মানিক ভট্টাচার্য।
মৃত ব্যক্তির সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীর জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কেওয়াইসি (নো ইওক কাস্টমার)-এর তথ্য আপডেট করানো হয়েছে। অথচ ওই অ্যাকাউন্টের যুগ্ম ধারক যে ২০১৬ সালেই মারা গিয়েছেন, তা জানানো হয়নি। শুক্রবার আদালতে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল ইডি।
টেট মামলায় অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির শুনানি ছিল শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। সেখানে মানিকের জামিনের আবেদন করে তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে মানিকের স্ত্রীর জয়েন্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলেও তাতে তিন কোটি নয় স্রেফ তিন লক্ষ টাকা রয়েছে। এ ব্যাপারে ইডি যে অভিযোগ করেছিল, তা অস্বীকার করে মানিকের আইনজীবী আরও দাবি করেন, ১৯৮১ সাল থেকেই ওই অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং অ্যাকাউন্টের ধারক হিসাবে থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তি আসলে সম্পর্কে মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যের পিসেমশাই। ইডি অবশ্য মানিকের আইনজীবীর ওই যুক্তি পরক্ষণেই নস্যাৎ করে দেয়। তারা আদালতকে বলে, ২০১৬ সালে ওই ব্যক্তি মারা যান। কিন্তু তার পরও তিন বছর ধরে নিয়মিত কেওয়াইসি আপডেট করানো হয়েছে অ্যাকাউন্টটির। প্যান কার্ডের নম্বরও দেওয়া হয়েছে। অথচ মানিকের স্ত্রীর ‘আত্মীয়ের’ মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি ব্যাঙ্ককে।
এ ব্যাপারে মানিকের আইনজীবীর টাকার পরিমাণ সংক্রান্ত দাবিটিও খারিজ করে ইডির আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, তিন লক্ষ টাকা নয় ওই অ্যাকাউন্টে ২ কোটির বেশি টাকা আছে। আর সেই অর্থ আছে ফিক্সড ডিপোজিট অর্থাৎ স্থায়ী আমানত হিসাবে। অথচ টাকা এবং অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির লোক। ইডি জানিয়েছে, মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলের সঙ্গে তদন্তকারীরা যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না তিনি।
ইডি প্রশ্ন তুলেছে, যে খানে মানিকের স্ত্রীর আলাদা কোনও অর্থাগমের উপায় নেই, সেখানে তাঁর নামে তিন কোটি টাকা আসে কী করে। এই যুক্তিতে ইডি আদালতে দাবি করেছে, এই সব তথ্যে স্পষ্ট যে, ওই অ্যাকাউন্টের তথ্য জাল করা হয়েছে। মানিকের স্ত্রীকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
শুক্রবার মানিকের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডি আদালতে মানিকের বিরুদ্ধে তদন্ত অসহযোগিতার অভিযোগও এনেছে। যদিও তার পাল্টা মানিকের আইনজীবীর যুক্তি দিয়েছেন— এতদিন ধরে ওঁকে জেরা করা হচ্ছে, আগে কেন বলা হয়নি অসহযোগিতার কথা। সিবিআই এই মামলার মূল তদন্ত করছে। তারাও কখনও অসহযোগিতার কথা জানায়নি। মানিকের আইনজীবী এক রকম চ্যালেঞ্জ জানিয়েই ইডিকে বলেছেন, তেমন হলে ইডি বিধায়কের আয়করের হিসাব খতিয়ে দেখুক। অর্থ রাখা তো আর বেআইনি নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy