Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Recruitment Case

নিয়োগ ‘অবৈধ’ প্রমাণ হলে চাকরি ছেড়ে বেরিয়ে যাব, আদালতে হুঁশিয়ারি দিলেন ‘বিতর্কিত’ চাকরিপ্রাপকেরা

সওয়াল করে ‘বিতর্কিত চাকরিপ্রাপক’দের আইনজীবী জানান, যাঁরা টাকা দিয়েছেন এবং যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তাঁরাই এই দুর্নীতির পরিচালক। চাকরিপ্রাপকেরা কেন ভুক্তভোগী হবেন।

image of ssc candidates

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:১৯
Share: Save:

তাঁদের নিয়োগ ‘অবৈধ’— এটা প্রমাণ হলে চাকরি ছেড়ে বেরিয়ে যাবেন। হাই কোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগ মামলার শুনানিতে জানিয়ে দিলেন ‘বিতর্কিত চাকরিপ্রাপক’দের আইনজীবী। ওই প্রাপকদের চাকরি কেন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। এ কারণে কর্মক্ষেত্রে তাঁরা অপমানের স্বীকার হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন ওই চাকরিপ্রাপকেরা।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসএসসির চাকরি হারিয়েছিলেন বহু জন। অভিযোগ উঠেছিল, ‘বেআইনি ভাবে’ চাকরি পেয়েছেন তাঁরা। পরে বিচারপতির নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টে এসএসসির ২০০টির বেশি মামলার শুনানি চলছে। বৃহস্পতিবার তার শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন তোলেন, ‘‘নিয়োগ অবৈধ হলে কি বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে?’’ তার পরেই ‘বিতর্কিত চাকরিপ্রাপক’দের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, ‘‘আমাদের নিয়োগ অবৈধ প্রমাণ হলে অবিলম্বে চাকরি ছেড়ে বেরিয়ে যাব।’’ তিনি এ-ও দাবি করেন, কিছু ‘গন্ডগোল’ নিশ্চয়ই হয়েছিল। কিন্তু ওই চাকরিপ্রাপকেরা তা করেননি।

এই প্রসঙ্গে দিল্লি থেকে ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) মেলার কথাও তুলেছেন আইনজীবী। তিনি জানান, নাইসা (ওএমআর শিট প্রস্তুতকারী)-র আধিকারিকেরা নয়ডা থেকে আসেন। এখান থেকে ওএমআরশিট নিয়ে আবার নয়ডা চলে যান। মূল্যায়ন করেন, ওএমআর শিট স্ক্যান করেন, তালিকা তৈরি করে এসএসসিকে পাঠান। তাঁর সওয়াল, ‘‘কলকাতা থেকে নয়ডা পর্যন্ত ওএমআর শিট কি স্কুল সার্ভিস কমিশনের নজরদারিতে গিয়েছিল?’’ তার পরেই তিনি আদালতে দাবি করেন, ‘‘কিছু একটা হয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন হল যে, কখন হয়েছে এবং কারা দায়ী? পঙ্কজ বনসলের নাম উঠে আসছে। কে এই পঙ্কজ বনশল? হঠাৎ করে এলেন এবং সিবিআইকে হার্ড ডিস্ক দিয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেন!’’ তার পরেই তিনি মক্কেলদের হয়ে বলেন, ‘‘আমরা যোগ্য ব্যক্তি। যোগ্যতা নির্ধারণ করেই আমাদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তার পর হঠাৎ করে এই দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করল। আমাদের চাকরি কেড়ে নেওয়া হল। আমরা কি অন্যায় করেছি? আমরা কি দুর্নীতি করেছি? আমরা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হব?’’

বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনাদের মতো বহু যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁরা সকলে চাকরি পাননি। যদি দেখা যায় যে, নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা রয়েছে এবং তার সুবিধাভোগী আপনারাই, তা হলে কী হবে?’’ সওয়াল করে ‘বিতর্কিত চাকরিপ্রাপক’দের আইনজীবী জানান, যাঁরা টাকা দিয়েছেন এবং যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তাঁরাই এই দুর্নীতির পরিচালক। চাকরিপ্রাপকেরা কেন ভুক্তভোগী হবেন। তিনি সওয়াল করে বলেন, ‘‘আমরা সকলে স্কুলে পড়াতাম, হঠাৎ করে চাকরি চলে গেল। সামাজিক ভাবে আমরা অপমানের শিকার হলাম। কর্মস্থলে আমাদের সম্মানহানি হল।’’ এর পরেই ‘বিতর্কিত চাকরিপ্রাপক’রা জানিয়েছেন, দোষ প্রমাণ হলে চাকরি ছাড়বেন। শুক্রবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Recruitment Case Calcutta High Court SSC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE