বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
১.৯৪ লক্ষ কোটি খরচের হিসাব দেয়নি নবান্ন। মমতা সরকারের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ এনে সম্প্রতি রিপোর্ট পেশ করেছে সিএজি (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া)। যদিও সেই অভিযোগ পত্রপাঠ অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার। এ বার বিধানসভাতেও সেই রিপোর্টের প্রসঙ্গ তুলে হইচই রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির।
সিএজি রিপোর্টে রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে আলোচনার দাবিতে মঙ্গলবার বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব জমা দেন বিজেপির পরিষদীয় দল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং মনোজ ওঁরাও ও শঙ্কর ঘোষ-সহ বিজেপির মোট ছ’জন বিধায়ক সেই মুলতুবি প্রস্তাব জমা দেন। পাশাপাশি, সিএজি রিপোর্ট নিয়ে তদন্তের দাবিও তোলেন তাঁরা। যদিও আলোচনার অনুমতি দেননি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর পরেই সরব হন রাজ্যের পদ্মশিবিরের বিধায়কেরা। বিধানসভা কক্ষের অন্দরেই সরকার বিরোধী স্লোগান তোলেন তাঁরা। ‘চোর চোর’ স্লোগানও তোলা হয়। বিধানসভা কক্ষে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হলে স্পিকার বলেন, ‘‘রাজ্যসভা লোকসভার মতো আমি কাউকে সাসপেন্ড করব না।’’ প্রসঙ্গত, গত বছর সংসদে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন হট্টগোলের জেরে দুই কক্ষ মিলিয়ে সাসপেনশনের মুখে পড়েন মোট ১৪১ জন বিরোধী সাংসদ। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, মঙ্গলবার বিজেপি বিধায়কদের হইচইয়ের পর সেই প্রসঙ্গই তুলে এনেছেন স্পিকার।
তবে মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা কক্ষে বিজেপি বিধায়কদের হট্টগোলের পর অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। বাইরে বেরিয়ে যান বিরোধী বিধায়কেরা। বিধানসভার বাইরেও মিনিট দশেক সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে স্লোগান দেন তাঁরা। তবে দশ মিনিট পরে বিজেপি বিধায়কেরা বিক্ষোভ সমাবেশ তুলে নেন। বিধানসভায় সিএজি রিপোর্ট নিয়ে বিজেপির আনা মুলতুবি প্রস্তাব প্রসঙ্গে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘সিএজি রিপোর্টে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যদি কেউ কিছু না করে থাকে, তা হলে কেন ভয় পাচ্ছে সরকার? স্পিকার তো নিরেপক্ষ। ওঁর উচিত ছিল আলোচনার অনুমতি দেওয়া।’’
প্রসঙ্গত, সিএজি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২১-এর মার্চ মাস পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অনুদানের ১ লক্ষ ৯৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ খরচের শংসাপত্র জমা দিতে পারেনি। সেই রিপোর্টকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী সরকার অভিযোগ তুলেছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় অনুদানের প্রায় ২ লক্ষ ২৯ হাজার কোটি টাকা খরচের শংসাপত্র দিতে পারেনি। বিরোধীদের দাবি, রাজ্যের তৃণমূল সরকার এই টাকা নয়ছয় করেছে। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, এর মধ্যে ২০০২-০৩ থেকে বাম জমানার হিসাবও রয়েছে। তাঁর কাছে কেন ২০০৩ সালের হিসাব চাওয়া হচ্ছে? সে সময়ে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতাতে আসেনি। সিএজি ‘বিজেপির জন্য রাজনৈতিক দলিল তৈরি করছে’ বলেও দাবি করে রাজ্যের শাসকদল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy