Advertisement
E-Paper

বিষ মদে প্রাণ গেল চোলাই কারবারি চন্দনেরও 

স্থানীয় সূত্রে খবর, সন্ধ্যা নামলেই এলাকার মূলত খেটে খাওয়া মানুষের মনোরঞ্জনের অন্যতম আখড়া ছিল গুলবারের চোলাইয়ের দোকান। মঙ্গলবার বিষ মদ খেয়ে তাঁর দোকানের অন্য অনেক খদ্দেরের সঙ্গে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন গুলবার-ও।

সম্রাট চন্দ 

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১৮
মর্মভেদী: স্বজন হারানোর কান্না। বুধবার শান্তিপুরের নৃসিংহপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

মর্মভেদী: স্বজন হারানোর কান্না। বুধবার শান্তিপুরের নৃসিংহপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

বিষাক্ত চোলাই মদ তাঁকেও রেহাই দিল না। প্রাণ নিল।

তিনি হরিপুর পঞ্চায়েতের চৌধুরীপাড়ায় চোলাইয়ের পান্ডা ছিলেন চন্দন ওরফে গুলবার মাহাতো। রমরমিয়ে চলত তাঁর ঠেক। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, পুলিশের একাংশকে টাকা খাইয়ে পকেটে পুড়ে রাখতেন গুলবার। তাই তাঁর ঠেক পুলিশ কখনও বন্ধ করেনি। যদিও পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “ পুলিশ মাঝেমধ্যেই ওখানে হানা দেয়। এর আগেও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, সন্ধ্যা নামলেই এলাকার মূলত খেটে খাওয়া মানুষের মনোরঞ্জনের অন্যতম আখড়া ছিল গুলবারের চোলাইয়ের দোকান। মঙ্গলবার বিষ মদ খেয়ে তাঁর দোকানের অন্য অনেক খদ্দেরের সঙ্গে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন গুলবার-ও। কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন। বুধবার রাত সোওয়া দশটা নাগাদ মৃত্যু হল তাঁর। গুলবার মারা যাওয়ার খবর চৌধুরীপাড়ায় ছড়ানোর পরে সকলের মুখে একই কথা—‘‘এত লোককে চোলাই ধরিয়েছিল। সেই পাপ ওঁকেও ছাড়ল না।’’

গুলবারের স্ত্রী লক্ষ্মী কিন্তু বুধবার বিকেলেও দাবি করেছেন যে, তাঁদের দোকানের চোলাই খেয়ে কেউ মারা যাননি। অন্য দোকান থেকে বিষ মদ বিক্রি হয়েছিল। তাঁর কথায়, “ আমাদের ঠেক থেকে ওঁরা কেউ মদ নেননি। আরও দু’-এক জন এখানে মদ বিক্রি করে। তাঁদের কাছ থেকে নিতে পারে।’’ গুলবার মারা যাওয়ার পর অবশ্য তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। অন্য দোকানে বিষাক্ত মদ বিক্রি হলে গুলবার নিজের দোকান ছেড়ে কেন তা খেতে যাবেন, সেই প্রশ্ন‌েরও উত্তর জানা যায়নি।

দু’দিন আগেও চন্দন ওরফে গুলবারের ঠেক গমগম করত। স্থানীয় সূত্রের খবর, দিনমজুর, মিস্ত্রি, আনাজ বিক্রেতা, ইটভাটার শ্রমিকদের চোলাই খাওয়ার এটাই ছিল প্রধান জায়গা। অভিযোগ, কালনা থেকে চোলাই এনে বিক্রি করতেন গুলবার। আবার গুলবারের থেকে চোলাই নিয়ে বিক্রি করতেন ধনঞ্জয় বিশ্বাস ওরফে সাধু। বিষমদ কাণ্ডে মৃতদের অন্যতম সুনীল মাহাতোর মা নমিতা মাহাতো বলেন, “আমাদের বাড়ির পুরুষেরা গুলবারের ঠেকেই নিয়মিত মদ খায়। কত বার ওকে ঠেক বন্ধ করতে বলেছিলাম। উল্টে আমাদের হুমকি দিত। বলত যে সে পুলিশকে ভয় করে না।’’

এলাকার আরেক বাসিন্দা রামাবতী মাহাতোর কথায়, “গুলবারের বাড়িতেই প্রচুর মদ মজুত থাকে। যে যখন গিয়ে চায় দিয়ে দেয়।’’ এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, পুলিশ মাঝেমধ্যে হানা দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই ওদের ঠেক ফের চালু হয়ে যায়। মদের কারবারিরা ধরা পড়লেও সহজে জামিন হয়। এ বার কিন্তু চোলাইয়ের কারবারি গুলবার ছাড় পেলেন না।

Death Adulterated Liquor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy