Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

School reopening: উভয় বানানেও হোঁচট পড়ুয়ার, চিন্তিত শিক্ষক

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, এই সব পড়ুয়াকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায়শ্রেণিকক্ষের পঠনপাঠন, নিয়মিতক্লাস নেওয়া।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২২ ০৫:২৭
Share: Save:

‘নদীমাতৃক সভ্যতা’ মানে কী স্যর? ‘উভয়’ বানান কী হবে? ‘বাদুড় কোন শ্রেণিভুক্ত’— এর অর্থ কী দিদিমণি?

পরীক্ষা ছাত্রছাত্রীদেরই। অথচ দীর্ঘ অতিমারির পরে স্কুলে স্কুলে চলতি পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নে তাদের কাছ থেকেই এই ধরনের খুব সাধারণ প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তাঁরা জানান, পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, প্রায় আড়াই বছর পরে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির অফলাইন অর্থাৎ শ্রেণিকক্ষের পরীক্ষায় অনেক পড়ুয়ারই রীতিমতো জেরবার অবস্থা। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের অবস্থা সব থেকে খারাপ। অভিযোগ, অনেক ছাত্রছাত্রী অক্ষর পর্যন্ত চিনতে পারছে না। তারিখ লিখতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, এই সব পড়ুয়াকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায়শ্রেণিকক্ষের পঠনপাঠন, নিয়মিতক্লাস নেওয়া।

উত্তর কলকাতার বাংলার এক শিক্ষক বলেন, ‘‘কয়েক জন ছাত্রকে দেখলাম পুরো প্রশ্নপত্রটাই পড়তে পারছে না। প্রশ্নপত্র পড়তে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছে অনেক জায়গায়। যেমন প্রশ্নপত্রে কোনও শব্দে ‘শু’ অক্ষর থাকলে তা অনেকে পড়তে পারছে না। কারণ হাতে লেখার সময় তারা এই ভাবে ‘শু’ অক্ষরটি লেখে না।’’ উত্তরপাড়ার জীবনবিজ্ঞানের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘নবম শ্রেণির পড়ুয়া পরীক্ষার হলে বসে আমাকে জিজ্ঞেস করছে, ‘স্তন্যপ্রায়ী প্রাণীর উদাহরণ কি সাপ হতে পারে স্যর?’ ওই পড়ুয়া পড়াশোনায় ভাল বলেই জানি। তার মুখে এই ধরনের প্রশ্ন শুনে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি।’’

অধিকাংশ স্কুলেই পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন শেষ বা শেষের পথে। যে-সব শিক্ষক সেই পরীক্ষার উত্তরপত্র দেখতে শুরু করেছেন, তাঁরা জানান, অত্যন্ত সহজ প্রশ্ন করা হয়েছে। তবু ৪০ নম্বরের মধ্যে ২৫ তুলতে পারছে না অনেকেই। কিন্তু এর জন্য ছাত্রছাত্রীদের দোষ দিতে রাজি নন অধিকাংশ শিক্ষক। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘যতই অনলাইন ক্লাস হোক না কেন, অফলাইন ক্লাসের যে কত গুরুত্ব, এই পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সরকারি, সরকারপোষিত স্কুলের বহু পড়ুয়ার কাছেই যে অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামো পৌঁছচ্ছে না এবং তার ফলে তাদের প্রস্তুতি হয়নি, এই পরীক্ষা থেকেই তা বুঝতে পারছি।’’

পড়ুয়াদের এই ‘লার্নিং গ্যাপ’ বা শিক্ষার ফাঁক কী ভাবে ভরাট হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন শিক্ষকেরা। অনেক শিক্ষকই মনে করেন, একমাত্র স্কুলের শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পঠনপাঠনই পড়ুয়াদের এই ক্ষত নিরাময়ের সহায়ক হতে পারে।

এ দিকে করোনার প্রকোপ আবার বাড়ছে। প্রশ্ন উঠছে, স্কুল খুলে রাখা যাবে তো? পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরে চিঠি লিখে জানাব, করোনা বাড়তে থাকলে নানা আশঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু পরিস্থিতি খুব খারাপ না-হলে কোনও ভাবেই যেন স্কুল বন্ধ করা না-হয়। প্রয়োজনে পর্যায়ক্রমে পড়ুয়াদের আনা হোক। কিন্তু স্কুল বন্ধ করা চলবে না। বহু অভিভাবকও চাইছেন না যে, স্কুল ফের বন্ধ হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus covid 19 india School Reopening
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE