Advertisement
E-Paper

অবসরের আগের দিন মৃত্যু! ‘১৫ ঘণ্টা’ সময়ই বাবার চাকরি পাইয়ে দিচ্ছে প্রধানশিক্ষকের ছেলেকে

পরিবারের বক্তব্য, বয়স ৬০ বছর হওয়ার ১৫ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়। অর্থাৎ, চাকরিজীবন তখনও শেষ হয়নি। সে কারণেই তারা অনুকম্পাজনিত চাকরি পাওয়ার যোগ্য। পরিবারের এক জনকে সেই চাকরি দেওয়া হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ১৮:৩৮
A photograph of old man

সময়ের ফারাকে প্রধানশিক্ষক বাবার চাকরি ছেলেকে দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। —প্রতীকী ছবি

জন্ম ১৯৬১ সালের ২ জানুয়ারি। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি মৃত্যু। বয়স ৬০ বছর হতে বাকি ছিল আর ১৫ ঘণ্টা। তার আগে, অর্থাৎ চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার এক দিন আগে মৃত্যু হয় প্রধানশিক্ষকের। সময়ের এই ফারাকে প্রধানশিক্ষক বাবার চাকরি ছেলেকে দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই প্রধানশিক্ষকের বয়স ৫৯ বছর ১১ মাস ২৯ দিন। ১৫ ঘণ্টা পরে বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হলে তাঁর অবসরের সময় হত। নিয়ম মোতাবেক, চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে প্রধানশিক্ষকের। এমতাবস্থায় তাঁর পরিবার অনুকম্পাজনিত নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য। প্রধানশিক্ষকের ছেলেকে চাকরি দেওয়া নিয়ে বিবেচনা করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে। হাই কোর্ট জানায়, মামলাকারী প্রধানশিক্ষকের ছেলের তথ্য এবং নথি সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠাবেন জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিন সপ্তাহের মধ্যে তাঁর অনুকম্পাজনিত চাকরিতে নিয়োগের সুপারিশ দেবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

১৯৮১ সালের ১৯ নভেম্বর পূর্ব বর্ধমানের একটি স্কুলে চাকরি পান মহম্মদ কোরবান হোসেন। ২০০২ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক হন। স্কুলে চাকরির ক্ষেত্রে ৬০ বছর বয়সে অবসরগ্রহণ। ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি তাঁর বয়স ৬০ বছর হত। আগের দিন সকালে মৃত্যু হয় ওই প্রধানশিক্ষকের। পরিবারের বক্তব্য, ওই বছর ১ জানুয়ারি সকাল ৮টা ১৩ মিনিটে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কোরবানের। বয়স ৬০ বছর হওয়ার ১৫ ঘণ্টা আগে তাঁর মৃত্যু হয়। গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি মৃত প্রধানশিক্ষক বাবার চাকরি চেয়ে বড় ছেলে মনিকুল হোসেন আবেদন জানান। তাঁর বক্তব্য, চাকরিজীবন শেষ হওয়ার আগে বাবার মৃত্যু হয়েছে। এখন তাঁর পরিবার অনুকম্পাজনিত চাকরি পাওয়ার যোগ্য। তিনি প্রথম আবেদন জানান এসএসসির কাছে। এসএসসি মনিকুলের আবেদন সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ। এর পরে তিনি হাই কোর্টে মামলা করেন।

এসএসসির বক্তব্য, ওই প্রধানশিক্ষকের ৬০ বছর পূর্ণ হতে কয়েক ঘণ্টা সময় বাকি ছিল। তা ৬০ বছর ধরে নেওয়াই উচিত। ফলে তাঁর পরিবারের সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। পাল্টা মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের সওয়াল, তাঁর মক্কেলের বাবার বয়স কোনও ভাবেই ৬০ বছর ধরা উচিত নয়। তিনি ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বেঁচে থাকলে বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হত। নিয়ম অনুযায়ী, মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত চাকরিরত থাকলে পরিবার ক্ষতিপূরণ হিসাবে চাকরি পাওয়ার যোগ্য। তাঁর মক্কেলকে চাকরি দেওয়া উচিত।

দু'পক্ষের বক্তব্য শুনে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এই মামলায় জন্ম-মৃত্যুর হিসাব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তখন তাঁর বয়স ৬০ বছর। কিন্তু ৬০ বছর পূর্ণ হয়নি। তাঁর মৃত্যু পরের দিন অর্থাৎ, ওই বছর ২ জানুয়ারি হলে তবে বয়স ৬০ বছর সম্পূর্ণ হত। এই পরিস্থিতিতে মামলাকারীর আবেদন আদালত মঞ্জুর করছে। তাঁর চাকরি পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

Calcutta High Court School service commission Head teacher Compassionate Ground
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy