সন্ধ্যামাঠপাড়ায় বিজেপির জনসভার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
জনসভার মাঠ পাওয়া নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তা গড়াল হেলিপ্যাড পর্যন্ত। বিজেপির অভিযোগ, তাদের নেতানেত্রীদের হেলিকপ্টার নামার জায়গা পেতেও বাধা দিচ্ছে তৃণমূল এবং তাদের অনুগত জেলা প্রশাসন। যদিও এই অভিযোগ মানতে রাজি নন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
এই চাপানউতোরের মধ্যেই বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর শহরের তিন কিলোমিটার বাইরে সন্ধ্যামাঠপাড়ায় হতে চলেছে বিজেপির জনসভা। যে সভায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের আসার কথা থাকলেও তা ভেস্তে গিয়েছে। তাঁর বদলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি আসছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। থাকতে পারেন একাধিক রাজ্য় ও কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাও। একই দিনে, বিজেপির সভাস্থল কিলোমিটার পাঁচেক দূরে কৃষ্ণনগর শহরের ঘূর্ণিতে ওই মহকুমার বুথ স্তরের সভাপতিদের নিয়ে কর্মিসভা করতে আসছেন তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডল। সঙ্গে থাকবেন জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তও। দু’পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে বুধবার থেকেই দুই দলের কর্মীদের মধ্যে উত্তজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে।
তার মধ্যেই হেলিকপ্টার নামার জায়গা নিয়ে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিজেপির আনা অসহযোগিতার অভিযোগ বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। মরিয়া হয়ে বিএসএফ এবং ইসকনের কাছে হেলিপ্যাড চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি। বুধবার রাতের খবর, ইসকন মায়াপুরে হেলিকপ্টার নামার জায়গা দিতে রাজি হয়েছে। সেখান থেকে সড়পথে নেতানেত্রীদের সভাস্থলে আনা হবে।
বিজেপির অভিযোগ, প্রথমে তারা জাহাঙ্গিরপুরে সরকারি হেলিপ্যাডের জন্য আবেদন করেছিল। তা না মেলায় সন্ধ্যামাঠপাড়ার কাছে পোড়াগাছা এলাকায় একটি মাঠ দেখা হয়। কিন্তু সেখান দিয়ে বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে এই অছিলায় অনুমতি দেওয়া হয়নি।
জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘জাহাঙ্গিরপুরে হেলিপ্যাড সংস্কারের কাজ চলছে। পোড়াগাছায় হেলিপ্যাড করার জন্য ওঁরা যে জমির কথা বলছেন, তার পাশ দিয়ে হাইটেনশন তার গিয়েছে। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেই অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
তবে বিজেপির উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, “জাহাঙ্গিরপুরে হেলিপ্যাডে সংস্কারের কাজ চলছে, এটা ঠিক কথা নয়। ওঁরা দেবেন না বলেই এমনটা বলছেন। আর পোড়াগাছার মাঠে যে বিদ্যুতের তারের কথা বলা হচ্ছে, তা অনেক দূর থেকে গিয়েছে। কপ্টার নামলে কিছু হত না।” তাঁর অভিযোগ, “আমাদের নিয়ে তৃণমূল আতঙ্কিত। তাই ওরা প্রশাসনকে চাপ দিয়েছে যাতে আমরা হেলিপ্যাড না পাই।”
এর আগে জনসভা মাঠ পাওয়া নিয়েও বিজেপিকে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। কৃষ্ণনগর শহরে গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠ, কারবালার মাঠ বা শক্তিমন্দির মাঠ তারা পায়নি। শেষে নিজেদের দখলে থাকা পোড়াগাছা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সন্ধ্যামাঠপাড়ায় সভা করছে তারা। সে ক্ষেত্রেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ এনেছিল বিজেপি, হেলিপ্যাডের ক্ষেত্রেও তা-ই।
যদিও এই অভিযোগ হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। তাঁর দাবি, “অন্য নেতার কথা বলছি না। এই জেলায় খোদ অমিত শাহ যে মাঠে জনসভা করবেন, বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে সেই মাঠেই শুধু আমি একা সভা করলে ওদের চেয়ে বেশি লোক আসবে। তাই আমাদের ও সব করার প্রয়োজন পড়ে না।”
বিজেপি সূত্রের খবর, দুপুর ১টা থেকে শুরু হওয়া ওই সভায় স্মৃতি ইরানি ছাড়াও রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের মতো একাধিক নেতা সভায় হাজির থাকতে পারেন। প্রায় একই সময়ে শুরু হচ্ছে তৃণমূলের কর্মিসভাও। ফলে শক্তির পাঞ্জা কষা চলবেই, সন্দেহ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy