধা দিতে পারতাম। কিন্তু অন্য দল কী করছে, সে বিষয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। দল আমাদের এসআইআর প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভাবে যোগ দিতে বলেছে, আমরা সেই কাজেই ব্যস্ত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গোটা বিধানসভা এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিতে পারেন, সেখানে কোনও সন্ত্রাসের পরিবেশ রয়েছে কি না। এখন এসআইআর-এর শেষ মুহূর্তে বিজেপি কিছু ভাড়াটে লোক জোগাড় করেছে, যাঁরা নির্বাচন কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তির পরে নিজেদের নথিপত্রে বিএলও-দের স্বাক্ষর করাতে আসছেন। এ ক্ষেত্রে আপনারা আমাদের সঙ্গে নয়, সরাসরি বিএলও-দের সঙ্গে কথা বলুন, তা হলেই জানতে পারবেন ভবানীপুর বিধানসভায় বিজেপির এসআইআর নিয়ে সক্রিয়তা কতটা রয়েছে।’’

Mamata Banerjee Bhabanipur SIR
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy