কলকাতা-যাদবপুরের মতো রাজ্যের ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের মধ্যে মতভেদ হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতকে যোগ্যতার ক্রমানুসারে তিন জনের নামের তালিকা সাজিয়ে দিতে বলল।
এর বাইরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের তালিকায় প্রথম প্রার্থীদেরই নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রবীন্দ্রভারতীর ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের তালিকায় সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রথমে ছিল। তিনি ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছেন বলে রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস আপত্তি তুলেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সোনালী চাইলে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইস্তফা দিয়ে রবীন্দ্রভারতীতে যোগ দিতে পারেন। কোচবিহারের ক্ষেত্রে আচার্য কোনও মত জানাননি। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের তালিকায় প্রথম নাম থাকা সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়কে নিয়োগ করা হবে।
সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পরে রাজ্যের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টিতে উপাচার্য নিয়োগ হলেও ১৭টিতে জট ছিল। আজ দু’টিতে জট কেটেছে। উপাচার্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের জেরে মতান্তরের জেরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে ‘সার্চ ও সিলেকশন’ কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল। নির্দেশ ছিল, কমিটি তিন জনের নাম বেছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেদের পছন্দের ক্রমানুসারে নামের তালিকা সাজিয়ে রাজ্যপালের কাছে পাঠাবেন। রাজ্যপাল ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টি-তে মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তির নামে সায় দিয়েছেন। বাকি ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তৃতীয় ব্যক্তিতে সায় দিয়েছেন। আজ সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যপালের হয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণি বলেন, রাজ্যপাল মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই মত দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ রায় দিয়েছে,ললিতের কমিটি এ বার উপাচার্য পদে প্রার্থীর নাম যোগ্যতার ক্রমানুসারে সাজিয়ে আদালতকেদেবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মতামতও খতিয়ে দেখবে কমিটি। চার সপ্তাহ পরে এই মামলার ফেরশুনানি হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)