Advertisement
E-Paper

পাশের পরেও পরীক্ষা! চিন্তায় বহু ছাত্রছাত্রী

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২০ ০৫:২৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পাশ করে কেউ কেউ চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। কেউ বা পাশ করে আরও উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করছেন। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা দিতেই হবে বলে নির্দেশ দেওয়ায় অনেকেই দিশাহারা।

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

রাজ্যের যে-সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত সিমেস্টারের ফল বেরিয়ে গিয়েছে, বিশেষ করে সেখানকার পড়ুয়ারা প্রবল উৎকণ্ঠায়। তাঁদের অনেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং বা পেশাগত অন্য পাঠ্যক্রম পাশ করে চাকরিতে ঢুকেছেন। প্রশ্ন উঠছে, চাকরি করতে করতে আবার পড়াশোনা করে তাঁরা কী ভাবে পরীক্ষায় বসবেন? যাঁরা ডিগ্রি পেয়ে উচ্চশিক্ষার কথা ভাবছেন, তাঁদেরও ফের পরীক্ষা দিতে হবে কি? অনেক পড়ুয়াই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহু দূরে থাকেন। পরীক্ষা দিতে হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কী ভাবে আসবেন? কোথায় থাকবেন? স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে হস্টেল খোলা হবে কি? অনলাইনে পরীক্ষা হলে যাঁদের স্মার্টফোন বা দ্রুত গতির ইন্টারনেট নেই, কী হবে তাঁদের?

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ছাত্র সংসদের চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদারের বক্তব্য, লকডাউন শুরুর সময় রাজ্যে হাতেগোনা করোনা রোগী ছিলেন। এখন সংক্রমণ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। কী করে পরীক্ষা নেওয়া হবে? অনলাইনে পরীক্ষা হলে সকলের দ্রুত গতির ইন্টারনেট পরিষেবা এবং স্মার্টফোন আছে কি না, আগে তা নিশ্চিত করা উচিত ইউজিসি-র। যাদবপুরে ইলেকট্রনিক্স স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত সিমেস্টারের ফল বেরিয়ে গিয়েছে। ওই সিমেস্টারের ছাত্র সম্ভব চাকী ফল প্রকাশের পরে পিএইচ ডি করার তোড়জোড় করছিলেন। আবার পরীক্ষায় বসতে হবে কি না, বুঝতে পারছেন না তিনি। সম্ভবের বাড়ি মেদিনীপুরে। বললেন, ‘‘পরীক্ষা দিতে হলে হস্টেলে থাকতে হবে। সেই ব্যবস্থা এই পরিস্থিতিতে হবে কী করে?’’ স্নাতকোত্তর বাংলা চূড়ান্ত সিমেস্টারের ছাত্র দেবরাজ দেবনাথ বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় মূল্যায়ন করে আমাদেরও ফল প্রকাশ করেছে। আর পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার আছে।’’

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের (ইতিহাস) চূড়ান্ত সিমেস্টারের ছাত্র দেবনীল পালেরও ফল বেরিয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘যে-পদ্ধতিতে আমাদের মূল্যায়ন হয়েছে, তার সঙ্গে ইউজিসি-র সর্বশেষ নির্দেশের খুব একটা পার্থক্য নেই। কিন্তু ফের পরীক্ষা দিতে হবে কি না, বুঝতে পারছি না।’’ এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানানো হবে।’’

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বভারতীয় সংগঠন এআইফুকটো-র সভাপতি এবং ওয়েবকুটা-র সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই নির্দেশ খুবই দুর্ভাগ্যজনক। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা না-ভেবে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করাটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করা হোক।’’ সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক তরুন নস্করের বক্তব্য, পুরো বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হল। রাজ্য সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার চান, ইউজিসি-র ২৯ এপ্রিলের নির্দেশিকা মেনে যে-সব বিশ্ববিদ্যালয় ফল প্রকাশ করেছে, তাদের ফলাফলকে যেন মান্যতা দেওয়া হয়। অবিলম্বে সেন্ট্রাল অ্যাডভাইজ়রি বোর্ড অব এডুকেশনের বৈঠক ডেকে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘কারা পড়বেন, কারাই বা পড়াবেন, কী ভাবে মূল্যায়ন হবে ইত্যাদি স্থির করার অধিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতেই থাকা উচিত।’’

Supreme Court Of India Students Examination Coronavirus in India Partha Chatterjee Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy