E-Paper

এক থালায় খাওয়া কেন, তদন্তের নির্দেশ

বন্ধুত্বের এমন একটি ছবি যখন মানুষের মনে তোলপাড় ফেলেছে, তখন হঠাৎ শিক্ষা দফতরের এই তদন্তের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৬
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

এক থালায় দুই বালক-বন্ধুর মিড ডে মিল খাওয়ার ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিল শিক্ষা দফতর। মালদহের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) মলয় মণ্ডল বুধবার মোথাবাড়ি চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (এসআই) অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই নির্দেশ দিয়েছেন।

সম্প্রতি মোথাবাড়ির অলিটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সোলেমান শেখ এবং সন্দীপ সাহার এক থালায় মিড ডে মিল খাওয়ার ভিডিয়ো দ্বিতীয় দফায় ছড়ায় সমাজমাধ্যমে। মাস আটেক আগে তারা যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে, স্কুলে দুই বন্ধুর মিড ডে মিল খাওয়ার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দিয়েছিলেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম। মোথাবাড়ি, মুর্শিদাবাদে অস্থিরতার আবহে সে ভিডিয়োটি ফের সমাজমাধ্যমে দেন তিনি। রবিউল বলেন, “সম্প্রীতির বার্তা হিসাবে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করি। অন্য উদ্দেশ্য ছিল না।’’

বন্ধুত্বের এমন একটি ছবি যখন মানুষের মনে তোলপাড় ফেলেছে, তখন হঠাৎ শিক্ষা দফতরের এই তদন্তের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। দফতরের এক কর্তার দাবি, মিড ডে মিলের জন্য স্কুলে বাচ্চাদের আলাদা থালা-বাটি থাকে। কোনও কারণে তা কম থাকলে, বাচ্চাদের বাড়ি থেকে সে সব আনতে বলা হয়। তাই একসঙ্গে একই থালায় খাওয়ার প্রশ্ন নেই। সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের বাচ্চাদের পাশাপাশি বসে খাওয়ার মধ্যেই সম্প্রীতির ছবি ফুটে ওঠে।

তা হলে রিপোর্ট চাওয়া হল কেন? বিদ্যালয় পরিদর্শক মলয় মণ্ডল বলেন, ‘‘কী উদ্দেশ্যে ভিডিয়োটি করা হয়েছিল, স্কুলে মিড ডে মিলের পরিকাঠামো কেমন, খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ রেজাবুল হোসেন জানান, স্কুলে মিড ডে মিলের জন্য রান্নাঘর, ‘ডাইনিং রুম’, প্রত্যেক বাচ্চার জন্য আলাদা থালা রয়েছে। তবে অনেকে খেতে বসে খাবার ভাগাভাগি করে খায়। শিক্ষা দফতরকে সব জানানো হবে।

‘ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ়, কলকাতার’ অধ্যাপক অচিন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ছোটরা অনেক সময়েই খাবার ভাগ করে খায়। শিক্ষা দফতর খোঁজ করে দেখতেই পারে, স্কুলে পর্যাপ্ত সংখ্যায় থালা, বাসন আছে কি না! কিন্তু সব কিছু নিয়মের নিগড়ে বাঁধলে বোধ হয়, স্বতঃস্ফূর্ততা মার খায়। এ সব নিয়ে বেশি কড়াকড়ি হলে শিক্ষকেরাও সারা ক্ষণ উৎকণ্ঠায় আড়ষ্ট থাকবেন। সেটা ভাল হবে না। কয়েকটি ক্ষেত্রে স্কুলের বাচ্চাদের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিলেই মনে হয়
ভাল হয়।’’

সমাজমাধ্যমে কেউ কেউ এক থালায় খাওয়ার স্বাস্থ্যগত দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অচিনের দাবি, ‘‘শুধু এক থালায় খাওয়ার উপরেই স্বাস্থ্যের বিষয়টি নির্ভর করে না। স্বাস্থ্যহানির সঙ্গে রান্না এবং আরও নানা দিক জড়িয়ে থাকে। নিয়মের বাঁধুনিতে ঘটনাটিকে মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া, মনে হয়, ঠিক নয়।’’

গুরুত্ব দিচ্ছেও না মোথাবাড়ির বাঙিটোলা ফিল্ডপাড়ার বাসিন্দা সন্দীপ এবং সোলেমান। তারা বৃহস্পতিবারেও বলেছে, ‘‘আমরা একসঙ্গে স্কুলে যাই। একসঙ্গে যাব। খাবারও ভাগাভাগি করেই খাব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mothabari

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy