বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা রোজ়ভ্যালির আমানতকারীদের টাকা ফেরতের জন্য আদালত গঠিত ‘অ্যাসেট ডিসপোজ়াল কমিটি’ (এডিসি)-র অ্যাকাউন্টের ফরেন্সিক অডিটের সিদ্ধান্ত ঝুলে রইল। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানি হলেও ফরেন্সিক অডিটের বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে পারেনি কেন্দ্র। অডিটের দায়িত্ব নিতে ‘কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল’ (সিএজি) ইচ্ছুক কিনা, সেই বিষয়ে তথ্য জানাতে বাড়তি সময়ের আবেদন জানান কেন্দ্রের কৌঁসুলি।
বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, ১৩ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানিতে নির্দিষ্ট অবস্থান জানাতে হবে কেন্দ্রকে। বিচারপতি ভরদ্বাজের পর্যবেক্ষণ, ‘‘কেন্দ্র যদি এই কাজ করতে ইচ্ছুক না হয়, সে ক্ষেত্রে রাজ্যের অর্থ দফতরকেই ফরেন্সিক অডিটের নির্দেশ দেবে আদালত।’’
মঙ্গলবার ওয়েবেলের বদলে অন্য সংস্থা নিয়োগের ক্ষেত্রে রিপোর্ট দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানায় এডিসি। তাদের আইনজীবী দাবি করেন, রাজ্যের সংস্থা ওয়েবেলের প্রযুক্তিগত খামতি আছে। তারা দায়িত্বে থাকলে আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে ২০ বছর লেগে যাবে। কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘স্টকহোল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড’-এর উন্নত প্রযুক্তি (যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আধার নম্বর ব্যবহার করে আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর কাজ করতে পারে) ব্যবহার করলে চার বছরে এই কাজ করা সম্ভব।
এ দিন অ্যাসেট ডিসপোজ়াল কমিটির কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি ভরদ্বাজ। এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, “আপনাদের দাবি, গত এক বছরে আপনারা ৮২ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছেন। তার মানে আগের আট বছরে কিছুই করেননি। আপনাদের দেওয়া তথ্যও মিলছে না। কখনও বলছেন মোট অর্থ ১৭০০ কোটি, কখনও বলছেন ২০০০ কোটি! জুলাই মাসের রিপোর্টে দাবি করেছেন, ১৬ লক্ষ আবেদন পেয়েছেন। এখন তা হয়েছে ৩১ লক্ষ! যে সংস্থা রোজ় ভ্যালির বিভিন্ন সম্পত্তির পরিচালনা করছে তাদের আয়-ব্যয়ের তথ্যদেওয়া হয়নি।”
আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ইডি এবং এডিসি-র সংস্থা বদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা দেবে মামলায় যুক্ত বাকি সব পক্ষ। আগামী ৪ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত বিষয়ের শুনানি হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)