Advertisement
E-Paper

দশক পেরিয়ে বর্ষশেষে বরফ দার্জিলিঙে, কলকাতাতেও শীতলতম দিন

উত্তরবঙ্গের লাভা, রিশপ, রামধুরায় শুক্রবার পড়ল বরফ। সান্দাকফুতেও হয়েছে তুষারপাত। সিকিম ও উত্তরবঙ্গের অনেক জায়গারই তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে শূন্যের নীচে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:০৭
বরফে ঢাকা রাবাংলা।

বরফে ঢাকা রাবাংলা।

পাহাড় ঢেকে গিয়েছে বরফে। ঝির ঝির করে পড়ছে তুষারগুঁড়ো। একইসঙ্গে কলকাতাও কাঁপছে। শহরে আজ মরসুমের শীতলতম দিন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তও কার্যত জবুথবু হয়ে গিয়েছে ঠান্ডায়।

হাড়কাঁপানো ঠান্ডা পড়েছে পাহাড়ে। সঙ্গে বরফ। কাঁপছে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সিকিমও। শুক্রবার বরফ পড়ে কালিম্পং জেলার লাভা, রিষপ,রামধুরাতেও।পর্যটকরা বরফ যেমন উপভোগ করছেন, তেমন ঠান্ডায় কষ্টও পাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা থেকে হাওয়া অফিসের কর্তা— সকলেই বলছেন, প্রায় এক দশক পরে শেষ ডিসেম্বরে বরফ পড়ল শহর দার্জিলিঙে। যদিও শহরের বাইরে, টাইগার হিল বা সান্দাকফুর মতো উঁচু এলাকায় ফি-শীতেই তুষারপাত হয়। শুক্রবার বিকেলে ঝিরিঝিরি তুষারপাত শুরু হয় শহর জুড়ে। দার্জিলিঙে ২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিপুল তুষারপাত হয়েছিল। শহর ও লাগোয়া এলাকা মুড়ে গিয়েছিল বরফের চাদরে। ২০০৮ সালের ২৬ জানুয়ারি দার্জিলিং শহরে অল্প সময়ের জন্য ঝিরিঝিরি বরফ পড়েছিল। তার পর থেকে প্রতি বছর টাইগার হিল, সান্দাকফুতে তুষারপাত হলেও দার্জিলিং শহর প্রকৃতির সেই প্রসাদ পায়নি। শীতে যে-সব পর্যটক হোটেলবন্দি হয়ে পড়েছিলেন, এ দিন মূল শহরেও বরফ দেখে তাঁদের অনেকেই নেমে পড়েন রাস্তায়।

উত্তরবঙ্গের লাভা, রিষপে সকাল থেকেই ছিল ঝিরঝিরে বৃষ্টি। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। রিষপে পড়ে বরফও। সোনাদা এবং রামধুরা সাদা চাদরে ঢেকে যায়। উত্তর সিকিমের লাচেন-লাচুংয়েও বরফ পড়েছে এ দিন। বরফ পড়েছে সিকিমের গ্যাংটকে। বরফের জন্য রাস্তা অনেকটাই ঢেকে গিয়েছে বরফে। পশ্চিমবঙ্গের সান্দাকফুতেও হয়েছে তুষারপাত। দার্জিলিঙের পেডং এবং ঘুমেও বরফ পড়েছে। কাঁপছে দার্জিলিংও। সিকিম এবং দার্জিলিঙের অনেক জায়গাতেই তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে শূন্যের নীচে।

পূর্ব সিকিমের নাথুলায় এখন যেমন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।সান্দাকফুতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুব একটা পিছিয়ে নেই দার্জিলিং। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা এমনই থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে, জীবনযাত্রা আরও কঠিন হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। বরফে রাস্তার অনেকটা ঢেকে যাওয়ায় রাতে যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। সিকিমের লাচেন, লাচুং, নাথু লা, ছাঙ্গুতে জোর তুষারপাতের ফলে প্রায় ৪০০ পর্যটক আটকে পড়েছেন। সিকিম পূর্বের জেলাশাসক কপিল মিনা জানান, পর্যটকদের চোদ্দো মাইলের ফৌজি ছাউনিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। জওয়ানেরা রাস্তার বরফ সরানোর পরে আজ, শনিবার তাঁদের গ্যাংটকে পৌঁছে দেওয়া হবে। আজ পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তর সিকিমে ভারী তুষারপাত হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।

অন্য দিকে, শুক্রবার একধাক্কায় কলকাতার তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১১.২ ডিগ্রিতে। স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৩ ডিগ্রি কম। গত ছ’বছরে ডিসেম্বর মাসে তিলোত্তমার তাপমাত্রা এত নীচে কখনও নামেনি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ২০১৫ সালে আজকের দিনে কলকাতার তাপমাত্রা ছিল ১১.৩ ডিগ্রি।

তাপমাত্রা নীচে নামার পূর্বাভাস অবশ্য মিলেছিল আগেই। বড়দিনে তাপমাত্রা ছিল ১২.৯ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি কম। বুধবার তা নেমে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি কমে ১২তে পৌঁছয়। বৃহস্পতিবার আরও নীচে নেমে তাপমাত্রা দাঁড়ায় ১১.৫ ডিগ্রি।কলকাতার পাশপাশি রাজ্যের জেলাগুলিতেও তাপমাত্রা নীচে নেমে গিয়েছে। শুক্রবার বর্ধমানের তাপমাত্রা ছিল ৯.৬ ডিগ্রি, বাঁকুড়ায় ১০ ডিগ্রি, ক্যানিংয়ে ৯ ডিগ্রি ছিল। ওইদিন পানাগড়, পুরুলিয়া, শ্রীনিকেতন এবং হাওড়ার তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭.৭, ৯, ৮.১ এবং ১০.৬ ডিগ্রি। গত পাঁচ বছরের মধ্যে কলকাতায় সব থেকে বেশি ঠান্ডা প়ড়েছিল ২০১৪-র ২৬ ডিসেম্বর। তাপমাত্রা নেমেছিল ১১.৪ ডিগ্রিতে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, শুধু কলকাতা নয়, গোটা বাংলাই এখন জোরদার শীতের দখলে। আবহবিদদের মতে, এ বছর জোরদার উত্তুরে হাওয়া বইছে অবাধে। কারণ, তাকে বাধা দিতে পারে, বঙ্গোপসাগরের এমন কোনও দখিনা জোলো হাওয়া নেই। তাঁদের পূর্বাভাস, তাপমাত্রা আপাতত আর খুব বেশি নামবে না। তবে বর্ষশেষ ও বর্ষবরণে শীতের দাপট অটুট থাকবে।

(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর জানতে পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগ।)

Snowfall Weather NorthBengal Sikkim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy